আন্তর্জাতিক

নির্বাচনের আগে কেন সিএএ কার্যকর করলো মোদী সরকার?

অবশেষে বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধন আইন (সিএএ) কার্যকরের ঘোষণা দিলো ভারত সরকার। এই আইনে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান থেকে যাওয়া অমুসলিমরা ভারতের নাগরিকত্ব লাভের সুযোগ পাবেন। তবে মুসলিম অভিবাসী বা শরণার্থীদের জন্য এই কোনো সুযোগ থাকছে না। এ কারণে আইনটিকে মুসলিমবিরোধী বলে মনে করেন অনেকে।

Advertisement

২০১৯ সালে ভারতীয় পার্লামেন্টে পাস হয়েছিল বিতর্কিত এই আইন। এ নিয়ে ব্যাপক বিক্ষোভ-সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে দেশটিতে, মারা যান বহু মানুষ। গ্রেফতার করা হয় হাজার হাজার বিক্ষোভকারীকে।

আরও পড়ুন>>

সিএএ মুসলিমদের জন্য ব্যাপক বঞ্চনা তৈরি করবে: যুক্তরাষ্ট্র সারা দুনিয়া চাপ দিলেও সিএএ থেকে সরবো না: মোদী অবশেষে ‘বিতর্কিত’ নাগরিকত্ব আইন কার্যকর করলো মোদী সরকার

ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মতে, অস্থিরতার জন্য এই আইন তৈরি করা হয়নি। গত সোমবার (১১ মার্চ) সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সের এক পোস্টে তিনি বলেন, মোদী সরকার আজ নাগরিকত্ব সংশোধনী বিধিমালা, ২০২৪ জারি করেছে।

Advertisement

অমিত শাহ বলেন, এই আইনে এখন থেকে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে ধর্মীয় ভিত্তিতে নির্যাতিত (হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি এবং খ্রিস্টান) সংখ্যালঘুরা ভারতের নাগরিকত্ব পেতে সক্ষম হবেন। এর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আরও একটি প্রতিশ্রুতি পূরণ করলেন।

The Modi government today notified the Citizenship (Amendment) Rules, 2024.These rules will now enable minorities persecuted on religious grounds in Pakistan, Bangladesh and Afghanistan to acquire citizenship in our nation.With this notification PM Shri @narendramodi Ji has…

— Amit Shah (Modi Ka Parivar) (@AmitShah) March 11, 2024

এ বছরের সাধারণ নির্বাচনের দৌড়ে মোদীর নেতৃত্বাধীন হিন্দুত্ব জাতীয়তাবাদী দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) প্রধান নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিগুলোর মধ্যে একটি হলো সিএএ বাস্তবায়ন।

৬৪ বছরের পুরোনো ভারতীয় নাগরিকত্ব আইন অনুসারে, অবৈধ অভিবাসীরা ভারতের নাগরিক হতে পারেন না। সেই আইনটিতে সংশোধন এনে কেবল অমুসলিমদের নাগরিকত্ব দেওয়ার নিয়ম করেছে বিজেপি সরকার।

Advertisement

আরও পড়ুন>>

সিএএ-এনআরসিবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল মুম্বাই ইইউতে সিএএ বিরোধী প্রস্তাবে পাকিস্তানকে ‘সন্দেহ’ ভারতের সিএএর বিরুদ্ধে স্থগিতাদেশ দিতে অস্বীকৃতি ভারতের সুপ্রিম কোর্টের

নতুন আইনে নাগরিকত্ব চাওয়া ব্যক্তিদের প্রমাণ করতে হবে, তারা ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে বাংলাদেশ, পাকিস্তান বা আফগানিস্তান থেকে ভারতে গেছেন।

Ministry of Home Affairs (MHA) will be notifying today, the Rules under the Citizenship (Amendment) Act, 2019 (CAA-2019). These rules, called the Citizenship (Amendment) Rules, 2024 will enable the persons eligible under CAA-2019 to apply for grant of Indian citizenship. (1/2)

— Spokesperson, Ministry of Home Affairs (@PIBHomeAffairs) March 11, 2024

সমালোচকরা বলছেন, সিএএ ভারতীয় সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষ নীতির পরিপন্থি। ভারতের সংবিধানে ধর্মীয় ভিত্তিতে নাগরিকদের মধ্যে বৈষম্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

আরও পড়ুন>>

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে মোদীকে চ্যালেঞ্জ মমতার বাংলাদেশ-পাকিস্তান-আফগানিস্তানের অমুসলিমদের নাগরিকত্ব দেবে ভারত

উদাহরণস্বরূপ, অমুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোতে নিপীড়নের শিকার হয়ে পালিয়ে যাওয়া ব্যক্তিরা ভারতের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের সুবিধা পাবেন না; যেমন- শ্রীলঙ্কা থেকে যাওয়া তামিল শরণার্থীরা। প্রতিবেশী মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিম শরণার্থীরাও এই সুযোগ থেকে বঞ্চিত।

সিএএ-বিরোধীদের আশঙ্কা, নতুন আইনটি প্রস্তাবিত জাতীয় নাগরিকপঞ্জির (এনআরসি) সঙ্গে একযোগে ব্যবহার করা হলে তা ভারতে বসবাসকারী ২০ কোটি মুসলিমের ওপর নিপীড়নের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হতে পারে।

সূত্র: বিবিসি, এনডিটিভিকেএএ/