স্মার্টফোনের বাজারে একচেটিয়া ব্যবসা এবং প্রতিযোগীদের হটিয়ে দেওয়ার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রে অ্যাপলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। মামলায় মার্কিন বিচার বিভাগ অভিযোগ করেছে, আইফোন অ্যাপ স্টোরে ক্রেতা ও ডেভেলপারদের আটকে রাখতে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে কোম্পানিটি।
Advertisement
বিবিসি জানিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার নিউ জার্সির ফেডারেল আদালতে অ্যাপলের বিরুদ্ধে এই মামলা দায়ের হয়। প্রযুক্তি কোম্পানিটির মুখোমুখি হওয়া আজ অবধি সবচেয়ে বড় আইনি চ্যালেঞ্জ এটি।
আরও পড়ুন>>
স্যামসাংকে পেছনে ফেলে বিশ্বের শীর্ষ ফোননির্মাতা এখন অ্যাপল ভারতে অ্যাপলের বিক্রি বেড়েছে ৪৮ শতাংশ ডিগ্রি ছাড়াই অ্যাপলে চাকরি সম্ভব, জানালেন টিম কুকমামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, অ্যাপল গ্রাহকদের খরচ বাড়াতে এবং নতুন উদ্ভাবনকে দমিয়ে রেখে নিজেদের মুনাফা বাড়াতে একটি ‘শেপশিফটিং নিয়ম’ ব্যবহার করেছে। এর মাধ্যমে তারা অ্যাপলের হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যারগুলোর অ্যাক্সেস সীমাবদ্ধ করে রেখেছে।
Advertisement
অ্যাটর্নি জেনারেল মেরিক গারল্যান্ড এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, যোগ্যতার ভিত্তিতে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থেকে নয়, বরং কেন্দ্রীয় অ্যান্টি-ট্রাস্ট আইন লঙ্ঘন করে স্মার্টফোনের বাজারে একচেটিয়া ক্ষমতা বজায় রেখেছে অ্যাপল। কোম্পানিটি আইনভঙ্গ করেছে বলে গ্রাহকদের বেশি মূল্য দেওয়া উচিত নয়।
৮৮ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্রে অ্যাপলের বিরুদ্ধে পাঁচটি ক্ষেত্রে ক্ষমতার অপব্যবহারের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, মার্কিন সরকার অভিযোগ করেছে, অ্যাপল তথাকথিত সুপার অ্যাপ এবং স্ট্রিমিং অ্যাপগুলোর বিকাশে বাধা দিতে নিজেদের অ্যাপ পর্যালোচনা প্রক্রিয়া ব্যবহার করেছে। কারণ কোম্পানিটির ভয়, এ ধরনের অ্যাপগুলো গ্রাহকদের আইফোনের সঙ্গে লেগে থাকার উৎসাহ কমিয়ে দেবে।
আরও পড়ুন>>
বিশ্বের প্রথম কোম্পানি হিসেবে ৩ ট্রিলিয়নের মাইলফলকে অ্যাপল নিজের বেতন ৪০ শতাংশ কমালেন অ্যাপল সিইও দ্য ইকোনমিস্টের প্রতিবেদন/ টেক জায়ান্টদের বড় সমস্যা মালিকানায় একক আধিপত্যমামলায় আরও অভিযোগ করা হয়েছে, অ্যাপল প্রতিদ্বন্দ্বীদের তৈরি স্মার্ট ওয়াচগুলোর সঙ্গে আইফোনকে সংযুক্ত করা কঠিন করে তুলেছে। এমনকি, ব্যাংক এবং অন্যান্য আর্থিক সংস্থাগুলোকে ট্যাপ-টু-পে প্রযুক্তি ব্যবহারেও বাধা দিয়েছে। এর মাধ্যমে অ্যাপল পে ট্রানজেকশনগুলো থেকে কোটি কোটি ডলার উপার্জন করেছে কোম্পানিটি।
Advertisement
তবে এসব অভিযোগ দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে টেক জায়ান্ট অ্যাপল। কোম্পানিটি বলেছে, এই মামলায় উত্থাপিত অভিযোগগুলো ভুল এবং তারা এর বিরুদ্ধে ‘জোরালোভাবে’ লড়বে।
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনের অধীনে কোম্পানিটির বিরুদ্ধে দায়ের করা প্রথম অ্যান্টি-ট্রাস্ট মামলা এটি। ২০০৯ সাল থেকে এ নিয়ে তৃতীয়বার মার্কিন সরকারের আইনি পদক্ষেপের মুখে পড়লো অ্যাপল।
সরকার যদি এ মামলায় জয়লাভ করে, তাহলে তারা অ্যাপলের বর্তমান চুক্তি ও অনুশীলনগুলো সংশোধন করতে বাধ্য করতে পারে। এমনকি কোম্পানিটি ভেঙেও দিতে পারে।
বৃহস্পতিবার মামলা দায়ের হওয়ার পরপরই অ্যাপলের শেয়ারে দর চার শতাংশের বেশি কমে গেছে।
কেএএ/