ভূমধ্যসাগরে একটি ছোট রাবারের ডিঙিতে থাকা ৬০ অভিবাসনপ্রত্যাশীর মৃত্যুর হয়েছে। জীবিত উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিরা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এখন পর্যন্ত ২৫ জনকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। সমুদ্রে নিয়োজিত ইউরোপীয় মানবিক সংস্থা এসওএস মেডিটারেনের একটি জাহাজ ওই অভিবাসনপ্রত্যাশীদের উদ্ধার করেছে।
Advertisement
উদ্ধার হওয়া লোকজন জানিয়েছে, তারা বেশ কয়েক দিন আগে লিবিয়ার জাওইয়া উপকূল থেকে রওনা হয়েছিল। কিন্তু তারা যাত্রা করার তিনদিন পরেই রাবারের ডিঙি নৌকাটির ইঞ্জিন অকেজো হয়ে যায়। ফলে বেশ কয়েকদিন ধরে তারা খাবার এবং পানির অভাবে দিন কাটিয়েছেন।
তারা জানান, যারা প্রাণ হারিয়েছেন তাদের মধ্যে নারী এবং কমপক্ষে এক শিশু রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, তারা নৌকা ডুবে যাওয়ার কারণে নয় বরং, পানিশূন্যতা এবং খাবারের অভাবে মারা গেছেন।
এসওএস মেডিটারেন জানিয়েছে, ওসেন ভিকিং টিম ওই নৌকাটিকে শনাক্ত করতে পেরেছে। গত শুক্রবার এটি যাত্রা শুরু করে। দূরবীনের সাহায্যে গত বুধবার ওই ছোট নৌকাটি শনাক্ত করা সম্ভব হয়। পরবর্তীতে ইতালীয় কোস্টগার্ডের সঙ্গে সমন্বয় করে তারা অভিবাসীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।
Advertisement
সংস্থাটি জানিয়েছে, উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিরা শারীরিক ভাবে খুবই দুর্বল হয়ে পড়েছিলেন। তাদের সবাইকে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। এদের মধ্যে দুজন জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন এবং তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য হেলিকপ্টারে করে সিসিলিতে নেওয়া হয়েছে।
বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, নৌকার ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রায় এক সপ্তাহ ধরে তারা সাগরে পথ হারিয়ে দুর্দশার মধ্যে পড়ে যায়। নৌকায় খাবার এবং পানিও খুব দ্রুত শেষ হয়ে যায়।
জীবিত উদ্ধার হওয়া এক ব্যক্তি বলেন, যাত্রা পথেই লোকজনের মৃত্যু হয়েছে। আমার এক ব্যক্তির সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছিল যিনি তার স্ত্রী এবং দেড় বছরের সন্তানকে হারিয়েছেন। প্রথমে শিশুটির মৃত্যু হয়। এরপরেই শিশুটির মায়ের মৃত্যু হয়। তারা সেনেগাল থেকে এসেছেন এবং লিবিয়ায় দুই বছরের বেশি সময় ধরে ছিলেন। আরও দুটি নৌকা থেকেও দুই শতাধিক অভিবাসনপ্রত্যাশীকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে বলেও জানানো হয়।
আরও পড়ুন:
Advertisement
ইন্টারন্যাশনাল অর্গ্যানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন (আইওএম) গত সপ্তাহে জানিয়েছে যে, এক দশক ধরে রেকর্ড শুরু হওয়ার পর থেকে ২০২৩ সাল অভিবাসীদের জন্য সবচেয়ে মারাত্মক বছর ছিল। গত বছর বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন অভিবাসন রুটে কমপক্ষে ৮ হাজার ৫৬৫ জন মারা গেছে। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থাটি বলছে, আগের বছরের তুলনায় এই হার ২০ শতাংশ বেশি।
টিটিএন