দেশজুড়ে

বেঁধে দেওয়া দামে মিলছে না নির্ধারিত কোনো পণ্য

রাজশাহীতে বেঁধে দেওয়া দামে মিলছে না মাছ-মাংস। প্রভাব পড়েনি আলু-ডালের বাজারেও। ব্যবসায়ীরা বলছেন পাইকারি বাজারে দাম না কমায় নির্ধারিত দামে বিক্রি করতে পারছেন না এসব পণ্য।

Advertisement

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, খুচরা পর্যায়ে বেঁধে দেওয়া ৯৮ টাকার ছোলা বিক্রি হচ্ছে ১১০-১১৫ টাকায়। ১৩০ টাকার মসুর ডাল ১৪০ টাকা, ৯৩ টাকার খেসারি ১৩০ টাকা, ১৬৫ টাকার মুগডাল ১৮০ টাকা, ৬৬৪ টাকা নির্ধারিত গরুর মাংস ৭৫০ টাকা ও এক হাজার ৩ টাকা দামের ছাগলের মাংস বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ১০০ টাকায়।

সরকার নির্ধারিত মাছের মধ্যে চাষের পাঙাশের খুচরা দাম ১৮১ টাকা ও কাতলার সর্বোচ্চ দাম ৩৫৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে এসব মাছে কোনোটি নির্ধারিত দামে বিক্রি হচ্ছে না। প্রতি কেজি পাঙাশ বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকা ও কাতলা বিক্রি হচ্ছে ৪৫০-৫৫০ টাকায়। বাজারে বয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায় ও সোনালি মুরগি ৩১০-৩২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৬৫ টাকা, রসুন ১২০ টাকা ও আদা ১৮০ টাকা। কাঁচামরিচ ৬০ টাকায় খুচরা বাজারে কিনতে পারবেন ক্রেতারা। আদা আগের দামে ২০০ টাকা ও রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়।

Advertisement

সবজির মধ্যে বাঁধাকপি ও ফুলকপি ৩০ টাকা, প্রতি কেজি বেগুন ও শিম ৫০ টাকা ও আলু সাড়ে ২৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া প্রতি কেজি টমেটো ৪০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া ২৪ টাকা খুচরা মূল্য বেঁধে দিয়েছে সরকার। তবে বাজারে এ দামে মেলেনি কিছুই। বাঁধাকপি ও ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকায়, বেগুন ও শিম বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকায়, টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি দরে। মিষ্টিকুমড়া বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকায়।

বাজারে প্রতি কেজি জাহেদি খেজুর ১৫৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে রাজশাহী বাজারে সর্বনিম্ন খেজুর বিক্রি হচ্ছে ৩৫০-৪৫০ টাকা কেজি। সাগর কলার হালি খুচরায় ৩০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে সেটিও বিক্রি হচ্ছে ৩৬-৪০ টাকা হালিতে। এছাড়া চিড়ার খুচরা দাম ৬০ টাকা, বেসন ১২১ টাকা বেঁধে দিয়েছে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর। তবে চিড়া বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা আর বেসন বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৮০ টাকা দরে।

রাজশাহী সাহেব বাজারের মাংস বিক্রেতা জামাল উদ্দিন বলেন, সিটি হাট থেকে গরু কিনি। কিনতে যে টাকা লাগে সেভাবে আমরা বিক্রি করি। ১০ টাকা লাভ হলে ছেড়ে দেই। এখন ৭৫০ টাকা কেজিদরে মাংস বিক্রি করছি। সরকারের বেঁধে যাওয়া দামে বিক্রি করা সম্ভব নয়।

একই বাজারে মুরগি বিক্রেতা জনি হোসেন বলেন, কেনার পরে আমাদের বেচতে হয়। বেশি দামে কিনে কমে বিক্রি করতে পারবো না। কেজিতে ৫-১০ টাকা লাভ হয়। ২০০ টাকা দরে বিক্রি করে আমাদের ১০-১৫ টাকা লাভ হবে।

Advertisement

শহরের মাস্টারপাড়া কাঁচাবাজারে আসা মাসুদ রানা বলেন, সরকার সব দাম কমিয়ে দিয়েছে। কিন্তু এগুলোর কোনো প্রভাব বাজারে পড়েনি। আমার সাধারণ মানুষ, সাধারণ ইনকাম করি। এভাবে দাম বাড়তে থাকলে হিমসিম খেতে হবে আমাদের।

এই বাজরে মুরগি কিনতে আসা সিরাজুল ইসলাম বলেন, বাজারের তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি। সরকার যদি বাজার মনিটরিং করে তবে দাম ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে চলে আসবে বলে মনে করি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী জেলা বাজার মনিটরিং কর্মকর্তা অফ্রিন হোসেনকে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

সাখাওয়াত হোসেন/আরএইচ/জেআইএম