জাতীয়

‘স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী হতে নিজেদের আয় বাড়াতে হবে’

স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, ‘স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রকৃত অর্থে শক্তিশালী হতে হলে তাদের আয়বর্ধন করতে হবে এবং সেখান থেকে নিজস্ব ব্যয় নিজেদের বহন করতে হবে। স্থানীয় উৎস থেকে অর্থ আহরণ করতে হবে।’

Advertisement

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) ষষ্ঠ নির্বাচিত পরিষদের তৃতীয় বর্ষপূর্তি উপলক্ষে শনিবার (৯ মার্চ) দুপুরে আয়োজিত সুধী সমাবেশে এ কথা বলেন মন্ত্রী। নগরীর পাঁচলাইশে কিং অব চিটাগাং ক্লাবে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

তাজুল ইসলাম বলেন, ‘স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর সেবায় নাগরিক আশ্বস্ত হলে টাকা দিতে দ্বিধাবোধ করবেন না। বেনিফিট পেলে আপনি যখন রেভিনিউ চার্জ করবেন, তখন তিনি দ্বিমত করবেন না।

তিনি বলেন, ‘আমাদের মধ্যে স্থানীয় সরকার শক্তিশালী করা নিয়ে ভুল অর্থ ও ব্যাখা দেওয়া হয়। এমনভাবে ব্যাখা করা হয় যে, স্থানীয় সরকার শক্তিশালী করার অর্থ হচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার বেশি টাকা বরাদ্দ দেবে। এটা কোনোভাবেই নয়।’

Advertisement

‘প্রকল্প অনুমোদন এবং অর্থ বরাদ্দ দেবে সরকার, ঠিক আছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার এসে সেটা বাস্তবায়ন করে দেবে না। সেটা বাস্তবায়ন ও সুফল ভোগের উপযোগী করার দায়িত্ব স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানকে নিতে হবে,’- স্থানীয় সরকারমন্ত্রী।

এসময় কাজের মান এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিতে চসিককে সব সড়কের ডিজিটাল নথি নম্বর নির্ধারণের তাগিদ তেন মন্ত্রী।

মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, প্রতিটি রাস্তার আইডি নম্বর থাকতে হবে। তাহলে আমার অফিস আপডেট থাকবে যে, এ রাস্তা কতদিন আগে নির্মাণ করা হয়েছে এবং আবার কতদিন পরে নির্মাণ করতে হবে। তাহলে এ সুবিধাটা হবে যে, বাজেটের ব্যবস্থাটা রাখতে পারবেন, একই রাস্তা বারবার নির্মাণ করার সুযোগ থাকবে না, কোনোভাবে ডিমলিউশনের সুযোগ থাকবে না এবং মেলপ্র্যাকটিস বন্ধ হবে।’

এসময় চট্টগ্রাম নগরের নিউমার্কেট, ইপিজেড ও বহদ্দারহাটে আন্ডারপাস নির্মাণের জন্য প্রিলিমিনারি স্টাডি করে মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদনসহ প্রকল্প প্রস্তাবনা দাখিলের নির্দেশ দেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী।

Advertisement

সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে চসিক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘বিগত সময়ে চেয়ে আমরা ২৫ কোটি টাকা বেশি হোল্ডিং ট্যাক্স এবার আদায় করেছি। আড়াই হাজার কোটি টাকার প্রকল্প আমরা পেয়েছি, এটা প্রধানমন্ত্রীকে আপনি (মন্ত্রী) বোঝাতে সক্ষম হয়েছেন বলেই পেয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রামের কোনো সমস্যা নিয়ে আমরা গেলে আপনি নিরাশ করেন না। চট্টগ্রামের সব সমস্যা আপনি অবগত আছেন।’

চসিকের সাবেক মেয়র মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস আছে। একটা সময় সিটি করপোরেশনে অফিশিয়াল কাউন্সিলর ছিল। এ অফিশিয়াল কাউন্সিলর হতো বন্দরের চেয়ারম্যান, ওয়াসার চেয়ারম্যান, সিডিএর চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন সরকারি সংস্থার প্রধান কর্মকর্তারা। তাদের সিটি করপোরেশনের কাছে জবাবদিহি করতে হতো। বিএনপি সরকার ১৯৯১ সালে ক্ষমতায় এসে সেটা বিলুপ্ত করে দেয়। আমার দাবি, আবারও সে অফিশিয়াল কাউন্সিলর ব্যবস্থা চালু করা হোক।’

সমাবেশে আরও বক্তব্য সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফ, আবদুচ ছালাম ও মহিউদ্দিন বাচ্চু, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. শের আলী, বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের সহকারী হাইকমিশনার রাজীব রঞ্জন, চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মো. তৌহিদুল ইসলাম, প্যানেল মেয়র আফরোজা কালাম, মো. গিয়াস উদ্দিন ও আবদুস সবুর লিটন এবং নগর পরিকল্পনাবিদ দেলোয়ার মজুমদার।

এএজেড/এমএএইচ/জেআইএম