যুক্তরাজ্যে আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য প্রতারণার নতুন ফাঁদ পেতেছে একটি চক্র। এর জন্য যুক্তরাজ্য সরকারের একটি স্বেচ্ছাপ্রত্যাবাসন কর্মসূচিকে ব্যবহার করছে তারা। মূলত রুয়ান্ডায় যেতে এবং তিন হাজার পাউন্ড সহায়তা পেতে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে যুক্তরাজ্যে থাকা আশ্রয়প্রার্থীদের সঙ্গে প্রতারণা করছে চক্রটি।
Advertisement
সম্প্রতি ব্রিটিশ সংবাদপত্র দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, প্রতারকেরা দুটি প্রকল্প নিয়ে কাজ করছে। একটি হলো সরকার ঘোষিত তিন হাজার পাউন্ড অর্থ সহায়তা। অন্যটি হলো, যুক্তরাজ্যে প্রত্যাখ্যাত আশ্রয়প্রার্থীদের রুয়ান্ডায় পাঠাতেই সরকার প্রণোদনা হিসেবে তিন হাজার পাউন্ড অর্থ দিচ্ছে বলে প্রচার করা।
আরও পড়ুন>>
বিতর্কিত রুয়ান্ডা পরিকল্পনার পক্ষে ভোট দিলেন ব্রিটিশ এমপিরা নিম্নকক্ষে বিল পাস হলেও অনিশ্চয়তা কাটেনি সুনাকের যুক্তরাজ্যে আশ্রয়প্রার্থীদের রুয়ান্ডায় স্থানান্তর ‘বেআইনি’: ব্রিটিশ সুপ্রিম কোর্টআশ্রয়প্রার্থীদের সহায়তাকারী বেসরকারি সংস্থা মাইগ্রেন্ট হেল্পের নাম নিয়ে আশ্রয়প্রার্থীদের ফোন দিচ্ছে প্রতারক চক্রের সদস্যরা। এসব কল দেওয়া হচ্ছে নম্বর গোপন করে। ফরে, কলদাতার পরিচয় শনাক্ত করা যাচ্ছে না।
Advertisement
বিষয়টি নজরে আসার পর তাদের পক্ষ থেকে এমন কোনো কল করা হচ্ছে না বলে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে জানিয়েছে মাইগ্রেন্ট হেল্প।
ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেছে, এটি ভঙ্গুর মানুষদের সঙ্গে প্রতারণার নিষ্ঠুর কৌশল।
প্রত্যাবাসনে পুরস্কারএকটি স্বেচ্ছাসেবী প্রকল্পের আওতায় তিন হাজার পাউন্ড অর্থের বিনিময়ে আশ্রয়প্রার্থীদের আফ্রিকার দেশ রুয়ান্ডায় পাঠানোর পরিকল্পনা নিয়েছে যুক্তরাজ্য সরকার। যেসব আশ্রয়প্রার্থীর আবেদন প্রত্যাখ্যান হবে, তাদেরই এই প্রস্তাব দেওয়া হতে পারে। এর মধ্য দিয়ে আশ্রয় প্রক্রিয়ায় সৃষ্ট ব্যাকলগ দূর করতে চায় ব্রিটিশ সরকার।
আরও পড়ুন>>
Advertisement
যুক্তরাজ্যে হাজার হাজার আশ্রয়প্রার্থী রয়েছেন। তাদের অনেকের আশ্রয় আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। কিন্তু যুদ্ধবিধ্বস্ত বা মানবাধিকার রক্ষা হচ্ছে না এমন দেশের নাগরিক হওয়ায় তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে পারছে না ব্রিটিশ সরকার।
প্রত্যাখ্যাত আশ্রয়প্রার্থীরা যুক্তরাজ্যে বৈধভাবে কাজ করতেও পারছেন না। কিন্তু রুয়ান্ডায় গেলে কর্মসংস্থানের সুযোগ পেতে পারেন। এছাড়া, প্রস্তাবিত পরিকল্পনার অধীনে পাঁচ বছর অতিরিক্ত সহায়তাও পাবেন তারা।
আরও পড়ুন>>
ঝুঁকি নিয়ে সাগরপথে ইউরোপ যাওয়ায় শীর্ষে বাংলাদেশিরাইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে ইংল্যান্ডের দক্ষিণ উপকূলে আসা আশ্রয়প্রার্থীবাহী নৌকা থামানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে এসেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক৷ এ ধরনের নৌকা থামানোকে নিজের পাঁচ অগ্রাধিকারের একটি হিসেবে নিয়েছেন এই রাজনীতিবিদ।
সেই পরিকল্পনার অধীনে ব্রিটিশ সরকার আশ্রয়প্রার্থীদের রুয়ান্ডায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু গত বছর দেশটির সুপ্রিম কোর্ট এক রায়ে সরকারের এই পরিকল্পনাকে বেআইনি বলে ঘোষণা দেয়।
এরপর আদালতের বাধা কাটাতে রুয়ান্ডার সঙ্গে নতুন চুক্তি করে যুক্তরাজ্য সরকার। এ জন্য পার্লামেন্টের মাধ্যমে আইন পাসের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই আইন রুয়ান্ডাকে আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য তথাকথিত নিরাপদ দেশ ঘোষণা করবে এবং অন্যান্য আইনি চ্যালেঞ্জগুলো ঠেকাতে পারবে।
সূত্র: ইনফোমাইগ্রেন্টসকেএএ/