কফি হাউস। কলকাতায় বইপাড়ার মাঝে দাঁড়িয়ে থাকা এক প্রাচীন ইতিহাস। দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য জড়িয়ে রয়েছে এর সঙ্গে। আজও তিলোত্তমা নগরীতে শীর্ষ পর্যটন গন্তব্যের তালিকায় রাখা হয় কলেজ স্ট্রিটের কফি হাউসকে। দেশের সীমানা পেরিয়ে বিদেশি পর্যটকদের কাছেও জনপ্রিয় কলকাতার কফি হাউস। বহু প্রথিতযশা কবি, বিজ্ঞানী, সাহিত্যিক, নাট্যকারের পা পড়েছে সেখানে। হালফিলের কফিশপ যতই আসুক, কলেজপাড়ার কফি হাউস বাঙালির কাছে এক ও অদ্বিতীয়।
Advertisement
কিন্তু ঐতিহ্যবাহী কফি হাউসের কাঠের টেবিলে বসে চা-কফির পেয়ালায় চুমুক দিতে দিতে রাজনীতি, সমাজ, সাহিত্য নিয়ে আলোচনা এখন আর সেভাবে হয় না বললেই চলে। নানা ব্যস্ততার কারণে নতুন প্রজন্মের কাছে আড্ডা দেওয়ার মতো সময় খুব একটা থাকে না। অনেকের মতে, কফি হাউসের বদলে তারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বা অফিসে বসে কিংবা সোশ্যাল মিডিয়ায় আড্ডা দিতেই পছন্দ করে বেশি।
আরও পড়ুন>>
রমজানে কম খরচে ঘুরে আসুন কলকাতার কাছে তিন হাজার রুপি থাকলেই ঘুরে আসতে পারেন পশ্চিমবঙ্গের যে সৈকতে ভারতে বিদেশি পর্যটকের সংখ্যায় দ্বিতীয় বাংলাদেশিরাএরপরও, কফি হাউসের আড্ডায় নস্টালজিয়ায় ভাসতে ভালোবাসেন বহু মানুষ। বাংলাদেশের ঢাকা থেকে আসা এমডি রাসেল মাহমুদ নামে এক পর্যটক বলেন, মান্না দে এই কফি হাউস নিয়েই গেয়েছিলেন বিখ্যাত গান ‘কফি হাউসের সেই আড্ডাটা আজ আর নেই’। আমি আমার বাবার কাছে অনেক শুনেছি কফি হাউসের কথা। তাই পরিবার নিয়ে কলকাতায় ঘুরতে এসে কফি হাউসের কফিতে চুমুক দিয়ে গেলাম।
Advertisement
আরও পড়ুন>>
কলকাতায় কেনাকাটা/ একটু বেখেয়াল হলেই বিপদ! বাংলাদেশি পর্যটক টানতে কলকাতায় তোড়জোড়, বসলো সিসি ক্যামেরা প্রশান্তির খোঁজ দেবে পাহাড়ি গ্রাম লিংসেক্লাসের ফাঁকে বন্ধুদের সঙ্গে কফির পেয়ালায় চুমুক দিতে এসেছেন কলকাতার কলেজপড়ুয়া স্বপ্না দেবনাথ। তিনি বলেন, আগের মতো এত সময় আর নেই। ছোটবেলা থেকে যে গানটা শুনে বড় হয়েছি, সেই রকম আড্ডা এখন দেখতে পাওয়া যায় না। তবে কফি হাউসের প্রতি মানুষের আগ্রহ এখনো কমেনি।
কলকাতার শ্যামবাজারের বাসিন্দা সতম দাসের মতে, কফি হাউসে ২০-২৫ বছর আগে যেমন হতো, সেই আড্ডা এখন আর নেই। সবাই কর্মব্যস্ত হয়ে পড়েছে।
নবীন-প্রবীণ দুই প্রজন্মের মানুষেরই দেখা পাওয়া যায় কফি হাউসে। সেখানে রং-বেরঙের আড্ডা হয়তো কমেছে, কিন্তু আজও ঐতিহ্য বুকে ধরে সগৌরবে টিকে রয়েছে কলকাতার কফি হাউস। আজও জানান দিচ্ছে আড্ডাবাজ বাঙালির ইতিহাস-ঐতিহ্য।
Advertisement
ডিডি/কেএএ/