আন্তর্জাতিক

কাশ্মীরে নির্বাচন না দিয়ে ফের একই কারণ দেখালো ভারতের ইসি

ছয় বছর ধরে জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার নেই ভারতের জম্মু-কাশ্মীরে। রাজ্যের মর্যাদা হারানো পর থেকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে পরিচালিত হচ্ছে সেখানকার শাসন ব্যবস্থা। ২০১৯ সালে নিরাপত্তা উদ্বেগের কথা বলে জম্মু-কাশ্মীরে বিধানসভা নির্বাচন পিছিয়ে দিয়েছিল ভারতের নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এবারও সেই একই কারণ দেখিয়ে লোকসভা নির্বাচনের পাশাপাশি বিধানসভা নির্বাচন না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি।

Advertisement

গত শনিবার (১৬ মার্চ) ভারতের লোকসভা ও কয়েকটি রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা করেছেন দেশটির প্রধান নির্বাচন কমিশনার রাজিব কুমার। ১৯ এপ্রিল থেকে শুরু হয়ে সাত দফায় প্রায় দেড় মাস ধরে হবে ভোটগ্রহণ। ফলাফল ঘোষণা হবে ৪ জুন।

আরও পড়ুন>>

ভারতে লোকসভা নির্বাচন শুরু ১৯ এপ্রিল, ফলাফল ৪ জুন কাশ্মীরের ‘উন্নয়ন’ দেখাতে গিয়ে পটুয়াখালীর ছবি ব্যবহার কাশ্মীরে বন্দুকযুদ্ধে ৩ ভারতীয় সেনা নিহত

এদিন দেশজুড়ে লোকসভা নির্বাচনের পাশাপাশি অন্ধ্র প্রদেশ, উড়িষ্যা, অরুণাচল ও সিকিম- এই চারটি রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনেরও দিনক্ষণ ঘোষণা করেছেন সিইসি। তবে তালিকায় ছিল না জম্মু-কাশ্মীরের নাম।

Advertisement

রাজিব কুমার বলেছেন, নিরাপত্তা উদ্বেগের কারণে অঞ্চলটিতে লোকসভা নির্বাচনের সঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন না করানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। ভারতের শীর্ষ নির্বাচনী কর্মকর্তার দাবি, নিরাপত্তা বিবেচনায় একযোগে নির্বাচন করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে জম্মু-কাশ্মীরের প্রশাসন।

তবে সংসদীয় নির্বাচন শেষ হওয়ার পরে এবং পর্যাপ্ত নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যবস্থা হলে সেখানে বিধানসভা নির্বাচন করানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।

আরও পড়ুন>>

জম্মু-কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসন বাতিল বৈধ: ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট ভারতের হারে উল্লাস, কাশ্মীরে গ্রেফতার ৭ শিক্ষার্থী  কাশ্মীরে শান্তি ফিরেছে?

পাঁচ বছর আগে, ২০১৯ সালে ভারতের তৎকালীন প্রধান নির্বাচন কমিশনার সুনিল অরোরাও একই কারণ দেখিয়ে জম্মু-কাশ্মীরে লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচন একসঙ্গে না করানোর কথা বলেছিলেন।

Advertisement

তবে এর কয়েকমাস পরেই নির্বাচন দেওয়ার পরিবর্তে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বিলোপ এবং সেটিকে দু’ভাগ করে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে রূপান্তরিত করে কেন্দ্রীয় সরকার।

এরপর সাবেক রাজ্যটিতে শুরু হয় সীমানা পুনর্নির্ধারণের বিতর্কিত প্রক্রিয়া। এর মধ্য দিয়ে জম্মু-কাশ্মীরের ৯০টি বিধানসভা আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ করে নির্বাচন কমিশন। এ নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে জেরিম্যান্ডারিংয়ের অভিযোগ উঠেছে। কোনো বিশেষ দল বা শ্রেণিকে বাড়তি সুবিধা দেওয়ার লক্ষ্যে সাংবিধানিক সীমানা পুনর্নির্ধারণ করাকে জেরিম্যান্ডারিং বলা হয়।

পরবর্তীতে জম্মু-কাশ্মীর পুনর্গঠন আইনে সংশোধনী এনে সেখানকার লেফটেন্যান্ট গভর্নরকে আঞ্চলিক বিধানসভায় পাঁচজন সদস্য মনোনীত করার ক্ষমতা দেওয়া হয়। এর ফলে বিধানসভার মতামত পরিবর্তনের আরও ক্ষমতা পায় কেন্দ্র। কারণ লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোনীত সদস্যরাও বিধানসভায় ভোটাধিকার পাবেন।

২০২৩ সালের মার্চ মাসে সিইসি রাজিব কুমার বলেছিলেন, জম্মু-কাশ্মীরে একটি ‘শূন্যতা’ রয়েছে, যা পূরণ করা দরকার। তিনি আরও বলেছিলেন, জম্মু ও কাশ্মীরে ভোটার তালিকা সংশোধন নির্বাচন অনুষ্ঠানের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াবে না।

সূত্র: এনডিটিভিকেএএ/