দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে পশ্চিমবঙ্গের দ্বিতীয় দফায় প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। এর আগে গত ২ মার্চ বিজেপি পশ্চিমবঙ্গের প্রথম ২০ আসনের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে। রোববার (২৪ মার্চ) প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠকের পর ভারতের রাজধানী দিল্লিতে বিজেপির সদর দপ্তর থেকে দ্বিতীয় দফার ১৯টি আসনের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়।
Advertisement
তবে এবারের পশ্চিমবঙ্গবাসী বিশেষ করে দার্জিলিংয়ের সাধারণ মানুষ অপেক্ষায় ছিল এই কেন্দ্রে ভারতের সাবেক পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলার নাম ঘোষণা করবে বিজেপি। চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকে এক প্রকার প্রচারণা ও প্রস্তুতিও নিয়েছিলেন সাবেক এই পররাষ্ট্র সচিব। কিন্তু রোববার প্রার্থী তালিকা ঘোষণায় দেখা গেল হর্ষবর্ধন শ্রিংলার নাম নেই, সেই জায়গায় এবারের দার্জিলিং লোকসভা আসনে গতবারের বিজেপির জয়ী প্রার্থী রাজু বিস্তার নাম ঘোষণা করেছে বিজেপির কেন্দ্রীয় কমিটি।
রাজু বিস্তার নাম ঘোষণার পরেই দার্জিলিং জুড়ে ক্ষোভে ফেঁটে পরেন সেখানকার সাধারণ ভোটারা। তাদের দীর্ঘদিনের দাবি, হর্ষবর্ধন শ্রিংলা দার্জিলিংয়ের ভূমিপুত্র তাকে দার্জিলিং কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থী করা হোক। হর্ষবর্ধন শ্রিংলাকে প্রার্থী করলে এই আসনে অবশ্যই জয় পেত বিজেপি। তিনি জয়ী হলে শুধু একজন সংসদ সদস্য হয়েই থাকতেন না, তিনি ভারতের প্রথম সারির মন্ত্রিত্বও পেতে পারতেন।
হর্ষবর্ধন শ্রিংলা মন্ত্রি হিসেবে দায়িত্ব পেলে শুধু পশ্চিমবঙ্গের উন্নতি হতো না সঙ্গে অনেক ক্ষেত্রেই এগিয়ে থাকতো ভারত। সাবেক এই পররাষ্ট্র সচিব ভীষণভাবে জনপ্রিয় বাংলাদেশেও। ফলে বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক আরও ভালো হতো বলে আশা করা যায়। বাংলাদেশ সম্পর্কেও ভালো ধারণা রাখেন হর্ষবর্ধন শ্রিংলা।
Advertisement
যদিও দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রের রাজু বিস্তার নাম ঘোষণা হতেই কার্শিয়াঙের বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা বিদ্রোহ ঘোষণা করেছেন। তিনি বলেন, সাবেক পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলার মতো ব্যক্তিকে প্রার্থী না করায় আমি রাজুর বিরুদ্ধে লড়াই করবো।
এবারের পশ্চিমবঙ্গের সবচেয়ে আলোচিত বিষয় সন্দেশখালি। সেখানে নির্যাতিতা এক নারীকে বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী করেছে বিজেপি। প্রত্যাশা অনুযায়ী, এই তালিকায় প্রার্থী হিসেবে নাম রয়েছে সদ্য তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া তাপস রায় এবং অর্জুন সিং। এছাড়াও কলকাতা হাইকোর্টের সাবেক বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নামও রয়েছে।
কলকাতা উত্তর থেকে বিজেপি প্রার্থী করেছে তাপস রায়কে। ব্যারাকপুর থেকে বিজেপি প্রার্থী করেছে বাহুবলী নেতা অর্জুন সিংকে। তমলুকে বিজেপি প্রার্থী করেছে বহু চর্চিত কলকাতা হাইকোর্টের সাবেক বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে।
এছাড়াও জলপাইগুড়ি থেকে জয়ন্ত রায়, রায়গঞ্জে কার্তিক পাল, জঙ্গিপুরে ধনঞ্জয় ঘোষ, কৃষ্ণনগরের প্রার্থী সেখানকার রাজপরিবারের রাজমাতা অমৃতা রায়, দমদমে শীলভদ্র দত্ত, বারাসাতে স্বপন মজুমদার, বসিরহাটে রেখা পাত্র, মথুরাপুরে অশোক পুরকাই, কলকাতার দক্ষিণে দেবশ্রী চৌধুরী, উলবেরিয়ায় অরুণোদয় পাল, শ্রীরামপুরে কবীর শঙ্কর বসু, আরামবাগে অরূপকান্তি দিগর, মেদিনীপুরে অগ্নিমিত্রা পাল, বর্ধমানের পূর্বে অসীম কুমার সরকার, বর্ধমানে দুর্গাপুর দিলীপ ঘোষ।
Advertisement
পশ্চিমবঙ্গের ৪২ টি আসনের মধ্যে মোট ৩৯টি আসনের প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিজেপি। যদিও আসানসোল কেন্দ্রের প্রার্থী পবন সিং নিজে থেকে সরে দাঁড়ানোর ফলে এখনো পশ্চিমবঙ্গে ৪ আসনের প্রার্থী ঘোষণা বাকি রইলো।
ডিডি/টিটিএন