জাতীয়

আরও ১১৮ জন শহীদ বুদ্ধিজীবীর তালিকা প্রকাশ

প্রকাশ করা হয়েছে আরও ১১৮ জন শহীদ বুদ্ধিজীবীর তালিকা। এ নিয়ে চার দফায় ৫৬০ জন শহীদ বুদ্ধিজীবীর তালিকা প্রকাশ করলো সরকার।

Advertisement

রোববার (২৪ মার্চ) মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে চতুর্থ ধাপে ১১৮ জন শহীদ বুদ্ধিজীবীর তালিকা প্রকাশ করা হয়। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক শহীদ বুদ্ধিজীবীদের তালিকা প্রকাশ করেন।

তাদের মধ্যে শিক্ষক, রাজনীতিক, সমাজকর্মী, চিকিৎসক, আইনজীবী, চাকরিজীবী, প্রকৌশলী, নাট্যকার, সংগীতশিল্পী এবং সংস্কৃতিকর্মী রয়েছেন।

প্রথমে ২০২১ সালের ৭ এপ্রিল ১৯১ জন শহীদ বুদ্ধিজীবীর নাম গেজেট আকারে প্রকাশ করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। ২০২২ সালের ২৯ মে দ্বিতীয় তালিকায় ১৪৩ জন এবং সর্বশেষ গত ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রকাশ করা হয় আরও ১০৮ জন শহীদ বুদ্ধিজীবীর তালিকা।

Advertisement

আরও পড়ুন

দুই ভাগে রাজাকারের তালিকা প্রণয়নের কাজ হচ্ছে: মন্ত্রী জিয়া রাজাকারদের মুক্তি দিয়েছেন: মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী

চতুর্থ দফার শহীদ বুদ্ধিজীবী তালিকায় ৩ জন সাহিত্যিক, একজন বিজ্ঞানী, একজন চিত্রশিল্পী, ৫৪ জন শিক্ষক, ৪ জন আইনজীবী, ১৩ জন চিকিৎসক, ৩ জন প্রকৌশলী, ৮ জন সরকারি ও বেসরকারি কর্মচারী, ৯ জন রাজনীতিক, ১৩ জন সমাজসেবী রয়েছেন।

এছাড়া সংস্কৃতিসেবী এবং চলচ্চিত্র, নাটক, সংগীত এবং শিল্পকলার অন্যান্য শাখার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ৯ জন ব্যক্তিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে শহীদ বুদ্ধিজীবীর তালিকায়

অন্যদিকে এ পর্যন্ত তালিকায় থাকা ৫৬০ জন শহীদ বুদ্ধিজীবীর মধ্যে শিক্ষক ১৯৮ জন, চিকিৎসক ১১৩ জন, আইনজীবী ৫১ জন, প্রকৌশলী ৪০ জন, সরকারি ও বেসরকারি কর্মচারী ৩৭ জন, সমাজসেবী ২৯ জন, রাজনীতিক ২০ জন, সাংবাদিক ১৮ জন, সাহিত্যিক ১৮ জন, বিজ্ঞানী ৩ জন, দার্শনিক একজন, গবেষক একজন ও চিত্রশিল্পী একজন। এছাড়া সংস্কৃতিসেবী এবং চলচ্চিত্র, নাটক, সংগীত ও শিল্পকলার অন্যান্য শাখার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ৩০ জন ব‌্যক্তি শহীদ বুদ্ধিজীবীর তালিকায় রয়েছেন।

Advertisement

আগামী ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের মধ্যে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের তালিকা চূড়ান্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী। তিনি বলেন, চতুর্থ দফার তালিকাই শেষ। আরও যদি কোনো আবেদন থাকে, কিছু রিভিউতেও আছে... প্রাথমিকভাবে আমরা ৫৬০ জনের তালিকা ঘোষণা করছি। সর্বশেষ ও চূড়ান্ত তালিকা ১৪ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকাশ করবো। এটি খসড়া চূড়ান্ত তালিকা ধরে নিতে পারেন।

মন্ত্রী বলেন, তালিকা প্রণয়নে আমাদের কোনো শৈথিল্য ছিল না। তারপরও মানুষ হিসেবে ভুল-ভ্রান্তি হতে পারে। আমাদের জানার বাইরেও থাকতে পারে। আমরা সবজান্তা নই। সবার পক্ষে আবেদনও আসেনি। কারো কাছে প্রাথমিক তথ্য থাকলে আমাদের দিলে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের আগে সেগুলো অবশ‌্যই অত‌্যন্ত সচেতনতার সঙ্গে বিবেচনা করে চূড়ান্ত করবো।

রাজাকারের তালিকার বিষয়ে জানতে চাইলে মোজাম্মেল হক বলেন, রাজাকারের তালিকা করতে একটি কমিটি করা হয়েছিল। সে কমিটি আমাদের কাছে এখনো কোনো তালিকা করে দিতে পারেনি।

শহীদ বুদ্ধিজীবীদের তালিকা প্রণয়ণের জন্য ২০২০ সালের ১৯ নভেম্বর গবেষক, বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের নিয়ে যাচাই-বাছাই কমিটি গঠন করা হয়।

কমিটি নির্ধারিত শহীদ বুদ্ধিজীবীর সংজ্ঞা অনুযায়ী, যেসব সাহিত্যিক, দার্শনিক, বিজ্ঞানী, চিত্রশিল্পী, শিক্ষক, গবেষক, সাংবাদিক, আইনজীবী, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, স্থপতি, ভাস্কর, সরকারি ও বেসরকারি কর্মচারী, রাজনীতিবিদ, সমাজসেবী, সংস্কৃতিসেবী, চলচ্চিত্র, নাটক, সংগীত ও শিল্পকলার অন্যান্য শাখার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, যাদের বুদ্ধিবৃত্তিক কর্মের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন এবং পাকিস্তানি দখলদার বাহিনী কিংবা তাদের সহযোগীদের হাতে শহীদ কিংবা চিরতরে নিখোঁজ হয়েছেন, তারা শহীদ বুদ্ধিজীবী হিসেবে বিবেচিত হবেন।

পরে ২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর কমিটির প্রথম সভায় প্রাথমিকভাবে এক হাজার ২২২ জন বুদ্ধিজীবীর তালিকা অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রাথমিকভাবে ১৯৭২ সালে এক হাজার ৭০ জন শহীদের তালিকা, পরবর্তী সময়ে ডাক বিভাগ ১৫২ জন শহীদের ডাকটিকিট প্রকাশ করে সেই তালিকাও অনুমোদন দেওয়া হয় ওই সভায়।

আরএমএম/এমএইচআর/এমএস