ক্যাম্পাস

নিপীড়নের বিরুদ্ধে জবির সঙ্গে সংহতি জানিয়ে ঢাবিতে বিক্ষোভ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকা হত্যার বিচারের দাবিতে চলমান আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

Advertisement

সোমবার (১৮ মার্চ) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে সমাবেশ করে শিক্ষার্থীরা। এরপর একটি মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করেন তারা।

এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নূজিয়া হাসিন রাশা বলেন, আমরা আজকে এখানে কেন সমাবেশ করছি? অবন্তিকা তার সুইসাইড নোটে স্পষ্ট করে বলে গিয়েছে এটা একটা টেকনিক্যাল মার্ডার। এটা কোন আত্মহত্যা নয়, এটা পরিকল্পিত হত্যা। এই পরিকল্পিত হত্যার দায়টা কার? এই দায় ফ্যাসিবাদী, কর্তৃত্ববাদী পুরুষতান্ত্রিক সিস্টেমের, ক্ষমতা কাঠামোর। এই ক্ষমতা কাঠামোর সঙ্গে জড়িত যারা তারা পরিকল্পিতভাবে ফাইরুজ অবন্তিকাকে হত্যা করেছে।ফাইরুজ অবন্তিকা কয়েক বছর ধরেই যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছেন।

তিনি বলেন, যৌন নির্যাতনের শিকার হওয়ার পরে স্বাভাবিকভাবে একজন শিক্ষার্থী কার কাছে যাবে অভিযোগ নিয়ে? সে গিয়েছিল প্রক্টরের কাছে। এই সহকারী প্রক্টরও তাকে হেনস্তা করেছে। তাকে গালিগালাজ করেছে। ওই নিপীড়কের পক্ষ নিয়েছে। আমরা দেখেছি, আত্মহত্যার ঘটনার পরে পুরো জিনিসটাকে নিয়ে প্রশাসন কীভাবে টালবাহানা করেছে। যখন উপাচার্যকে জিজ্ঞেস করা হলো অভিযোগপত্র কোথায়, তখন প্রক্টর বললো অভিযোগপত্র নিচে পড়ে গেছে, সে এখনো ওটা খুঁজে পায়নি। তাহলে আমরা বুঝি তারা কতটা গুরুত্বহীনভাবে যৌন নিপীড়নের বিষয়টি দেখে। কতটা অবহেলা করে তারা এই বিষয়গুলোকে।

Advertisement

শিক্ষার্থীরা বলেন, সারা দেশজুড়ে যে যৌন নির্যাতনের ঘটনাগুলো ঘটছে এটা প্রমাণ করে যে এগুলো নিছক কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এগুলো ক্ষমতা কাঠামোর সঙ্গে যুক্ত। বিচারহীনতার সংস্কৃতি তৈরীর মাধ্যমে সারাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে যৌন নিপীড়নের আখড়ায় পরিণত করা হয়েছে। মেয়েটিকে যখন প্রক্টর গালিগালাজ করলো, সে আর কোথাও বিচার চাইতে যেতো পারল না। তখন তাকে ফোর্স করা হলো, আত্মহত্যার পথ বেছে নেওয়ার জন্যে। এইরকম নিপীড়নের ঘটনা আমরা সমসাময়িক সময়ে প্রায় প্রত্যেকটা বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখে আসছি।

তারা বলেন, প্রত্যেকটা বিভাগে বিভাগে এমন ঘটনা ঘটে। যার কেবলমাত্র দশ ভাগ আমাদের সামনে আসে। আর বাকিগুলো সামনে আসে না। কেন আসে না? কারণ এগুলো সামনে আসলে এই ভিকটিমদের আরও বেশি হেনস্তার শিকার হতে হয়। এই ধরনের নিপীড়ন, এই ধরনের নির্যাতন যদি বন্ধ করতে হয় তাহলে তাহলে শুধুমাত্র আম্মান সিদ্দিকী আর ওই নিপীড়ক দ্বীন ইসলামের শাস্তি চাওয়ার মাধ্যমেই নয়। আমাদের এই পুরো সিস্টেম, ফ্যাসিবাদী কর্তৃত্ববাদী পুরুষতান্ত্রিক সিস্টেমকে উৎখাত করতে হবে। তা নাহলে নারীমুক্তি সম্ভব না। শিক্ষাঙ্গনে নারীরা শিক্ষার জন্য আসে, মুক্তবুদ্ধি চর্চার জন্যে আসে। সেখানে তাদের যৌন নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে। সেখানে তাদের জীবন দিতে হচ্ছে।

এনএস/এসআইটি/এএসএম

Advertisement