ক্যাম্পাস

দুই শিক্ষকের বিচার দাবিতে উত্তাল নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়

ছাত্রীকে মেসেঞ্জারে অশ্লীল ভিডিও লিঙ্ক পাঠিয়ে যৌন নিপীড়ন ও হেনস্তার অভিযোগে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষক সাজন সাহা এবং বিভাগীয় প্রধান রেজুয়ান আহমেদ শুভ্রর বিচার দাবিতে উত্তাল বিশ্ববিদ্যালয়।

Advertisement

বুধবার (৬ মার্চ) দিনভর বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে উচ্চ-পর্যায়ের তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

তৃতীয় দিনের এ আন্দলোনে বুধবার (৬ মার্চ) সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিয়াশীল সংগঠনের সমন্বিত উদ্যোগে বিবিএ অনুষদ ভবনের সামনে মানববন্ধন করেন। মানববন্ধনে অভিযুক্ত শিক্ষক সাজন সাহা এবং বিভাগীয় প্রধান রেজুয়ান আহমেদ শুভ্রকে দ্রুত বিচারের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি করেন শিক্ষার্থীরা। এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন থাকবে বলে বিভাগে তালা ঝুলিয়ে দেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।

আন্দোলনকারীরা বিভাগে তালা দিয়ে বিভাগের নামফলক কালো কাপড় দিয়ে ঢেকে দেন। শিক্ষার্থী হেনস্তার প্রতিবাদে বিভাগীয় প্রধানকে অবরুদ্ধ করেন। এ সময় বিভাগীয় প্রধান রেজুয়ান আহমেদ শুভ্রসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষককে দীর্ঘক্ষণ অফিসেই আটকে রাখেন শিক্ষার্থীরা।

Advertisement

অবরুদ্ধ থাকার পর নিজ বিভাগের শিক্ষার্থীদের দুয়োধ্বনিতে প্রক্টরিয়াল বডির সহযোগিতায় বিভাগ ছাড়তে বাধ্য হন বিভাগীয় প্রধান রেজুয়ান আহমেদ শুভ্র। পরে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে বিক্ষোভ করেন।

এদিন বিকেলে যৌন হয়রানির ঘটনায় আশ্রয়দাতা হিসেবে অভিযুক্ত বিভাগীয় প্রধান রেজুয়ান আহমেদ শুভ্রকে অবিলম্বে বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য উপাচার্য বরাবর লিখিত আবেদন জমা দেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। পরে সন্ধ্যা ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন ও মৌন মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করেন শিক্ষার্থীরা।

এদিকে এ ঘটনায় উচ্চ-পর্যায়ের তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার ও সিন্ডিকেট সদস্য প্রফেসর ড. আতাউর রহমানকে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক, ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার উম্মে সালমা তানজিয়া ও শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম কলেজের অধ্যক্ষ ড. এ কে এম আব্দুর রফিককে তদন্ত কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন কতদিনের মধ্যে জমা দেবে তা নির্ধারণ করা হয়নি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সঞ্জয় কুমার মুখার্জি জাগো নিউজকে বলেন, খবর পেয়ে আমরা রেজুয়ান আহমেদের কাছে যাই। বিষয়টি আসলে অবরুদ্ধ করে রাখার মতো নয়। আমরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছি। পরে রেজুয়ান আহমেদকে কক্ষ থেকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয়। যৌন হয়রানির অভিযোগটি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি এরইমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে। এছাড়াও ঘটনা তদন্ত করতে উচ্চ-পর্যায়ের তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Advertisement

মঞ্জুরুল ইসলাম/এফএ/এএসএম