ইসলাম ধর্মে সামর্থ্যবান মুসলিমদের সম্পদের একটি অংশ জাকাত হিসেবে গরিবের মাঝে বণ্টন করতে হয়। বছরের যে কোনো সময়ই এটা বিতরণ করা যায়। তবে বেশি সওয়াব পাওয়ার আশায় পবিত্র রমজান মাসকেই বেছে নেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা।
Advertisement
দেশে সাধারণত অনেক বিত্তবান লোকজন শাড়ি বা লুঙ্গি জাকাত হিসেবে দান করেন। এক্ষেত্রে নিম্ন ও কম দামি শাড়ি-লুঙ্গি বিতরণ করেন অনেকে। এসব কাপড়ের বাজার প্রতি বছর রমজানে বেশ জমে উঠে। তবে এবার ব্যতিক্রম। রমজান মাসের প্রায় অর্ধে হতে চললো, এখনও জমে উঠেনি জাকাতের শাড়ি-লুঙ্গির বাজার।
সোমবার (২৫ মার্চ) গুলিস্তান পীর ইয়ামেনি মার্কেটসহ অন্যান্য পাইকার মার্কেট ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
কথা হয় ‘ঘোমটা’ শাড়ি ঘরের স্বত্বাধিকারী মো. স্বপনের সঙ্গে। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার বেচাবিক্রি খুবই কম। গতবার পহেলা রমজান থেকেই বিভিন্ন এলাকার মানুষ আসতো শাড়ি-লুঙ্গি কিনতে। এবার এখনও এমনটা চোখে পড়ছে না। অলস বসে আছে অনেকেই।
Advertisement
একই কথা জানান পীর ইয়ামেনি মার্কেটের পাইকারি শাড়ি-লুঙ্গি বিক্রেতা মুজিবুর রহমান। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, আমাদের এখানে নিম্নমানের ও কম দামের শাড়ি-লুঙ্গি আসলে জাকাতের কাপড় হিসেবে বিক্রি করা হয়। আগের মতো এখন বিক্রি নেই। গত রমজানের শুরু থেকেই প্রায় হুড়োহুড়ি লাগতো জাকাতের কাপড় কেনার জন্য। এখন ক্রেতা নেই, হয়তো বিত্তবানরা টাকা দিয়ে দেবেন। তবে ২৫ রোজার দিকে বাড়তে পারে চাহিদা। অনেকেই আসে মাসের শুরুতে।
পীর ইয়ামেনিসহ গুলিস্তান এলাকায় থান লুঙ্গির কাপড়, পিস লুঙ্গি, শাড়ি বিক্রি হচ্ছে জাকাতের কাপড় হিসেবে। বিক্রেতারা জানান, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে শাড়ি ও লুঙ্গির দাম।
ইয়ামেনি মার্কেটের ‘দেওয়ান’ শাড়ি ঘরের ম্যানেজার কামাল জাগো নিউজকে বলেন, এখানে ‘মুনমুন’ প্রাইড শাড়ি পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকা, প্রাইড শাড়ি ৩৮০ টাকা, অন্যান্য প্রিন্টের শাড়ি ৩৫০ থেকে ৪৮০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে।
আর লুঙ্গির মধ্যে থান ও পিস হিসেবে বিক্রি হচ্ছে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, এবার ‘এনামুল’ লুঙ্গি থান ১২০০ টাকা, ‘বসুন্ধরা’ ১০৪০ টাকা, ‘প্রফেসর’ ১১২০ টাকা। প্রতি পিস থানে চার পিস লুঙ্গি হয়। এছাড়া অন্যান্য লুঙ্গি প্রতি পিস ১৪০ টাকা থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
Advertisement
দেশের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার ইয়ামেনি মার্কেটের জাকাতের কাপড় নিতে এসেছেন সাইফুল ইসলাম। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, প্রতি বছর আত্মীয়-স্বজনদের মাঝে গ্রামে কিছুটা কাপড় বিতরণ করি। এবারও করতে চাই। আজ বাজারে এসেছি, দরদামে মিললে কিনবো না হলেও আরও ক’দিন পর কেনার ইচ্ছে আছে।
ইএআর/এসএনআর/জিকেএস