দেশজুড়ে

নামাজ নিশ্চিতে ভোলার ব্যবসায়ীদের ব্যতিক্রমী উদ্যোগ

ভোলায় মসজিদ থেকে আসছে আজানের ধ্বনি। সঙ্গে সঙ্গে প্রতিষ্ঠানের বেচা-বিক্রি বন্ধ করে পাঁচ মিনিটের মধ্যেই নামাজ আদায় করতে মসজিদে ছুটছেন ব্যবসায়ীরা। ভোলার বোরহানউদ্দিন বাজারের চিত্র এটি। নামাজ আদায়ে ব্যতিক্রমী এমন উদ্যোগ নিয়েছেন বাজারের ব্যবসায়ীরা। তাদের দেখাদেখি অন্যান্য এলাকাগুলোতেও শুরু হয়েছে এমন উদ্যোগ।

Advertisement

সরেজমিনে গিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, প্রতিদিন সকাল থেকেই দোকান-পাট খুলে বেচা-বিক্রিতে ব্যস্ত সময় পার করেন ভোলার বোরহানউদ্দিন পৌর শহরের বাজারের ব্যবসায়ীরা। ঘড়ির কাটায় দুপুর ১২টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত চলে জম-জমাট বেচা-বিক্রি। এরপর মসজিদ থেকে আজানের ধ্বনি আসার সঙ্গে সঙ্গে বেচা-বিক্রি থামিয়ে একে একে দোকান-পাট বন্ধ করতে শুরু করেন ব্যবসায়ীরা। দলে দলে নামাজ আদায় করতে ছোটেন মসজিদে। ভেতরে প্রবেশ করেই লাইন দিয়ে করে নেন অজু। এরপর সবাই একসঙ্গে নামাজ আদায় করেন।

ওই বাজারের ব্যবসায়ী মো. হাসান মোল্লা, মাহামুদুল হাসান সুমন ও মো. শুভ জানান, আগে নামাজের সময় দোকান-পাট খোলা থাকতো। কোনো প্রতিষ্ঠানের মালিক মসজিদে নামাজ পড়তে গেলে কর্মচারীরা দোকানে বসে বেচা-বিক্রি করতেন। আবার অনেক সময় মালিকরা দোকানে থাকলেও কর্মচারীরা নামাজ পড়তে যেতেন। এতে করে মালিক ও কর্মচারী উভয়ই জামাতে নামাজ আদায় থেকে বঞ্চিত হতেন। তাই ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে সবার নামাজ নিশ্চিত করতে আমরা বোরহানউদ্দিন বাজারের ব্যবসায়ীরা একত্রিত হয়ে সিদ্ধান্ত নিই নামাজের সময় দোকান-পাট বন্ধ করে মালিক ও কর্মচারী উভয়ই নামাজ আদায় করতে মসজিদে যাবো। নামাজ শেষে আবারও দোকান খোলা হবে।

তারা আরও জানান, নামাজের সময় দোকান পাট খোলা রেখে সনাতনসহ অন্যান্য ধর্মালম্বীর ব্যবসায়ীরা বেচা-বিক্রি করে থাকেন। তাদের জন্য কোনো প্রকার বাধা নেই।

Advertisement

ব্যবসায়ী তামিন হোসেন, মো. সাদ্দাম হোসেন ও মো. শাকিল জানান, বোরহানউদ্দিন বাজারে ছোট-বড় মিলে ব্যবসায়ী রয়েছেন প্রায় ৩ হাজারের মতো। বাজারের ব্যবসায়ীদের নামাজ আদায়ের এমন উদ্যোগ দেখে বোরহানউদ্দিন উপজেলার বোরহানগঞ্জ, খাসমহল, কুঞ্জেরহাটসহ বেশ কয়েকটি এলাকাতেও এমন নিয়ম চলছে।

স্থানীয় গোলাম মাহমুদ শাওন ও আব্দুল খালেক জানান, বোরহানউদ্দিন বাজার ব্যবসায়ীদের এমন ব্যতিক্রমী উদ্যোগ খুবই প্রশংসনীয়। তাদের এই উদ্যোগ আজীবন চলমান রাখারও দাবি তাদের।

বোরহানউদ্দিন বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ঈমাম ও খতিব মাওলানা মো. মিজানুর রহমান জানান, আগে মসজিদে নামাজ পড়তে তেমন সংখ্যক ব্যবসায়ী আসতেন না। এমন উদ্যোগ নেওয়ার পর থেকেই সব ব্যবসায়ীরা মসজিদে নামাজ পড়ছেন। এতে মসজিদ নামাজের সময় পরিপূর্ণ থাকে।

বোরহানউদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহিন ফকির জানান, দোকান-পাট বন্ধ করে মসজিদে নামাজ আদায়ের সময় যাতে কোনো প্রকার চুরি বা ডাকাতির ঘটনা না হয় সেজন্য ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে নামাজের সময় পুলিশি টহলের জন্য দাবি করেছেন। আমরা নামাজকালীন সময় পুলিশের টহল রেখেছি।

Advertisement

এফএ/জেআইএম