আগুনে পুড়ে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে কড়াইল বস্তির একাংশ। প্রায় ৪০ থেকে ৫০টি ঘর পুড়েছে বলে ধারণা করছে ফায়ার সার্ভিস। ঘরগুলোতে থাকা আসবাবপত্র, নগদ টাকা ও অন্য মালামাল আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। সেই ভস্মস্তূপের ওপর বসেই চোখের জল ফেলছেন সেখানকার বাসিন্দারা। আগুনে সব হারিয়ে তারা স্তব্ধ হয়ে গেছেন।
Advertisement
রোববার (২৪ মার্চ) বিকেল ৪টার পর ওই বস্তিতে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। সাড়ে ৪টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় বস্তিবাসীদের অসহায় কান্নার চিত্র।
পুড়ে যাওয়া ঘরের সিমেন্টের মেঝের ওপর বসে হাউমাউ করে কাঁদছিলেন মিলি আক্তার। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘দোতলা ঘর ছিল এটি। উপরে আমার দুই ভাই থাকতো আর নিছে আমার পরিবার থাকতাম। আমার স্বামী অনেক কষ্টে টেলিভিশন, বক্স খাট কিনেছিল। উপরে-নিচে থাকা ঘরের কোনো কিছুই আর নাই। সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।’
তিনি বলেন, আগুন লাগার সময় আমি কাজে ছিলাম। এসে দেখি সব পুড়ে শেষ। একটা কাপড়ও বের করতে পারিনি। এখন কী পরবো, কই যাবো, কিছুই জানি না।
Advertisement
আরও পড়ুন
কড়াইল বস্তির আগুন নিয়ন্ত্রণে ‘এক কাপড়ে দাঁড়ায়ে আছি, ক্যামনে বাঁচমু’ ‘নেতারা জোর করে ঘর তুলে ভাড়া দেয়, গ্যাসের লাইনও ঠিক করে না’সেখানে দেখা যায়, পুড়ে যাওয়া ঘরগুলোতে নিজেদের কোনো কিছু অবশিষ্ট আছে কি না, অনেকে তা খুঁজে দেখছেন। কেউ কেউ ঘর থেকে লোহার দা ও বঁটি বের করছিলেন। অনেকে আধাপোড়া মালপত্রও বাইরে বের করেন।
কড়াইল বস্তির বাসিন্দা জেসমিন জানান, হঠাৎ ‘আগুন আগুন’ চিৎকার শোনার পর দৌড়ে ঘর থেকে বের হয়ে যাই। বাইরে বেরিয়ে দেখি বাতাসের সঙ্গে আগুন দ্রুত আমাদের ঘরের দিকে চলে এসেছে। সঙ্গে সঙ্গে বাচ্চাদের নিয়ে দৌড়ে দূরে সরে যাই। আগুনে সব পুড়িয়ে দিয়েছে। কেউ কিছু রক্ষা করতে পারেনি।
রোববার বিকেল ৪টা ১০ মিনিটে কড়াইল বস্তিতে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। পরে ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিটের চেষ্টায় বিকেল ৪টা ৩৩ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার আগেই বস্তির অনেক ঘর পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
Advertisement
প্রাথমিকভাবে আগুন লাগার কারণ ও হতাহতের কোনো তথ্য জানাতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস।
এএএম/এমকেআর/জিকেএস