কৃষি ও প্রকৃতি

৭ হাজার টাকা পুঁজিতে ২ লাখ টাকা বিক্রি

১ বিঘা পতিত জমিতে পরীক্ষামূলক খিরার চাষ করে লাভবান হয়েছেন ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার দক্ষিণ চর চান্দিয়ার একরামুল হক। মাত্র ৭ হাজার টাকা পুঁজিতে তিনি ২ লাখ টাকার খিরা বিক্রি করেছেন। এছাড়া সব সময় খিরার চাহিদা থাকায় কৃষকেরাও এটি চাষ করে বেশ লাভবান হচ্ছেন। উপজেলার চর চান্দিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ ও উত্তর চর চান্দিয়া এবং পূর্ব বড় ধলীসহ কিছু গ্রাম ঘুরে খিরার আবাদের এ চিত্র দেখা গেছে।

Advertisement

উপজেলার দক্ষিণ চর চান্দিয়ায় গিয়ে কথা হয় একরামুল হকের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘এলাকায় বেড়িবাঁধের বাইরে শুধু বন্যা ও জোয়ারের লবণাক্ত পানির কারণে আমন ধান ছাড়া অন্য ফসল করা যেত না। এবার লবণের চরে পরীক্ষামূলকভাবে প্রক্রিয়াজাত করে খিরার বীজ লাগানো হয়েছে। জমির সমতল মাটি থেকে প্রায় এক-দেড় ফুট উঁচুতে। এই উচ্চতা তৈরি করা হয়েছে জমির মাটি কেটে স্তূপ করে। ১ বিঘা জমিতে খিরা চাষ করেছি।’

একরাম বলেন, ‘প্রায় ৭ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে। কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে পরিচর্যা শুরু করি। ৩০-৪০ দিনের মধ্যে ফলন উঠতে শুরু করেছে। প্রথমে একদিন পরপর ২০০-৩০০ কেজি করে খিরা তুলে বিক্রি করেছি। ২ মাসে প্রায় ২ লাখ টাকার খিরা বিক্রি করেছি। মজুরি বাদ দিয়ে প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা লাভ হয়েছে। প্রতিদিন সকালে উপজেলা সদরে গিয়ে পাইকারদের কাছে খিরা বিক্রি করি।’

তিনি বলেন, ‘চলতি মাস ধরে খিরা বিক্রি করতে পারবো। ফসলটি কৃষকদের কাছে লাভজনক হয়ে উঠছে। এ ছাড়া সরিষা, বোরো ধান, সূর্যমুখী, টমেটো, বেগুন, তরমুজ, শিম, মটরশুটি, লাউ ও কুমড়াসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করেছি।’

Advertisement

আরও পড়ুন

নেত্রকোনায় ২৬ কোটি টাকার চাল কুমড়া বিক্রি হবে রঙিন ফুলকপিতে প্রথমবারেই সফল আলী হোসেন

কৃষক মো. ইসমাইল হোসেনও ১ বিঘা জমিতে খিরা আবাদ করেছেন। প্রতিদিন সকালে খিরা তুলে বাজারে বিক্রি করেন। দিনের বেলায় অন্যান্য ফসলের পরিচর্যা শেষে বিকেলে তিনি খিরার জমি পরিচর্যা করেন। গত বছরও তিনি খিরা চাষ করেছিলেন। কিন্তু বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এবার যে ফলন হয়েছে, তা বাজারে বিক্রি করতে পেরে গতবারের ক্ষতি পুষিয়েও লাভবান হয়েছেন। তিনি খিরা ছাড়াও লাউ, মিষ্টি কুমড়া, করলাসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করেছেন।

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আশরাফ হোসেন পাটোয়ারী বলেন, ‘পূর্ব বড়ধলী এলাকার একরামুল হক শুধু কৃষক নন, তিনি একজন কৃষি উদ্যোক্তা। উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক তাকে বিভিন্ন ধরনের নতুন নতুন ফসল উৎপাদনে পরামর্শ ও সহায়তা করা হচ্ছে। একরামের দেখাদেখি অনেকে খিরাসহ বিভিন্ন ধরনের ফসল চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।’

সোনাগাজী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাইন উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘উপজেলায় এবার প্রায় ২৫৫ হেক্টর জমিতে খিরা চাষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কৃষকেরাও বেশ লাভবান হয়েছেন। সামনে খিরা চাষ আরও বাড়বে। এতে বোঝা যায়, কৃষকেরা নিত্য নতুন কৃষিপ্রযুক্তির সঙ্গে পরিচিত হচ্ছেন।’

Advertisement

আবদুল্লাহ আল-মামুন/এসইউ/জেআইএম