সাহিত্য

নিজের ঘরে অন্য কেউ এবং অন্যান্য

নিজের ঘরে অন্য কেউ

Advertisement

মানুষের ভেতর মানুষ যখনই মরে যায়তখন চোখের পর্দা অন্তর্দৃষ্টি কেড়ে নেয়জাগতিক রঙের রঙিন ছবিজ্ঞানে বা বিজ্ঞানেযতই শরীরে আঁকা হোকশিরা বা উপশিরায়যতই প্রবাহিত হোক জাগতিক বোধতবুও অন্তর্দৃষ্টি খসে যায়বিবেকের আবরণে ভেতর বিবেকমনুষ্যত্ব আবরণে ভেতরের মনুষ্যত্ব মরে যায় কিংবা বেঁচে থাকেগভীর শীতনিদ্রার অবচেতনের ঘরে

বুকের ভেতর শৈশবের শিশু মরে গেলেকৈশোরের দুরন্ত ঘোড়াটা মরে গেলেযৌবনের ফুসফুসে যদি জমে যায়জং ধরা দীর্ঘশ্বাস তখন ভেতর মানুষটার ভেতরেঅন্য কেউ অন্তর্দৃষ্টি শূন্য মাটির শরীরযে মাটিতে ফুল নেই, গন্ধ নেইআমি আমি প্রাণ নেই

****

Advertisement

দীর্ঘশ্বাস

কী এক ধূসর দীর্ঘশ্বাস—জড়িয়ে ধরেছে অন্তর্মুখী টানে যেন ব্ল্যাকহোল,ছায়াপথে হেঁটে হেঁটে গিলে খায়—নক্ষত্র সকল,আলোবীজ থেকে অঙ্কুরিত জোছনা কুসুম

কী এক আজব দীর্ঘশ্বাস উপহার দিলে!জীবনের ভরকেন্দ্রে অসহ্য পীড়ন বিকৃত করেছে বসন্তের মুখথেঁতলে দিয়েছে কুমারি ফুলের ঘ্রাণ আয়ুপথে রোপণ করেছে—সারি সারি হেমলকধ্রুপদী সমুদ্রে ঢেলে দিয়েছে সমস্ত প্রাণ

কী এক চুম্বক দীর্ঘশ্বাস—দিয়েছ আমায়টেনে নিচ্ছে সবুজের সব রক্তকেড়ে নিচ্ছে আকাশের স্বাদব্ল্যাকহোল নাভিমূলে—চোখ রেখেবোধের হাবল দূরবীনে দেখেছি সেসব ঘূণে কাটা স্বার্থের প্রণয়, ভালোবাসা...

Advertisement

****

কোথাও দাঁড়ালে এম এ রহমান

গোলাপ কলিতে আর ফুটলো না বাকি পথ...

কোথাও দাঁড়ালে এক শুষ্ক নদী কাছে আসেপ্রভুভক্ত কুকুরের মতো লেজ নেড়ে পাশে বসেনদীর ছায়ায় নিচে উত্তপ্ত ধূসর বালুচর

জল ও জীবন সবুজ নদীর পাশে হাঁটে যেমন হেঁটেছ তুমি প্রেমে ও অপ্রেমে

কারা যেন আকাশটা খাঁচাবন্দি করে রাখেকারা?পাখিদের সমস্ত উড়াল কেড়ে নেয়নদীর যৌবন চুষে—সবুজের খিলখিল হাসি কেড়ে নেয়!

চেয়েছি সবুজ দূর্বা হতে—কোনো মেঠোপথে, মাঠেগ্রামীণ বাতাসে দোল খাওয়া শস্যের ভেতরেঅথবা বসন্তে কোনো বুনো ভাঁটফুল নিচে...

তবু কারা যেন পথে ঢালে হিংসার আগুনঅশোকের তরবারি, বারুদ, পাথর, বোমাবুকপকেটের ভাঁজে রাখে সাহারার দীর্ঘশ্বাস

অথচ চেয়েছি মাটির খুব কাছাকাছি—নরম-সবুজ পাতা, সবুজ নরম কাণ্ডে দূর্বা হতে...

****

একটা বিষণ্ন সন্ধ্যা

মাঝে মাঝে হুটহাট একটা বিষণ্ন সন্ধ্যা—একাকিত্বের উঠোনে অযাচিত এসে যায়নীরবতা খুঁড়ে খুঁড়ে লুকানো সিন্ধুকে—বেদনার পাণ্ডুলিপি খুঁজে আনে

ঠিকঠাক আসকারা পেলে কাছে আসেমৌনতার দহলিজে বসে মুখোমুখি—পাঠ করে পাণ্ডুলিপি;তখন যাপিত চিৎকারের নীল রক্তে লেখা—বর্ণ বেয়ে টুপটাপ ঝরে পড়ে বিস্ময় কোরাস

মাঝে মাঝে কোন পৃষ্ঠা ওল্টাতেই ঝরে পড়েতোমার শুকনো কয়েকটা চুমুচুমুর ভেতরে মৃত প্রজাপতিতারপর...তোমার ছায়ার হিসহিস ফণা একেকটা দিনের আয়ুকে গিলে ফেলে...

একাকিত্বের উঠোনে পাণ্ডুলিপি পড়ে যায়একটা বিষণ্ন সন্ধ্যা...

এসইউ/এমএস