দেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে ৭৬ শতাংশ ছাত্রীই কোনো না কোনোভাবে যৌন হয়রানির শিকার হন। ছাত্রীদের জন্য তুলনামূলক বেশি অনিরাপদ দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো।
Advertisement
রোববার (২৪ মার্চ) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ব্লাস্ট আয়োজিত ‘যৌন হয়রানি নিরসনে উচ্চ আদালতের নিদের্শনা: বর্তমান অবস্থা ও বাস্তবায়নে করণীয়’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় এক জরিপের ফলাফল তুলে ধরে এসব তথ্য উপস্থাপন করা হয়।
বেসরকারি আইনি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) জরিপ প্রতিবেদন উপস্থাপন ও মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।
সভায় আলোচকরা বলেন, দেশের সর্বোচ্চ আদালতের নিদের্শনার পরও সবগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ে নারীদের যৌন হয়রানি প্রতিরোধে কমিটি না হওয়া দুঃখজনক। নীতিমালার কারণে অনেক ক্ষেত্রেই ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। এজন্য এ বিষয়ে যুগোপযোগী আইন প্রণয়নের প্রস্তাবও তুলে ধরা হয় আলোচনায়।
Advertisement
জরিপের তথ্য তুলে ধরে সভায় জানানো হয়, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ৭৬ শতাংশ, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬৬ শতাংশ এবং মেডিকেল কলেজে যৌন হয়রানির শিকার হন ৫৪ শতাংশ ছাত্রী। এছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জ্যেষ্ঠ সহপাঠী ও শিক্ষকদের মাধ্যমে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, হয়রানি ও ব্যঙ্গ-বিদ্রূপের শিকার হন ৭৪ শতাংশ নারী শিক্ষার্থী।
আরও পড়ুন
যৌন নিপীড়নের অভিযোগ: জবি শিক্ষক ইমনকে বহিষ্কার, চেয়ারম্যানকে অব্যাহতিঅনলাইন প্ল্যাটফর্মে অশালীন, ক্ষতিকর মন্তব্যের মাধ্যমে ৫৭ শতাংশ নিপীড়নের ঘটনা ঘটে জানিয়ে সভায় জানানো হয়, ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ৫০ শতাংশের বেশি নারী অনলাইনে সহিংসতার শিকার হন।
জরিপ অনুযায়ী, নিজ শ্রেণির চেয়ে অন্য শ্রেণির শিক্ষার্থীরাই ছাত্রীদের বেশি হয়রানি করেন। দুই-তৃতীয়াংশ ছাত্রী তাদের মাধ্যমে হয়রানির শিকার হন। ছেলে সহপাঠীদের মাধ্যমে ২৫ শতাংশ এবং ক্যাম্পাসে আসা অন্য পুরুষদের মাধ্যমে ৭ দশমিক ৯ শতাংশ ছাত্রী হয়রানির শিকার হন।
Advertisement
এছাড়া নিজেদের বিভাগ ও অন্য বিভাগের পুরুষ শিক্ষকদের মাধ্যমেও ছাত্রীরা হয়রানির শিকার হন। ক্লাস চলাকালীন, ক্লাস না থাকার সময়, করিডোর, খেলার মাঠে হয়রানির ঘটনা ঘটে।
সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী জেড আই খান পান্নার সভাপতিত্বে সভায় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্য ড. বিশ্বজিৎ চন্দ, ব্লাস্টের ট্রাস্টি তাহমিনা রহমান প্রমুখ আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন।
এএএইচ/ইএ/জিকেএস