বইয়ের দোকান কিংবা রাস্তার পাশের অস্থায়ী ছোট দোকান। তাতে টাঙানো রং-বেরঙের নকশা করা কার্ড। রোজার মাস এলেই বেড়ে যেত এসব কার্ডের কদর। বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন, ছোটদের মাঝে বিনিময় হতো দৃষ্টিনন্দন কার্ড। বলছিলাম একসময়ের বহুল জনপ্রিয় ঈদ কার্ডের কথা।
Advertisement
বাহারি রং আর নকশার জন্য বেচাকেনা হতো বেশ। চাঁদ, তারা, মসজিদ, কাবাঘর, কার্টুন, তারকাদের ছবির মাঝে লেখা থাকতো ঈদ শুভেচ্ছা। ঈদের জামাকাপড় কেনার সাথে ঈদ কার্ড কেনাও ছিল অন্যতম অনুষঙ্গ। কালক্রমে কমেছে ঈদ কার্ড, বেড়েছে ভার্চুয়াল শুভেচ্ছা বিনিময়।
এক যুগ আগেও ঈদ কার্ড ছাড়া বাঙালির ঈদ আনন্দ কল্পনা করা যেত না। রোজার শুরু থেকেই তরুণ-তরুণীদের ব্যস্ততা ছিল ঈদ কার্ডকে ঘিরে। ছোটরা বায়না ধরে বাড়ি থেকে নিতো বাড়তি টাকা। কে কতজনের কাছ থেকে কার্ড পেলো বা না পেলো—এগুলো নিয়ে চলতো মান-অভিমান। রোজার এই মাসকে ঘিরে মৌসুমী ব্যবসায়ীরা করতেন বাড়তি আয়।
আরও পড়ুন
Advertisement
বর্তমানে স্মার্ট প্রযুক্তির কাছে মাথা নুইয়েছে ঈদ কার্ডের ঐতিহ্য। ঈদ কার্ডের বদলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন শুভেচ্ছা কার্ড পাঠানোকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে বর্তমান প্রজন্ম। তাই হরহামেশাই দোকানগুলোতে ঈদ কার্ডের দেখা মেলে না। মৌসুমী দোকানগুলোও আজ অস্তিত্বহীন।
ফলে টিকে থাকতে বিয়ের কার্ড, ক্যালেন্ডার, ডায়েরির ওপর নির্ভর করছেন কার্ড ব্যবসায়ীরা। বিশেষ দিবসে কর্পোরেট অফিস, রাজনৈতিক দল কিংবা অন্য প্রতিষ্ঠান শুভেচ্ছা কার্ড অর্ডার দিয়ে থাকলেও সেগুলো হাতেগোনা। পাইকারি ও খুচরা ক্রেতাদের আগমন নেই বললেই চলে।
তথ্যমতে, নব্বই দশক ছিল ঈদ কার্ড ব্যবসার সবচেয়ে জমজমাট সময়। মানুষ লাইন দিয়ে কিনতো ঈদ কার্ড। শেষ হয়ে যেত কার্ড, ফুরাতো না চাহিদার ভিড়।
এখনো বন্ধু কিংবা কাছের মানুষ থেকে ঈদের শুভেচ্ছা মেলে। তবে তা ফেসবুক কিংবা অন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। যাকে বলে ভার্চুয়াল জগতের ভার্চুয়াল শুভেচ্ছা। নেই শুধু ঈদ কার্ড পাওয়ার সেই আবেগ আর অনুভূতি।
Advertisement
এসইউ/এমএস