চলছে পবিত্র রমজান মাস। এ সময় মুসলিমরা সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত খাবার-পানি গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকেন। রোজার দিনের অন্যতম অনুষজ্ঞ হচ্ছে ইফতার। নানা পদের বাহারি খাবার দিয়ে শুরু হয় ইফতার। রমজান মাসকে কেন্দ্র করে এই সময়টায় জমজমাট হয়ে উঠেছে কলকাতার নাখোদা মসজিদ ও জাকারিয়া স্ট্রিট। এখানে অল্প খরচে নানা ধরনের খাবার পাওয়া যায়।
Advertisement
কলকাতার বাসিন্দারা ছাড়াও বিদেশি পর্যটকদের কাছেও অন্যতম পছন্দের গন্তব্যস্থল নাখোদা মসজিদ ও জাকিরিয়া স্ট্রিট। ইফতারের আগে জাকিরিয়া স্ট্রিটের দু’ধারে সাজানো সারি সারি খাবারের দোকানগুলোতে ভিড় জমতে শুরু করে।
সে সময়টাই এখানে পা ফেলার জো থাকে না। সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গেই এখানকার রকমারি তেলে ভাজা বিভিন্ন খাবার, হালিম, কাবাবের স্বাদ নিতে দোকানে দোকানে মানুষের ভিড় বাড়তে শুরু করে।
নাখোদা মসজিদসহ আশে-পাশে তৈরি হওয়া অস্থায়ী কাঠামোর স্থলে কাঠ কয়লার আঁচে তৈরি হচ্ছে রেশমি কাবাব, টিক্কা কাবাব, মাটন কাবাব, ফিস কাবাব, মালাই কাবাব। এছাড়াও খুব অল্প খরচে পাওয়া যাচ্ছে, চিকেন ও মাটন হালিম, বিফ হালিম, মাটন, চিকেন, বিফ বিরিয়ানি, নাল্লি নিহারী, ফিরনি। মিলছে রকমারি ফল, দেশ-বিদেশের খেজুর। অনেকের পছন্দের মোগলাই পরোটা, রুমালী রুটি, বাটার নান, কুলচা ইত্যাদি।
Advertisement
রকমারি সুস্বাদু খাবারের ঘ্রাণে মাতোয়ারা পুরো এলাকা। মসজিদের সামনে থেকে একটু এগোলেই ঠান্ডা ফালুদা, লাচ্ছি, রুহ আবজাসহ বিভিন্ন ধরনের শরবতের দোকান। সারা বছরই এখানে দোকানে সুস্বাদু খাবার বিক্রি হয়। তবে এই পবিত্র মাসে ভিড় উপচে পড়ে।
রমজান মাস উপলক্ষে নাখোদা মসজিদ থেকে শুরু করে গোটা এলাকা সাজানো হয় রং বেরঙের নিয়ন আলো দিয়ে। ফলে একদম উৎসবের আমেজ থাকে গোটা চত্বরেই।
দক্ষিণ কলকাতার তরুণী মুক্তা গাজি তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে ইফতার কিনতে এসে বলেন, আগেও অনেকবার এই অঞ্চলে থেকে আমরা ইফতার কিনে নিয়ে গেছি। এখানকার খাবার খুব সস্তায় পাওয়া যায়। খাবারের স্বাদও অনেক ভালো। তাই সারা বছরই আসা হয় তবে এই পবিত্র মাসে ইফতারটা এখান থেকেই কিনে নিয়ে যাই। কাবাব, মাটন হালিম, ফালুদা নেওয়া হয়েছে। মোগলাই পরোটা বাড়িতে তৈরি করব।
অফিস ফেরত পল্লব চক্রবর্তী অফিসেরসহ কর্মীদের নিয়ে অল্প খরচে বাহারি খাবারের স্বাদ নিতে নাখোদা মসজিদ চত্বরে হাজির। তিনি বলেন, এখানকার মাটন কাবাবের সঙ্গে রুমালি রুটির কম্বিনেশনটা অসাধারণ। তাই অফিসের সহকর্মীরা মিলে খেয়ে গেলাম। বাড়ির লোকদের দাবি মাটন হালিম। তাই মাটন হালিম নিয়ে যাচ্ছি।
Advertisement
জাকারিয়া স্ট্রিটের অস্থায়ী হোটেল মালিকের কথায়, বিক্রি ভালোই হচ্ছে। আর কয়েকদিন কাটলে এই ভিড় আরও বাড়বে।সব ধরনের খাবারের চাহিদা আছে।ত বে মাটন কাবাবের চাহিদা একটু বেশি।
মোগলাই খাবারের পাশাপাশি এখানে বিক্রি হচ্ছে, ছোলা, মুড়ি, চপ। এক সঙ্গে সব কিছু মিলিয়ে ঠোঙায় ভরে নিয়ে যাচ্ছে অনেক মুসল্লি। দামে সস্তা, স্বাদ, মান এবং গুণেও ভালো হওয়ায় জাত, ধর্ম, বর্ণের বেড়াজাল ডিঙিয়ে আপামর খাদ্যপ্রেমীরা এই এলাকার খাবার উপভোগ করছেন।
ডিডি/টিটিএন