ফিচার

সৌহার্দ আর সম্প্রীতির ইফতার

ইমন ইসলাম

Advertisement

মাহে রমজানের তৃতীয় সন্ধ্যা। সিনিয়র-জুনিয়র একসঙ্গে ইফতারের আয়োজন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মাঠে। শেষ বিকেলে সবুজ ঘাসের চাদরে বৃত্তাকার হয়ে বসে আছে ১০-১২ জন শিক্ষার্থী। খুব বেশি কিছু নেই, তবুও সবার মনে উচ্ছ্বাস। ছোলা, মুড়ি, পিঁয়াজু, বেগুনি, আলুর চপ আর শরবত। এই সামান্য খাবারেই যেন অপার্থিব আনন্দ।

সবার সামনে একই রকম ইফতারি। ভ্রাতৃত্ববোধ, সৌহার্দ এবং সম্প্রীতির এক অপূর্ব নিদর্শন ইফতারের সময়ের এই দৃশ্য। আজানের অপেক্ষায় সবাই। কেউ কেউ শেষ মুহূর্তে শরবত তৈরিতে ব্যস্ত। কেউ দায়িত্ব নেন ছোলা-মুড়ি মাখানোর।

ঘড়ির দিকে তাকিয়ে ইফতারের ক্ষণ গণনা করছেন অনেকে। সূর্য পশ্চিম দিগন্তে হেলে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় ইফতার। সবার মুখে ফুটে ওঠে তৃপ্তির হাসি। ইফতারের এমন আয়োজন সবার মধ্যে সৌহার্দ তৈরি করে। রমজান মাস, সামাজিক বন্ধন দৃঢ় করার এক অনন্য সুযোগ। ইফতারের সময় খাবার ভাগ করে নেওয়ার মাধ্যমে একে অপরের প্রতি সহানুভূতি ও ভালোবাসায় আবদ্ধ হন।

Advertisement

পবিত্র রমজান মাসে একসঙ্গে ইফতার করার এমন দৃশ্য চোখে পড়ে দেশের প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। আবাসিক হল, খেলার মাঠ, মসজিদ, শহীদ মিনারে একত্রে ইফতার যেন ভুলিয়ে দেয় পরিবারের সঙ্গে ইফতার করতে না পারার কষ্ট। রমজান মাসজুড়ে ক্যাম্পাসে ইফতার আয়োজন থাকে চোখে পড়ার মতো।

আরও পড়ুন

সেহরিতে কী খাবেন?  সেহরিতে যা খাওয়া উচিত নয় 

বন্ধু-সহপাঠীদের আয়োজন ছাড়াও ক্যাম্পাসে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, স্বেচ্ছাসেবী, জেলা ও অঞ্চলভিত্তিক সংগঠন এবং বিভিন্ন বিভাগের পক্ষ থেকে ইফতার পার্টির আয়োজন করা হয়। এভাবে রমজানজুড়ে একের পর এক সংগঠনের ইফতার পার্টি চলতে থাকে।

রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অনন্যা আক্তার অন্তি বলেন, ‘আমি তো মাস্টার্সের শিক্ষার্থী। আগামীকাল ক্যাম্পাস ছেড়ে চলে যাচ্ছি। হতে পারে এটি আমার ভার্সিটি জীবনের শেষ ইফতার। তাই কাছের সব ছোট ভাই-বোনকে সঙ্গে নিয়ে ইফতার করলাম। ক্যাম্পাসকে সব সময় দ্বিতীয় পরিবার বা বাড়ি মনে হয়।’

Advertisement

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী আকিব মাহমুদ বলেন, ‘ক্যাম্পাসে আমার এটাই প্রথম রমজান। সহপাঠী ও সিনিয়রদের সঙ্গে আড্ডামুখর ইফতারে এক ভিন্ন অনুভূতি খুঁজে পেলাম। এ যেন ভ্রাতৃত্বের এক বন্ধন। সবার সঙ্গে ইফতার করে পরিবারের শূন্যতা কিছুক্ষণের জন্য ভুলে গিয়েছি। এরকম সুন্দর দৃশ্য কালের সাক্ষী হয়ে থাকুক।’

লেখক: শিক্ষার্থী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।

এসইউ/জিকেএস