আন্তর্জাতিক

কেজরির গ্রেফতারে মমতার নিন্দা, নির্বাচন কমিশনে ‘ইন্ডিয়া’

দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা করলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী। জানিয়েছেন, কেজরির গ্রেফতারের পরপরই তার স্ত্রী সুনীতাকে ফোন করেছিলেন মমতা। পাশে থাকার বার্তাও দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। সেই সঙ্গে মমতা জানান, শুক্রবার (২২ মার্চ) এই সংক্রান্ত অভিযোগ জানাতে এরই মধ্যে নির্বাচন কমিশনে গেছে ‘ইন্ডিয়া’ জোটের একটি প্রতিনিধি দল, যেখানে তৃণমূলের দুই সদস্যও ছিলেন।

Advertisement

এক্স হ্যান্ডেলে মমতা লিখেছেন, জনগণের ভোটে নির্বাচিত দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা করছি। আমি সুনীতা কেজরীওয়ালের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগ করেছি ও পাশে থাকার বার্তা দিয়েছি। বিরোধী দলের মুখ্যমন্ত্রীদের বেছে বেছে গ্রেফতার করা হচ্ছে। কিন্তু বিজেপির সঙ্গে জোটে থাকলে ইডি, সিবিআইয়ের তদন্তে অভিযুক্ত ব্যক্তিরাও ছাড় পাচ্ছেন, দুর্নীতি চালিয়ে যেতে পারছেন। এটা মেনে নেওয়া যায় না। এটা গণতন্ত্রের উপর নির্মম আঘাত।

মমতা আরও লেখেন, আমাদের ‘ইন্ডিয়া’ জোটের সদস্যরা শুক্রবার নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে দেখা করবেন ও আদর্শ আচরণবিধি প্রযুক্ত থাকার সময়ে বিরোধী নেতাদের এভাবে ‘টার্গেট’ করার বিরোধিতা করবেন। কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে ইন্ডিয়া’র প্রতিনিধি দলে তৃণমূলের পক্ষ থেকে থাকবেন ডেরেক ও’ব্রায়েন ও নাদিমুল হক।

তার এই পোস্টের কয়েক ঘণ্টা পরেই নির্বাচন কমিশনে যান বিরোধী জোট ইন্ডিয়া’র প্রতিনিধিরা। বৈঠক শেষে তিনি জানান, এই ঘটনায় কমিশনের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন তারা। কারণ, ভোটের আগে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোকে ব্যবহার করে মোদী সরকার মূলত বিরোধীদের কোণঠাসা করতে চাইছে বলে অভিযোগ তাদের।

Advertisement

নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর কংগ্রেস নেতা অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, এখানে প্রায় সব বিরোধী দলের প্রতিনিধি রয়েছেন। গত রাতে যা হয়েছে (কেজরিওয়ালের গ্রেফতার), তা নিয়ে আমরা নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করলাম।

‘এটি কোনো ব্যক্তি বা দলের বিষয় নয়, সংবিধানের সাধারণ কাঠামোর বিষয়। নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বা সমতল মাঠ প্রয়োজন। কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন দল সরকারি সংস্থাগুলোর অপব্যবহার করে সেই সমতল মাঠের ক্ষতি করছে। এতে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন ব্যাহত হবে, যার প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়ছে গণতন্ত্রের উপর।’

সিঙ্ঘভি আরও বলেন, ভোটের আগে মাঠ সমতল করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে নির্বাচন কমিশনকে। তাই এই ব্যাপারে আমরা কমিশনের হস্তক্ষেপ চেয়েছি। স্বাধীন ভারতের ৭৫ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো জনগণের ভোটে নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রীকে দায়িত্বে থাকাকালীন গ্রেফতার করা হলো।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) রাতে আবগারি দুর্নীতি মামলায় দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে গ্রেফতার করে ভারতের অর্থ মন্ত্রণালয়ের তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। ওই মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এর আগে তাকে আট বার সমন পাঠানো হয়েছিল।

Advertisement

বৃহস্পতিবার ছিল নবম সমনের দিন। কিন্তু ইডিতে হাজিরা না দিয়ে কেজরি সরাসরি দিল্লি হাইকোর্টে গিয়েছিলেন। সেখানে রক্ষাকবচের আবেদন জানিয়েছিলেন। তা খারিজ হওয়ার পর ওইদিন রাতেই কেজরির বাড়িতে পৌঁছে যায় ইডি। ঘণ্টা দুয়েক তল্লাশির পর তাকে গ্রেফতার করা হয়। তার দল আম আদমি পার্টি (আপ) জানিয়ে দিয়েছে, কেজরিওয়াল পদত্যাগ করছেন না। কারাগারে বসেই দায়িত্ব চালিয়ে যাবেন তিনি।

সূত্র: এনডিটিভি, টাইমস অব ইন্ডিয়া ও অন্যান্য

এসএএইচ