মতামত

গ্রাহকস্বার্থ সংরক্ষণ করে নিবন্ধন চলুক

বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে মোবাইল সিম নিবন্ধন নিয়ে বিতর্ক দেখা দেয়। এমনকি তা আদালত পর্যন্ত গড়ায়। নিরাপত্তার অভিযোগ তুলে বায়োমেট্রিক পদ্ধতির নানা সমালোচনাও করা হয়। অনেক গ্রাহকই ভীত হয়ে পড়েন। কিন্তু সরকার অনড় থাকে। এরই প্রেক্ষিতে আদালতে রিট করা হয়। রিটে বলা হয়, ‘আমাদের দেশে তথ্য সংরক্ষণের কোনো আইন নেই। যতদিন আইন না হচ্ছে ততদিন ফিঙ্গার প্রিন্টের মাধ্যমে সিম রেজিস্ট্রেশনের বিষয়টি তৃতীয় পক্ষের হাতে ছেড়ে দেয়া ঠিক নয়। এতে এই ফিঙ্গার প্রিন্ট অপব্যবহারের আশংকা রয়েছে।’ রিটের প্র্রেক্ষিতে গতকাল মঙ্গলবার আদালত কিছু নির্দেশনাসহ বায়োমেট্রিক পদ্ধতিকে বৈধ বলে ঘোষণা করেছেন। এরফলে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে (ফিঙ্গার প্রিন্ট) মোবাইল সিম নিবন্ধন কার্যক্রম নিয়ে বিতর্কের অবসান হলো। আদালত রায়ে বলেছেন, গ্রাহকের আঙুলের ছাপ নিয়ে যে সিম নিবন্ধন করা হচ্ছে তা একটি শক্তিশালী পাসওয়ার্ড দিয়ে ব্যক্তিগত তথ্য সংরক্ষণ করতে হবে, যাতে কোনোভাবে এটির অপব্যবহার না হয়। এক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনকে একটি শক্তিশালী পাসওয়ার্ড দিয়ে বায়োমেট্রিক তথ্য সংরক্ষণ করতে বলা হয়। একই সঙ্গে যদি কোনো গ্রাহকের আঙুলের ছাপের অপব্যবহার হয় তাহলে আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সরকারকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আদালত রুল নিষ্পত্তি করে যে  রায় দিয়েছেন সেখানে মোটাদাগে দুটি বিষয়ের কথা বলা হয়েছে। এক. বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধনের জন্য বিটিআরসি যে সকল বিষয় নির্ধারণ করে দিয়েছে সেগুলো অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে হবে। দুই. আঙ্গুলের ছাপ যেন যথাযথভাবে সংরক্ষণ করা হয় ন্যাশনাল আইডি যেখানে সংরক্ষিত হচ্ছে।আদালতের এই রায়ের ফলে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে মোবাইল সিম নিবন্ধনে আর কোনো বাধা থাকলো না। এখন আশা করা যাচ্ছে মোবাইল ফোন কোম্পানিসহ সংশ্লিষ্ট সকলে দায়িত্বশীল হয়ে নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবেন। এ নিয়ে গ্রাহকের মধ্যে যে ভয় বা আতঙ্ক আছে সেটি দূর করতে হবে। তাদের আস্থায় নিয়েই কাজটি চালিয়ে যেতে হবে। এক্ষেত্রে সচেতনতারও একটি ব্যাপার আছে। আমাদের দেশে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে অনেক অপরাধ হয়ে থাকে। বড় বড় সন্ত্রাসীরা অপহরণ, চাঁদাবাজিসহ নানা ধরনের অপরাধ করে নিরাপদ দূরত্বে থেকে এই মোবাইল ফোনের মাধ্যমেই। তাছাড়া ভিওআইপিসহ (ভয়েস অভার ইন্টারনেট প্রটোকল) অনেকভাবেই মোবাইল ফোনের অপব্যবহার হয়। সিম রেজিস্ট্রেশন থাকলে অপরাধীকে শনাক্ত করা সহজ হবে। তাকে শাস্তির আওতায় আনা যাবে। এতে অপরাধের মাত্রাও কমে আসবে। সেজন্য সংশ্লিষ্টদের এগিয়ে আসতে হবে। মনে রাখা প্রয়োজন নিয়ম-কানুনের মধ্যে কোনো কিছু চললে সেখানে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা সহজ হয়।এইচআর/পিআর

Advertisement