জাতীয়

বিভাগীয় পর্যায়েও বন এবং পরিবেশ উন্নয়ন কমিটি করা হবে: মন্ত্রী

উপজেলা ও জেলার মতো বিভাগীয় পর্যায়েও বন এবং পরিবেশ উন্নয়ন কমিটি করা হবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী।

Advertisement

মঙ্গলবার (৫ মার্চ) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক সম্মেলনের তৃতীয় দিনের ষষ্ঠ অধিবেশন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন মন্ত্রী। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়, বিদ্যুৎ বিভাগ, জ্বালানির ও খনিজসম্পদ বিভাগের সঙ্গে এ কার্য অধিবেশন হয়।

পরিবেশ রক্ষায় অনেক সময় স্থানীয় চাপ থাকে সেই বিষয়ে তারা কিছু বলেছে কি না জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘না, সেই বিষয়ে তারা কিছু উল্লেখ করেনি। এ ধরনের সম্মেলনের দুটি উদ্দেশ্য। এক হচ্ছে মাঠ প্রশাসনের কথাগুলো আমরা শুনি, আর এক হচ্ছে আমাদের যে প্রত্যাশা ওনাদের কাছ থেকে সেগুলো আমরা একটু স্পষ্ট করার চেষ্টা করি।’

তিনি বলেন, ‘পরিবেশ অধিদপ্তরের মূল উদ্দেশ্য এবং দায়িত্ব হচ্ছে মানমাত্রা নির্ধারণ করা। ইনফোর্সমেন্টের দায়িত্ব হচ্ছে মাঠ পর্যায়ে। আমরা প্রায় প্রতিটা কাজের জন্যই ডিসিদের ওপর নির্ভরশীল। কেননা স্থানীয় পর্যায়ে সেগুলো ওনারা বাস্তবায়ন করেন।’

Advertisement

‘আমরা এখন টেকসই উন্নয়নের কথা বলছি। আমরা এ উন্নয়নের ধারাকে যদি স্থায়িত্ব দিতে চাই তবে অবশ্যই পরিবেশের বিষয়টা মাথায় রাখতে হবে।’

মন্ত্রী বলেন, সংবিধানের ১৮-এর (খ) বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচন ইশতেহার সেখানে যে বিষয়গুলো আছে সেগুলো বাস্তবায়ন করার জন্য আমাদের মাঠ প্রশাসনের সহযোগিতা দরকার।

তিনি বলেন, ‘কিছু কিছু জায়গায় দেখি শ্রেণি পরিবর্তন হয়ে যায়। কোথাও হয়তো একটা পাহাড় ছিল, সেটাকে সমান করে পরবর্তীতে শ্রেণি পরিবর্তন হয়। এখানে আমরা স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা চাই।’

পরিবেশ মন্ত্রী বলেন, ‘পনেরো বছর আগে বাংলাদেশের প্রাকৃতিক চিত্রটা কি ছিল বর্তমানে কি আছে, গুগল ম্যাপের মাধ্যমে আমরা সেটাকে চিহ্নিত করে পুনরুদ্ধার করতে পারি। বনের জমি পুনরুদ্ধারেও আমাদের মাঠ প্রশাসনের সহযোগিতা দরকার। আমরা মূলত এ বিষয়গুলো আলোচনা করেছি।’

Advertisement

আরেকটি বিষয়ে পরিবর্তন আনা হচ্ছে জানিয়ে সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘বর্তমানে বিভাগীয় কমিশনারদের সঙ্গে আমাদের কোনো যোগাযোগ নেই, ওই অর্থে কোনো কমিটি ওখানে নেই। আমাদের যে পরিবেশ ও বন উন্নয়ন কমিটি আছে সেগুলো জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে। আমরা চাই এদের সভাগুলো যাতে নিয়মিত হয়। সেই সভার কার্যপত্রগুলো যাতে আমাদের কাছে আসে। বিভাগীয় পর্যায়েও আমরা বন এবং পরিবেশ উন্নয়ন কমিটি করবো। আমাদের মন্ত্রিপরিষদ সচিবও একমত।’

‘এটাকে আমরা চালু করবো। এটাকে যদি আমরা করি আমাদের সমন্বয়টা আরেকটু কার্যকর হবে। বিভাগীয় পর্যায়কেও কিছু কিছু দায়িত্ব দিয়ে দিতে পারবো জেলার সঙ্গে কথা বলার জন্য।’

পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের ১০০ দিনের কর্মসূচি সম্পর্কে জেলা প্রশাসকরা অবহিত কি না এ বিষয়ে সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘তারা অবহিত আছেন এবং আমরা বলেছি। তাদের সক্রিয় সহযোগিতার দরকার এবং তারা সহযোগিতা করবেন।’

তিনি বলেন, ‘ইটিপি নিয়ে কথা বলেছি। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় আড়াই হাজার ইটিপি আছে। সেগুলো আমাদের ওইভাবে মনিটর করা সম্ভব নয়। অনেকের ইটিপি আছে, ইটিপিগুলো তারা চালায় না। যখনই কোন পরিদর্শক যায় বা যাবে তারা সংবাদ পায়, তখন ইটিপি চালু করে। ইটিপি যদি আপনি একদিন বন্ধ রাখেন এক লাখ টাকার মতো সাশ্রয় করেন। কাউকে যদি তিন মাস পর আমরা জানিয়ে দিই যে উনি ইটিপি চালাচ্ছেন না, তখন হয়তো জরিমানা করি ১০ হাজার টাকা। ওই ১০ হাজার টাকা জরিমানা দিয়ে তো একটা অবৈধ কাজকে বৈধতা দিচ্ছি।’

‘আমরা জরিমানার মাত্রা বাড়াচ্ছি। আমরা স্মার্ট মনিটরিং করার চেষ্টা করবো। প্রযুক্তি তো অনেক এগিয়ে গেছে। আমরা যদি প্রতিটি ইটিপিতে একটা ডিভাইস বসাতে পারি, তাহলে ওই ইটিপিটা সারাক্ষণ চলছে কি চলছে না, সেটার একটা তথ্য আমাদের কাছে আসবে’ বলেন পরিবেশমন্ত্রী।

আরএমএম/এমএএইচ/জেআইএম