জাতীয়

বাসের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হলেও চাপ নেই গাবতলীতে

আসন্ন ঈদযাত্রায় বাসের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে গতকাল শুক্রবার। সাধারণত ঈদে বাসের অগ্রিম টিকিট কিনতে কাউন্টারগুলোতে থাকে যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড়। তবে এবার এর ছিটেফোঁটাও প্রভাব পড়েনি রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনালে। পুরো টার্মিনাল এলাকায় এখন শুনশান নিরবতা।

Advertisement

পরিবহন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ঘাটে ফেরি পারাপারে যাত্রী সংখ্যা কমে গেছে। এছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার বাস কাউন্টার থেকেও অগ্রিম টিকিট দেওয়া হচ্ছে। এতে গাবতলী বাস টার্মিনালে যাত্রী কমেছে।

শনিবার (২৩ মার্চ) বিকেল ৪টায় সরেজমিনে দেখা যায়, গাবতলী বাস টার্মিনালে যাত্রী নেই বললেই চলে। দু-একজন যারা আসছেন তারা এক কাউন্টার থেকে অন্য কাউন্টার ঘুরে পছন্দ মতো টিকিট সংগ্রহ করছেন। যাত্রী খরায় খুব সহজেই মিলছে কাঙ্ক্ষিত বাসের টিকিট।

কাউন্টারে থাকা পরিবহন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঢাকার সব কাউন্টারেই অগ্রিম টিকিট বিক্রি হচ্ছে। এ কারণে গাবতলীতে যাত্রীর চাপ নেই।

Advertisement

শ্যামলী পরিবহনের কল্যাণপুর কাউন্টার থেকে বগুড়া, নওগাঁ, রংপুর, জয়পুরহাট, গাইবান্ধা, কুষ্টিয়া, মেহেরপুরের টিকিট বিক্রি হচ্ছে। আসাদগেট কাউন্টার থেকে দেওয়া হচ্ছে দিনাজপুরের বাসের টিকিট। এছাড়া শ্যামলী কাউন্টার থেকে ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়ের টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে। ফলে টিকিট নিতে যাত্রীদের গাবতলী বাস টার্মিনালে আসতে হচ্ছে না। সুবিধামতো স্থান থেকে টিকিট সংগ্রহ করতে পারছেন যাত্রীরা।

আরও পড়ুন

সহজ ডটকমের দুজনের নেতৃত্বে রেলের টিকিট কালোবাজারি, গ্রেফতার ৯ ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু রোববার

গাবতলীতে থাকা শ্যামলী পরিবহনের স্টাফ মানিক বলেন, গতকাল থেকে অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। কিন্তু এখানে ভিড় নেই। অন্যসব কাউন্টার থেকে যাত্রীরা টিকিট সংগ্রহ করছেন, এজন্য গাবতলীতে চাপ নেই।

কথা হয় হানিফ পরিবহনের কাউন্টারে থাকা হৃদয়ের সঙ্গে। জাগো নিউজকে তিনি জানান, গতবছরের তুলনায় ছিটেফোঁটা যাত্রীও নেই এবার। কাউন্টারে তাদের অলস সময় কাটাতে হচ্ছে।

Advertisement

হৃদয় বলেন, গত ঈদে যখন অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয় তখন প্রথম দিনেই ৫০-৬০ হাজার টাকার টিকিট বিক্রি করেছি। আর এবার! আজ সারাদিনে ৫-৬ হাজার টাকার টিকিট বিক্রি করাই কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এখানে চাকরি করছি ৫ বছরেরও বেশি সময়। গাবতলী টার্মিনালে এমন যাত্রীশূন্য অবস্থা আগে দেখিনি। আগে কাউন্টারে ভিড় লেগেই থাকতো, এখন তার কিছুই নেই।

গাবতলী বাস টার্মিনালে টিকিট কাউন্টার ঘুরে দেখার সময় একজন এসে এই প্রতিবেদককে জিজ্ঞাসা করেন, ‘টিকিট লাগবে নাকি?’ কথা প্রসঙ্গে জানা যায় তিনি রিজভী পরিবহনের স্টাফ। গাবতলী থেকে রংপুর, সৈয়দপুর, দিনাজপুর, কুড়িগ্রামসহ সমগ্র উত্তর বঙ্গের জেলাগুলোতে চলাচল করে এই পরিবহনের বাস। দীর্ঘদিন বাসের স্টাফ হিসেবে কাজ করেন আব্দুল হাই। জাগো নিউজকে তিনি বলেন, ‘বাসে যাত্রী নেই বললেই চলে। আমাদের নরমাল পরিবহন, এমনিতেই ভালো গাড়ির তুলনায় যাত্রী কম পাই। এখন যাত্রী একেবারেই কম।’

সোহাগ পরিবহনের বুকিং ক্লার্ক আব্দুল জলিল বলেন, ‘আমাদের সব কাউন্টার থেকে বাসের অগ্রিম টিকিট বিক্রি হচ্ছে। এ কারণে এখানে তেমন ভিড় নেই।’

গাবতলী বাস টার্মিনালে আরও বেশ কয়েকজন বাসের স্টাফ, টিকিট কাউন্টারে কর্মরতদের সঙ্গে কথা হয়। তারা জানান, ২০ রমজানের পর থেকে অনেকেই পরিবার-পরিজনদের ঢাকা থেকে বাড়ি পাঠিয়ে দেবেন। সেসময় যাত্রীর চাপ বাড়বে এবং ব্যবসা ভালো হবে বলে আশাবাদী তারা।

এনএস/কেএসআর/জেআইএম