বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহকে সোমালিয়া উপকূলে নিয়ে যাচ্ছে জলদস্যুরা। বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে জাহাজটি ভারত মহাসাগর থেকে সোমালিয়া নিয়ে যাওয়ার কাজ শুরু করে তারা। এরপর থেকেই জাহাজে অবস্থানরত নাবিকদের ইন্টারনেট কানেকশন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।
Advertisement
এমনকি নাবিকদের সবার কাছ থেকে মোবাইল নিয়ে গেছে জলদস্যুরা। এরমধ্যে একজন লুকিয়ে রাখা মোবাইলে বলেন, ‘আমাদের জাহাজ সোমালিয়ার দিকে যাচ্ছে। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন। ৬০০ নটিক্যাল মাইল যেতে তিনদিন লাগবে। সেখানে জলদস্যুদের প্রধানরা আসবে।’
জাহাজটিতে থাকা এক ইলেকট্রেশিয়ান জাগো নিউজকে জানান, তাদের একটি রুমে বন্দি করে রাখা হয়েছে। এরই মধ্যে জলদস্যুদের একটি বোট তোলা হয়েছে জাহাজে। অপর বোটে জলদস্যুদের একটি দল চলে গেছে।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে পরিবারকে পাঠানো নাবিকদের বেশ কয়েকটি ভয়েস মেসেজ জাগো নিউজের হাতে এসেছে।
Advertisement
আরও পড়ুন
সোমালিয়ান জলদস্যুদের দখলে বাংলাদেশি জাহাজ, ২৩ নাবিক জিম্মিবিকেল ৫টা ৩২ মিনিটে পাঠানো ভয়েস মেসেজে একজন বলেন, ‘আমাদের জন্য দোয়া করিও। সোমালিয়ার জলদস্যুরা অ্যাটাক করেছে। অলরেডি আমরা অ্যারেস্টেড। আমাদের এক জায়গায় বন্দি করে রাখছে। মনে হচ্ছে নিয়ে যাবে আমাদের। ওরা বোট উঠিয় ফেলছে অলরেডি।’
মঙ্গলবার দুপুরে দেশের শীর্ষ শিল্প গ্রুপ কেএসআরএমের মালিকানাধীন এসআর শিপিংয়ের জাহাজ এমভি আবদুল্লাহকে জিম্মি করে সোমালিয়ান দস্যুরা। জাহাজে নাবিক ও ক্রুসহ ২৩ জন বাংলাদেশি রয়েছেন।
এর আগে জাহাজে থাকা নাবিকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিল এমন একটি সূত্র জাগো নিউজকে জানিয়েছিল, জাহাজে আনুমানিক ৫০ জন সশস্ত্র জলদস্যু অবস্থান করছে।
Advertisement
এর আগে বিকেলে এসআর শিপিংয়ের সিইও মেহেরুল করিম জানান, বিকেল ৫টা নাগাদ জাহাজটি উপকূল থেকে ৪৫০ নটিক্যাল মাইল দূরে অবস্থান করছিল। জাহাজে সবাই নিরাপদ আছে বলে জানা গেছে।
আরও পড়ুন: চাঁদাবাজি-ডাকাতি মোশাররফ বাহিনীর নেশা, বাধা পেলেই খুন
তিনি বলেন, ‘আমরা সব ধরনের প্রোটোকল অনুসরণ করে সব ক্রুকে উদ্ধারে কাজ করছি।’
বৈশ্বিক জাহাজের অবস্থান নির্ণয়কারী সাইট মেরিন ট্রাফিক জানিয়েছে, বাংলাদেশি জাহাজটি একটি বাল্ক কেরিয়ার। এর দৈর্ঘ্য ১৮৯ দশমিক ৯৩ মিটার এবং প্রসস্থতা ৩২ দশমিক ২৬ মিটার। জাহাজটি ৪ মার্চ আফ্রিকার মোজাম্বিকের মাপুটো বন্দর ছেড়ে আসে। ১৯ মার্চ মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতের হামরিয়াহ বন্দরে পৌঁছানোর কথা ছিল।
প্রথমে জাহাজটির নাম ছিল ‘গোল্ডেন হক’। বাংলাদেশের কেএসআরএম গ্রুপের বহরে যুক্ত হওয়ার পর এর নাম হয় ‘এমভি আবদুল্লাহ’।
এএজেড/জেডএইচ/এমএস