জাতীয়

জিম্মি জাহাজসহ নাবিকদের দ্রুত মুক্ত করার চেষ্টা করছে সরকার

সোমালিয়ার উপকূলে জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ ও নাবিকদের দ্রুত মুক্ত করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে সরকার বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

Advertisement

শুক্রবার (১৫ মার্চ) সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতাদের স্মরণ সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা জানান।

রাঙ্গুনিয়া পৌরসভার অ্যাডভোকেট নুরুচ্ছফা তালুকদার অডিটোরিয়ামে প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা ওয়াকিল আহমদ তালুকদার, সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, কাজী জসিম ও নুরুল করিম বেবি চৌধুরীর স্মরণ সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে উপজেলা আওয়ামী লীগ।

সোমালিয়ার উপকূলে জলদস্যুদের হাতে জিম্মি জাহাজ ও ২৩ নাবিককে উদ্ধারের ব্যাপারে সরকার কী উদ্যোগ নিয়েছে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, দেখুন আমরা সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছি, গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক হয়েছে এবং পিএন্ডআই ক্লাবের মাধ্যমে জাহাজটিকে এবং জাহাজের যারা নাবিক তাদেরকে সুষ্ঠুভাবে মুক্ত করার জন্য সরকার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চলছে।

Advertisement

মন্ত্রী বলেন, তবে আমরা কোন প্রক্রিয়ায় এগোচ্ছি তা বলতে চাই না, কারণ এটি জনসমক্ষে প্রকাশ করার বিষয় নয়। তবে আমাদের প্রচেষ্টা হচ্ছে সম্ভাব্য দ্রুত সময়ের মধ্যে নাবিক এবং জাহাজ দুটোই মুক্ত করা।

ড. হাছান বলেন, আপনারা জানেন, একই কোম্পানির আরেকটি জাহাজ কয়েক বছর আগে ২০১০ সালে হাইজ্যাক হয়েছিল। সেটিকে মুক্ত করতে ১০০ দিন সময় লেগেছিল। আমাদের প্রচেষ্টার কোনো কমতি নেই। আমরা নানাভাবে প্রচেষ্টা চালাচ্ছি, আমরা আশা করছি অতীতের মতো এবারও সম্পূর্ণ সুষ্ঠুভাবে জাহাজ ও নাবিকদের উদ্ধার করতে পারবো।

মিয়ানমারে বিশৃঙ্খলার কারণে আবারও ১৪৯ জন বিজিপি সৈন্য বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ইতিপূর্বেও মিয়ানমারের এ ধরনের কিছু নাগরিক আমাদের দেশে এসেছিল, আমরা তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে তাদের যেভাবে ফেরত পাঠিয়েছি এবারও একই প্রক্রিয়ায় ফেরত পাঠানোর লক্ষ্যে কাজ করছি।

আরও পড়ুন:

Advertisement

জিম্মি জাহাজের ৪ জলদস্যুর ছবি প্রকাশ জিম্মি জাহাজ সরিয়ে নিচ্ছে জলদস্যুরা

এর আগে রাঙ্গুনিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রয়াত নেতাদের স্মরণ সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ খেটে খাওয়া মানুষের দল, গণ মানুষের দল। যাদের স্মরণে আজকের এই স্মরণসভা তারা সবাই রাঙ্গুনিয়ায় আওয়ামী লীগকে দুঃসময়ে সংগঠিত করেছিল। তাদের মতো তৃণমূলের নেতাদের কারণেই আজকে দল রাষ্ট্র ক্ষমতায়। যারা গত ১৫ বছর ধরে দল করছে কিংবা আগে আমাদের দল করেনি তারা কিন্তু দুঃসময়ে এই নেতাদের অবদানের কথা জানে না। বিরোধী দলে থেকে রাজনীতি করার যে যাতনা তা আজকের অনেকেই জানে না। এই সমস্ত নেতার জীবন থেকে আমাদের অনেক কিছুই শেখার আছে।

বর্তমান প্রজন্মের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রাজনীতি হচ্ছে একটি ব্রত। রাজনীতি সমাজে প্রতিষ্ঠা লাভের কিংবা বিত্ত বৈভব অর্জনের সোপান নয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাজনীতিকে ব্রত হিসেবে নিয়েছেন। তিনি ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য রাজনীতি করেননি। বঙ্গবন্ধু যদি ক্ষমতার রাজনীতি করতেন তাহলে আইয়ুব খানও তাকে প্রধানমন্ত্রী হতে বলেছিলেন, তিনি সেটা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি বাঙালিদের মুক্তি চেয়েছিলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা চেয়েছিলেন।

উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবদুল মোনাফ সিকদারের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার শামসুল আলম তালুকদার ও যুগ্ম সম্পাদক ইকবাল হোসেনের যৌথ সঞ্চালনায় স্মরণ সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি (প্রশাসন) ড. মোহাম্মদ সেকান্দর হোসেন চৌধুরী। বক্তব্য রাখেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা স্বজন কুমার তালুকদার, জেলা পরিষদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম চিশতি, রাঙ্গুনিয়া পৌরসভার মেয়র মো. শাহজাহান সিকদার, প্রয়াত নেতাদের পরিবারের পক্ষ থেকে ডা. সুলতান মাহমুদ, ঈসা মোহাম্মদ সিরাজ, কাজী মো. হাশেম, মো. নাসির উদ্দিন প্রমুখ।

ইকবাল হোসেন/এমডিআইএইচ/এসএনআর/এমএস