টুথপেস্ট কিংবা হ্যান্ডওয়াশ আমাদের নিত্যব্যবহার্য পণ্য। ব্যক্তিগত যত্নে ব্যবহার করা হয় বিভিন্ন ধরনের কসমেটিকস। দেশে এসব পণ্যের বিশাল বাজার থাকলেও উৎপাদন ও আমদানি পর্যাপ্ত নয়। নকল পণ্যে সয়লাব বাজার। এসব নকল পণ্য তৈরি হয় ক্ষতিকর কেমিক্যাল ব্যবহার করে। সম্প্রতি এক গবেষণায় টুথপেস্ট ও হ্যান্ডওয়াশেও মিলেছে মাত্রাতিরিক্ত প্যারাবেন। এসব পণ্য নিয়মিত ব্যবহারে বাড়ছে ক্যানসারসহ নানান রোগের ঝুঁকি।
Advertisement
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অরগানাইজেশনের (এসডো) এক গবেষণায় বাংলাদেশের টুথপেস্ট ও লিকুইড হ্যান্ডওয়াশে বিপজ্জনক মাত্রায় প্যারাবেন পাওয়ার বিষয়টি সামনে আসে। সংস্থাটি দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিষ্ঠান ওনজিন ইনস্টিটিউট ফর অকুপেশনাল অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল হেলথের (ডব্লিউআইওইএইচ) ল্যাব থেকে নমুনা পরীক্ষা করিয়ে এ ফলাফল জানায়।
গবেষণায় ঢাকার বিভিন্ন দোকান থেকে টুথপেস্ট ও হ্যান্ডওয়াশের ৩০টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। সব নমুনায়ই নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে বেশি মাত্রার রাসায়নিক পদার্থের উপস্থিতি পাওয়া যায়। নমুনাগুলোতে প্যারাবেন ছাড়াও ফ্লোরাইড (শুধু টুথপেস্টে) ও সোডিয়াম ডাইক্লোরাইডের উপস্থিতি বেশি।
আরও ভয়াবহ তথ্য হলো, প্রাপ্তবয়স্কদের ২২টি নমুনার মধ্যে পাঁচটি পণ্যে সর্বোচ্চ মাত্রায় প্যারাবেনের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। বিশেষ করে একটি টুথপেস্টে ১৮২৩ মাইক্রোগ্রাম/গ্রাম ও দুটি হ্যান্ডওয়াশের নমুনায় ১৪০৩-১৮৩৪ মাইক্রোগ্রাম/গ্রাম প্যারাবেনের উপস্থিতি মিলেছে। এমনকি শিশুদের একটি টুথপেস্টেও ৬৫৯ মাইক্রোগ্রাম/গ্রাম মিথাইল প্যারাবেন এবং ৫০ দশমিক ৫ মাইক্রোগ্রাম/গ্রাম বিউটাইল প্যারাবেনের উপস্থিতি পাওয়া গেছে।
Advertisement
গবেষণায় আরও সাতটি দেশের নমুনাও বিশ্লেষণ করা হয়। কিন্তু দেখা যায়, বাংলাদেশি পণ্যেই সবচেয়ে বেশি মাত্রায় প্যারাবেন ব্যবহার করা হয়। অথচ একই পণ্যে পাকিস্তান, ভারত, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, নেপাল, ভুটান ও আফগানিস্তানের মতো দেশে এসব ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থের ব্যবহার কম।
মাঠ পর্যায়ে তদারকি সংস্থার নিষ্ক্রিয়তায় ব্যবসায়ীরা ইচ্ছামতো ক্ষতিকর রাসায়নিক ব্যবহার করছে নিত্যব্যবহার্য পণ্যে। ফলে একসময় মানুষ না জেনেই হরমোন, থাইরয়েড, বন্ধ্যাত্বের মতো রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এছাড়া দীর্ঘমেয়াদে ক্যানসারের মতো মারণব্যাধিতে আক্রান্তের হারও বাড়ছে এসব কারণে।- ডা. ফারুক পাঠান
এ বিষয়ে এসডোর সিনিয়র টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজর ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মো. আবুল হাশেম জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমাদের দৈনন্দিন পণ্যে এত উচ্চমাত্রায় এ বিষাক্ত রাসায়নিকের ব্যবহার দেখে আমি উদ্বিগ্ন। এগুলো নীরবে আমাদের স্বাস্থ্যের ক্ষতি করছে এবং আমাদের জীবনকে হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘জনস্বাস্থ্য রক্ষার জন্য ভোক্তাদের পণ্যে প্যারাবেন ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে নীতিনির্ধারকদের আরও কঠোর হওয়া প্রয়োজন। এসব রাসায়নিকের ব্যবহার নিষিদ্ধ করার এখন সময় এসেছে। সে আহ্বান বাংলাদেশ সরকারের প্রতি জানানো হচ্ছে।’
Advertisement
সাধারণত অধিক কার্যকরী ও খরচ সাশ্রয়ী করার জন্য ক্ষতিকর রাসায়নিকের ব্যবহার করা হয় নিত্যব্যবহার্য পণ্যে। প্যারাবেন সাধারণত প্রসাধনী, ঘরে ব্যবহৃত পণ্য এবং ওষুধপত্রেও মেয়াদ বাড়ানোর জন্য ব্যবহৃত হয়। কিন্তু তাতে বাড়ে নানান স্বাস্থ্যঝুঁকি। এ ধরনের রাসায়নিক পদার্থ আমাদের হরমোন নিয়ন্ত্রণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্ড্রোকাইন সিস্টেমের কার্যক্রম ব্যাহত করে। এ কারণেই বেশ কয়েকটি দেশ এ ধরনের পণ্যে প্যারাবেনের ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) বলছে, টুথপেস্ট ও হ্যান্ডওয়াশে প্যারাবেন ব্যবহার করা যাবে না। ইউরোপীয় ইউনিয়নের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা ইসিডিসির মাত্রা অনুযায়ী প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ এক হাজার এবং শিশুদের ক্ষেত্রে ৫শ মাইক্রোগ্রাম প্যারাবেন সহনশীল ধরা হয়।
আরও পড়ুন
টুথপেস্ট-হ্যান্ডওয়াশে বিপজ্জনক ‘প্যারাবেন’, ক্যানসারের ঝুঁকি নকলের ভিড়ে আসল প্রসাধনী চিনবেন যেভাবে দেশে নকল প্রসাধনী বাড়ার শঙ্কা ব্যবসায়ীদেরনিত্যব্যবহার্য পণ্যে প্যারাবেনের মাত্রা এর বেশি হলে হরমোন নিয়ন্ত্রণে ব্যাঘাত, প্রজনন সমস্যা এমনকি ক্যানসারের ঝুঁকিও সৃষ্টি হয়।
ওই গবেষণায় টুথপেস্ট ও হ্যান্ডওয়াশে পাওয়া সোডিয়াম-ডাইক্লোরাইডও খুব ক্ষতিকর। এরও নির্ধারিত মাত্রা রয়েছে, যা মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহারে উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, স্ট্রোক ও কিডনির জটিলতা তৈরি করে। ফ্লোরাইডের অতিরিক্ত ব্যবহার হাড়ের ভারসাম্য নষ্ট করে এবং দাঁতের অ্যানামেল গঠনে সমস্যা তৈরি করে।
এ বিষয়ে বারডেম হাসপাতালের ডায়াবেটিস ও হরমোন বিভাগের অধ্যাপক ডা. ফারুক পাঠান জাগো নিউজকে বলেন, ‘মাঠ পর্যায়ে তদারকি সংস্থার নিষ্ক্রিয়তায় ব্যবসায়ীরা ইচ্ছামতো ক্ষতিকর রাসায়নিক ব্যবহার করছে নিত্যব্যবহার্য পণ্যে। ফলে একসময় মানুষ না জেনেই হরমোন, থাইরয়েড, বন্ধ্যাত্বের মতো রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এছাড়া দীর্ঘমেয়াদে ক্যানসারের মতো মারণব্যাধিতে আক্রান্তের হারও বাড়ছে এসব কারণে।
কী করছে তদারকি সংস্থা বিএসটিআই?কসমেটিকসসহ প্রায় সব ধরনের নিত্যব্যবহার্য পণ্যে জাতীয় মান প্রণয়নকারী ও মান নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই)। কোন পণ্যের মান কী হবে তা যেমন এ সংস্থা নির্ধারণ করে, তেমনি কোন পণ্যে মাত্রাতিরিক্ত রাসায়নিকের উপস্থিতি মিললে সে বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয় সংস্থাটি। বাজারে পণ্য নিষিদ্ধকরণ ও কোম্পানি সিলগালা করা এ সংস্থার কাজ।
তবে পণ্যের মান প্রণয়ন ও বাজার অভিযানে এখনো শুধু লেড ও মার্কারির মধ্যে সীমাবদ্ধ সংস্থাটি। যেখানে এখন ক্ষতিকারক বেনজোফেনন, আর্সেনিক, ক্যাডমিয়াম, রেটিনাইল পালমিটেট, মারকিউরাস ক্লোরাইড, কালোমেলের মতো বেশকিছু ক্ষতিকারক রাসায়নিকের ব্যবহার হচ্ছে হরহামেশা। তবে সংস্থাটি মাঝে মধ্যে লেড ও মার্কারিযুক্ত কিছু রং ফর্সাকারী ক্রিম নিষিদ্ধ করা ও বাজারে সেগুলো বিক্রি বন্ধ করা ছাড়া অন্য কোনো নিত্যব্যবহার্য পণ্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া বা বিশেষ কোনো মান প্রণয়ন নজরে পড়ে না।
এসডোর ওই গবেষণা এবং প্যারাবেন, সোডিয়াম-ডাইক্লোরাইড ও ফ্লোরাইডের মাত্রা নির্ধারণ নিয়ে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কি না- এমন প্রশ্নে বিএসটিআইয়ের মান উইংয়ের পরিচালক সাইদুল ইসলাম কোনো কথায় বলতে রাজি হননি। পরে সার্টিফিকেশন মার্কস উইংয়ের উপপরিচালক ও মুখপাত্র রিয়াজুল হক জাগো নিউজকে বলেন, ‘একটি গবেষণার তথ্য আমরা জেনেছি। সে বিষয়ে যাচাই-বাছাই করে দেখা হবে। কোন ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে, সেটি অ্যাক্রিডিটেশন যুক্ত ল্যাব কি না জানা নেই। সেজন্য আমরা নিজেরা বাজার থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছি। পরীক্ষা হবে সেগুলো। তখন সমস্যা পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বিএসটিআই যে মান প্রণয়ন করছে এর মধ্যে প্যারাবেন, সোডিয়াম-ডাইক্লোরাইড ও ফ্লোরাইডের মতো অন্য ক্ষতিকর উপাদানের মাত্রা নির্ধারিত রয়েছে কি না সে প্রশ্নের জবাবে রিয়াজুল হক বলেন, ‘আমাদের আড়াইশর বেশি পণ্য। কোন পণ্যে কতগুলো প্যারামিটার রয়েছে মুখস্ত নেই। কাগজ দেখে বলতে হবে। তবে প্রতিটি পণ্যের ক্ষেত্রে ১০ থেকে ২৫-৩০টি প্যারামিটার পরীক্ষা করে তারপর মানসনদ দেওয়া হয়।’
বাংলাদেশের এমন কোনো কসমেটিকস পণ্য নেই যা নকল হয় না। মোড়কজাত এসব পণ্য যখন বাংলাদেশে আসে, তখন অনেকগুলো ধাপ পার করতে হয়। এর মধ্যে প্রথম হচ্ছে পণ্যে আমদানিকারকের তথ্য থাকতে হবে। কিন্তু আপনারা দেখবেন বেশিরভাগ পণ্যে আমদানির তথ্য থাকে না। এতে প্রমাণিত হয় এ কসমেটিকসগুলো আমদানির প্রোপার চ্যানেলে আসছে না। এগুলো অবৈধ পণ্য।–ভোক্তা অধিদপ্তরের ডিজি
এ পর্যন্ত সরকার এসআরও জারির মাধ্যমে ২৭৩টি পণ্য বিএসটিআইয়ের বাধ্যতামূলক সিএম লাইসেন্সের আওতাভুক্ত করেছে। পণ্যগুলোর জাতীয় মান প্রণয়ন ও মান নিয়ন্ত্রণ করা বিএসটিআইয়ের কাজ। এর মধ্যে প্রায় অধিকাংশ নিত্যব্যবহার্য পণ্য বিএসটিআইয়ের বাধ্যতামূলক।
আরও বড় ঝুঁকি নকল ও নিম্নমানের পণ্যেএসডো ওই গবেষণায় যেসব ব্র্যান্ডের পণ্যের নমুনা পরীক্ষা করেছিল সেগুলোর প্রায় সবগুলো নামিদামি ব্র্যান্ডের। তবে এর চেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ দেশে সয়লাব হওয়া নকল ও নিম্নমানের নিত্যব্যবহার্য পণ্য।
কিছুদিন আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণায় দেখা যায়, যে পরিমাণ কসমেটিকসের চাহিদা দেশে রয়েছে তার ১৫ শতাংশ পূরণ হচ্ছে দেশি কোম্পানির মাধ্যমে। ১৫ শতাংশ আমদানি করা হয়। বাকি ৭০ শতাংশ কসমেটিকস নকল ও নিম্নমানের ক্ষতিকারক উপাদান দিয়ে তৈরি হচ্ছে। পুরান ঢাকার চকবাজার, জিঞ্জিরা, ইসলামপুর এবং ঢাকার বাইরের বিভিন্ন জেলা শহরে এই ভেজাল কসমেটিকস তৈরির কারখানা গড়ে উঠেছে। জনস্বাস্থ্যের জন্য এগুলো মারাত্মক ক্ষতিকর।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) তথ্য অনুযায়ী, বাজারে প্রতিষ্ঠিত অনেক ব্র্যান্ডের প্রসাধনীর লেবেল ও মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ নেই। এক জরিপে দেখা গেছে, ৪৫ শতাংশ প্রসাধন পণ্যের বিএসটিআই সনদ নেই, ৭৫ শতাংশ পণ্যের উৎপাদক প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা নেই। ইউনিলিভার, স্কয়ার টয়লেট্রিজ, কোহিনূর কেমিক্যাল, লালবাগ কেমিক্যালের পাশাপাশি বিদেশ থেকে আমদানি করা বড় বড় ব্র্যান্ডের পণ্য প্রকাশ্যে নকল করে বাজারজাত করছে একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী। ফলে ক্রেতারা হাত বাড়ালেই মিলছে আসলের পরিবর্তে নকল আর ভেজাল পণ্য। যার মোড়ক বা ভেতরের পণ্য দেখে কারও বোঝার সাধ্য নেই কোনটি আসল, কোনটি নকল।
আবার বিদেশি আমদানি পণ্যের মোড়কেও বিখ্যাত সব ব্র্যান্ডের প্রসাধনী নকল করে তা বাজারজাত হচ্ছে বড় বড় সুপারশপ থেকে শুরু করে ব্র্যান্ড হাউজে। অনেক ক্ষেত্রে পরিত্যক্ত মোড়ক ও কৌটায় নকল প্রসাধনী ঢুকিয়েও বিক্রি করা হচ্ছে।
এসব নকল ও নিম্নমানের অবৈধ পণ্য প্রতিরোধে মাঝে মধ্যে অভিযান চালায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) এ এইচ এম সফিকুজ্জামান জাগো নিউজকে বলেন, ‘বাংলাদেশের এমন কোনো কসমেটিকস পণ্য নেই যা নকল হয় না। মোড়কজাত এসব পণ্য যখন বাংলাদেশে আসে, তখন অনেকগুলো ধাপ পার করতে হয়। এর মধ্যে প্রথম হচ্ছে পণ্যে আমদানিকারকের তথ্য থাকতে হবে। কিন্তু আপনারা দেখবেন বেশিরভাগ পণ্যে আমদানির তথ্য থাকে না। এতে প্রমাণিত হয় এ কসমেটিকসগুলো আমদানির প্রোপার চ্যানেলে আসছে না। এগুলো অবৈধ পণ্য।’
ভোক্তা অধিদপ্তরের ডিজি বলেন, ‘এছাড়া দেশের আনাচে-কানাচে এখন নকল পণ্য তৈরির কারখানা হয়েছে। যারা নামিদামি ব্র্যান্ডের পণ্য নকল করছে। জনস্বাস্থ্যের জন্য যা মারাত্মক হুমকি।’
এনএইচ/এএসএ/জিকেএস