কৃষি ও প্রকৃতি

রাজৈরে বরই চাষে দুই বন্ধু স্বাবলম্বী

মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার বদরপাশা ইউনিয়নের শংকরদী এলাকায় বরই বাগান করে স্বাবলম্বী হয়েছেন সফিকুল ইসলাম (২৭) ও মেহেদী হাসান (২৮)। বলসুন্দরী, ভারতসুন্দরী এবং টক বরই চাষ করে প্রথম বছরেই সাফল্য পেয়েছেন দুই বন্ধু। অদম্য ইচ্ছা ও মনোবল নিয়ে বাগান শুরু করে আজ তারা স্বাবলম্বী। দুই বন্ধুর এ সফলতায় অনেকেই বরই চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।

Advertisement

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শংকরদী এলাকার সফিকুল ইসলাম ও মেহেদী হাসান বার্ষিক চুক্তিতে বরই বাগান শুরু করেন। প্রথমে নিজেদের ও অন্যের জমি লিজ নিয়ে ৫ বিঘা জমিতে বরই চাষ শুরু করেন। তিন জাতের ৫০০ বরই চারা লাগিয়ে বাগান করেন। যশোর থেকে এসব চারা সংগ্রহ করেন। এতে সব মিলিয়ে খরচ হয় প্রায় সাড়ে ৪ লাখ টাকা। মাত্র ৯ মাসের মধ্যেই বাগানের প্রতিটি গাছে প্রচুর বরই ধরে। প্রথম বছরই তারা লাভবান হন।

এরপর তারা ৭ একক জমি বাড়িয়ে মোট ১২ একর জমিতে বরই চাষ করেন। আপেলের মতো দেখতে লাল টুকটুকে বড় বড় বরই শোভা পাচ্ছে বাগানে। প্রচুর বরই ধরায় বাগানটি নেট দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে বাগানের গাছ থেকে বরই তুলে বিক্রি করা হচ্ছে। ৪ হাজার টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে। উদ্যোক্তারা আশা করছেন, চলতি মৌসুমে ৬০০ মণ বরই বিক্রি করবেন।

আরও পড়ুন

Advertisement

বরই চাষে সফল মিরসরাইয়ের মুসলিম  সুগন্ধি লেবু চাষে সফল শার্শার জাহাঙ্গীর 

উদ্যোক্তা সফিকুল ইসলাম বলেন, ‘দুই বন্ধু মিলে কিছু করবো, এমন চিন্তায় ১২ বিঘা জমির ওপর বরই বাগান গড়েছি। চাষাবাদে জৈব সার ও মালচিং পদ্ধতি ব্যবহার করেছি। যে কারণে ভালো ফলন দেখা যাচ্ছে। এখানে ২ জন শ্রমিক স্থায়ীভাবে এবং অস্থায়ীভাবে মজুরিতে আরও ৪-৫ জন কাজ করছেন। এ বছর বরই বিক্রি করে ৮-১০ লাখ টাকা লাভের আশা করছি। এরপর কৃষি জমিতে বাগান বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছি।’

উদ্যোক্তা মেহেদী হাসান বলেন, ‘শিক্ষিত বেকার যুবকরা যদি ঘরে বসে না থেকে বাগান করেন, তবে তারাও স্বাবলম্বী হতে পারবেন। আমি প্রবাসে ছিলাম। দেশে আসার আগেই বন্ধুর সঙ্গে বরই বাগান করার পরিকল্পনা করি। দেশে এসে বাগান করে সফলতা পেয়েছি। এমনকি আমাদের দেখাদেখি অনেকেই বরই বাগান শুরু করেছেন। আমাদের কাছে এলে পরামর্শ ও সহযোগিতা দিয়ে থাকি।’

মাদারীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. সন্তোষ চন্দ্র চন্দ বলেন, ‘কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে বরই বাগানের উদ্যোক্তা দুই বন্ধুকে ধন্যবাদ জানাই। আমরা উদ্যোক্তাদের মাঠ পর্যায়ে সব ধরনের পরামর্শ ও সহযোগিতা দিচ্ছি। জানতে পেরেছি, তারা বরই বিক্রি করে এক মৌসুমেই অনেক টাকা আয় করতে পারবেন। আশা করছি, তাদের দেখে অন্যরাও বরই চাষে এগিয়ে আসবেন।’

আয়শা সিদ্দিকা আকাশী/এসইউ/জিকেএস

Advertisement