কৃষি ও প্রকৃতি

রামগড়ে সূর্যমুখী চাষে ২০ কৃষকের সফলতা

রামগড়ে সূর্যমুখী চাষে ২০ কৃষকের সফলতা

খাগড়াছড়ির রামগড়ে প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিকভাবে সূর্যমুখী চাষ হচ্ছে। সাধারণ কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে পরীক্ষামূলকভাবে প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় ২০ বিঘা জমিতে এ ফসলের চাষ করা হয়। স্থানীয় পর্যায়ে তেল শোধনের ব্যবস্থা করা গেলে সূর্যমুখী চাষাবাদে কৃষকেরা আরও উৎসাহী হবেন।

Advertisement

জানা গেছে, এখানকার মাটি ও আবহাওয়া সূর্যমুখী চাষের জন্য বেশ উপযোগী। রামগড় কৃষি অফিসের সহায়তায় নাকাপা, দাতারাম পাড়া, লাচারীপাড়া ও ফেনীরকুল চরসহ বিভিন্ন স্থানে ২০ জন কৃষক প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় প্রথমবারের মতো সূর্যমুখী চাষ করে সফল হয়েছেন।

৩ থেকে সাড়ে ৩ মাসের মধ্যে ফলন ঘরে তোলা যায় জানিয়ে লাচারীপাড়া গ্রামের কৃষি উদ্যোক্তা চিং থোয়াই মগ জানান, ধান-পাট চাষে প্রচুর পরিশ্রম এবং খরচ হয়। সূর্যমুখী চাষে খরচ কম লাভ বেশি। বিঘাপ্রতি ৭-৮ হাজার টাকা খরচ হয়। খরচ শেষে ৩০ হাজার টাকা লাভ হয়। খরচের তুলনায় লাভ ও সময় কম লাগার কারণে আগামীতে অনেক কৃষক সূর্যমুখী চাষে ঝুঁকবেন বলে মনে করেন এ কৃষক।

কৃষক ক্যশাই মার্মা জানান, সরকারি প্রণোদনা পেয়ে প্রথমবারের মতো ১ বিঘা জমিতে চাষ করেছি। এটি একদিকে মনোমুগ্ধকর, অন্যদিকে লাভজনক। প্রথমবারই ভালো ফলন হওয়ায় আগামীতে আরও চাষ করার পরিকল্পনার কথা জানান তিনি।

Advertisement

আরও পড়ুন• পাবনায় সরিষা চাষ বেড়েছে ৭০ হাজার বিঘাসারিবদ্ধ গম চাষে স্বপ্ন দেখছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের কৃষক

রামগড় উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শরিফ উল্যাহ বলেন, ‘অন্য ফসলের চেয়ে সূর্যমুখী চাষে খরচ কম। এতে সার-ওষুধ কম লাগে। ধান চাষের মতো পরিচর্যাও করতে হয় না। এ ছাড়া সূর্যমুখী ফুলের কাণ্ড জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার ও বিক্রি করা যায়। যা থেকে বাড়তি টাকা আয় হয়।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাশেদ চৌধুরী বলেন, ‘পুষ্টি চাহিদা পূরণে দেশে সূর্যমুখী চাষ করা গেলে আমদানি করা লাগবে না। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে বীজ বপন করা হয়। বীজ বপনের ৯০-১০০ দিনের মধ্যে ফসল তোলা যায়। সামান্য রাসায়নিক সার ও দুবার সেচ দিলেই হয়। প্রতি বিঘা জমিতে গড়ে ৭-৮ হাজার টাকা খরচ হয়। এর কাণ্ড জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার ও খৈল গরু-মহিষের খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়।’

রামগড় পাহাড়াঞ্চল কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এস এম ফয়সাল বলেন, ‘রান্নার জন্য সয়াবিন তেলের চেয়ে সূর্যমুখীর তেল দশগুণ বেশি পুষ্টিসমৃদ্ধ। এটি মানবদেহের মহৌষধ হিসেবে ভূমিকা পালন করে।’

Advertisement

মুজিবুর রহমান ভুইয়া/এসইউ/এমএস