আন্তর্জাতিক

‘এমভি আবদুল্লাহকে’ অনুসরণ করছে ইইউয়ের যুদ্ধজাহাজ

ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুদের জিম্মি করা বাংলাদেশের পণ্যবাহী জাহাজ ‘এমভি আবদুল্লাহ’কে ট্র্যাক করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সামুদ্রিক নিরাপত্তা বাহিনী বা ইইউ নেভাল ফোর্স। বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) এক বিবৃতিতে ইইউ নেভাল ফোর্স জানায়, তাদের একটি যুদ্ধজাহাজ বাংলাদেশি জাহাজটি ছায়ার মতো অনুসরণ করছে।

Advertisement

এর আগে মঙ্গলবার (১২ মার্চ) দুপুরে মোজাম্বিক থেকে ৫৫ হাজার টন কয়লা নিয়ে আরব আমিরাত যাওয়ার পথে ভারত মহাসাগরের সোমালি উপকূল থেকে ২৩ জন নাবিকসহ এমভি আবদুল্লাহর নিয়ন্ত্রণ নেয় জলদস্যুর। সাগরের যে এলাকায় জলদস্যুরা জাহাজটির দখল নিয়েছে, সেটি সোমালিয়ার রাজধানী মোগাদিসু থেকে ৪৫০ নটিক্যাল মাইল (১ হাজার ১০০ কিলোমিটার) দূরে।

আরও পড়ুন: 

বাংলাদেশি জাহাজটি এখন সোমালিয়ার গারাকাড উপকূলে মুক্তিপণ না দিলে সবাইকে হত্যা করে সমুদ্রে ফেলে দেওয়ার হুমকি বাংলাদেশি নাবিকদের উদ্ধারের চেষ্টা, গুলি বিনিময়

বিবৃতিতে ইইউয়ের নৌবাহিনী বলেছে, অপারেশন আটলান্টার অংশ হিসেবে মোতায়েন করা ইইউয়ের একটি যুদ্ধজাহাজ ওই জাহাজটি ছায়ার মতো অনুসরণ করছে। জলদস্যুরা ওই জাহাজের ২৩ জন ক্রুকে আটকে জিম্মি করেছে। আটক জিম্মিরা নিরাপদ আছে, জাহাজটি সোমালিয়ার উপকূলের দিকে যাচ্ছে।

Advertisement

তাছাড়া ইইউয়ের নৌবাহিনী বাংলাদেশ ও সোমালি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে। পাশাপাশি ভারত মহাসাগরের ওই এলাকার নিরাপত্তায় থাকা ভারতীয় নৌবাহিনীসহ অন্য আঞ্চলিক বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে সবচেয়ে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার চেষ্টা করছে তারা।

ব্রিটিশ মেরিটাইম সিকিউরিটি কোম্পানি অ্যামব্রে জানিয়েছে, মোজাম্বিকের রাজধানী মাপুতো থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের হামরিয়া যাওয়ার সময় সশস্ত্র হামলাকারীরা জাহাজটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়।

আরও পড়ুন: 

কোরবানির ঈদে বাড়িতে ফেরার কথা ছিল নাবিক আলীর নাবিক রাজুর বাড়িতে কান্নার রোল, বাড়ছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা জিম্মি নাবিকদের সুস্থ ফেরত আনতে আমরা বদ্ধপরিকর

বাংলাদেশের স্থানীয় গণমাধ্যমকে কোম্পানির মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম বলেন, জাহাজটির মালিক বাংলাদেশি কোম্পানি এসআর শিপিং লাইনস। এটি চট্টগ্রামভিত্তিক কবির স্টিল অ্যান্ড রিরোলিং মিল গ্রুপের একটি সহযোগী সংস্থা।

Advertisement

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স সচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলম বলেন, জাহাজ দখল করা জলদস্যুদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। কারণ আমাদের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ করার কথা থাকলেও, তারা এখনো কোনো সাড়া দেয়নি।

‘যাদের সঙ্গে যোগাযোগ হচ্ছে তারা হলো বিভিন্ন দেশের অফিসিয়াল। ওখানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের জাহাজ আছে, তার ২০ মাইল দূরেই রয়েছে আমাদের দুটি জাহাজ। সেই জাহাজের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ আছে।’

আরও পড়ুন: 

টাকা না দিলে মেরে ফেলবে, শুনে মূর্ছা যাচ্ছেন অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী বাংলাদেশি জাহাজটি সোমালিয়া উপকূলে, দায়িত্ব নেবে অন্য জলদস্যুরা একমাত্র ছেলের জন্য কেঁদেই চলেছেন বাবা-মা, বন্ধ খাওয়া-দাওয়া

সচিব আরও বলেন, ২০০১ সাল থেকে ওই রুটে অন্তত ৩০০-৪০০ জাহাজ জলদস্যুদের কবলে পড়েছে। বড় বড় দেশের জাহাজও অপহরণ করা হয়েছে। সবাই যে উপায়ে শান্তিপূর্ণভাবে তাদের জাহাজ ছাড়িয়ে এনেছে আমরাও আমাদের ক্রুদের অক্ষত রেখে, জাহাজটি ছাড়িয়ে আনার চেষ্টা অব্যাহত রাখবো।

সোমালিয়া উপকূলে একসময় ব্যাপক জলদস্যুতা ছিল। ২০১১ সালের পর কমতে শুরু করে। তবে সম্প্রতি আবারও জলদস্যুতার ঘটনা উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে।

সূত্র: ইউরোপীয় ইউনিয়ন নেভাল ফোর্স অপারেশন আটলান্টা

এসএএইচ