খেলাধুলা

‘আমার সাথে একটু কথা বলতে চেয়েছিল রাজিয়া, দেয়নি তার মা’

দুইজনই ফুটবলার। সন্তান জন্ম দিয়ে বৃহস্পতিবার ভোরে মারা যাওয়া নারী ফুটবলার রাজিয়া সুলতানা খেলেছেন জাতীয় বয়সভিত্তিক দলে। সাফ অনূর্ধ্ব-১৮ চ্যাম্পিয়ন দলের গর্বিত সদস্যও ছিলেন তিনি। তার স্বামী ইয়াম রহমান খেলেছেন বিভিন্ন বয়সভিত্তিক দলে। ফুটবলার হিসেবেই বাফুফে ভবন সংলগ্ন টার্ফে তাদের পরিচয়। তারপর দেড় বছর প্রেম করে ২০২০ সালের ১০ সেপ্টেম্বর বিয়ে করেন তারা। রাজিয়ার অকাল মৃত্যু সবকিছু শেষ করে দিয়েছেন ইয়ামের।

Advertisement

স্ত্রী মারা যাওয়ার জন্য তিনি রাজিয়ার মা ও তার ভাইর অবহেলাকে দায়ী করেছেন। বৃহস্পতিবার রাতে সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ থেকে জাগো নিউজকে বলছিলেন, 'বিকেলে রাজিয়ার দাফন শেষ করে এখনো কবরের পাশে বসে আছি। কি থেকে কী হয়ে গেলো। আমার স্ত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে হয়তো সে বেঁচে যেতো। কিন্তু তাকে নেওয়া হয়নি। আমি এখানে এসে শুনলাম, রাজিয়া আমার সাথে একটু কথা বলার জন্য তার মাকে অনুরোধ করেছিল ফোনে ধরিয়ে দিতে। তার মা সেটাও দেয়নি। আমি স্থানীয় চেয়ারম্যান, মেম্বারের কাছে এর বিচার চেয়েছি। তারা আগামীকাল (শনিবার) বসবে বলে জানিয়েছেন।'

ইয়াম রহমান এখন তার শিশু সন্তানের ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তিত। কী করবেন বুঝে উঠতে পারছেন না। তবে তার এক ভাই থাকেন বগুড়ায়। সেই ভাইয়ের স্ত্রী নাকি জানিয়েছেন বাচ্চাটা লালন-পালনের দায়িত্ব নেবেন, 'আমার বাড়ি চট্টগ্রামে। মা আসতেছেন। তিনি এখন পথে। তিনি আসলেই শিশু সন্তানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি বাচ্চাকে আমার ভাবীর কাছে বগুড়ায় দিয়ে আসবো।'

রাজিয়া সুলতানা ২০১৫ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত জাতীয় বিভিন্ন বয়সভিত্তিক ফুটবল দলে খেলেছেন। ২০১৮ সালে সাফ জেতা অনূর্ধ্ব-১৮ দলের সদস্যও ছিলেন তিনি। জাতীয় দলেও ডাক পেয়েছিলেন।

Advertisement

মা হওয়ার পরও ফুটবল খেলা চালিয়ে যেতে চেয়েছিলেন রাজিয়া। 'গত বছর জাতীয় দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুন যে টুর্নামেন্ট আয়োজন করেছিল তখন সে খেলেছে এবং ওই সময়ই আমাকে সুংসংবাদ দিয়েছিল- 'আমি বাবা হতে চলেছি।' তখন রাজিয়া বলেছিল তার ফুটবল খেলার কী হবে। আমি তাকে বলেছিলাম, বাচ্চা হওয়ার পর আবার খেলবা। এখন নিজেই সবকিছু থেকে বিদায় নিয়ে চলে গেলো'-আক্ষেপ নিয়ে বলছিলেন রাজিয়া সুলতানার স্বামী ইয়াম রহমান।

আরআই/এমএমআর/জিকেএস