রাফায় ইসরায়েলি বাহিনীর বোমা হামলায় ১৭ জন নিহত হয়েছে। খালি হাতেই রাফার লোকজন ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে তাদের প্রিয়জনদের উদ্ধারের চেষ্টা করে যাচ্ছেন। এর আগে রাফা শহরকে নিরাপদ অঞ্চল ঘোষণা করে ফিলিস্তিনিদের সেখানে চলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল ইসরায়েল।
Advertisement
তবে ফিলিস্তিনিরা সেখানে আশ্রয় নেওয়ার পর এখন ওই শহরে হামলা আরও জোরদার করা হয়েছে। ফলে ফিলিস্তিনিদের জন্য এখন আর কোনো শহরই নিরাপদ নয়। রাফার বাস্তুচ্যুত বাসিন্দা হিয়াম আল-ঘারিব বলেন, তাদের জন্য লজ্জা। তারা কেন এত রক্ত ঝরাচ্ছে?
তিনি বলেন, কেন? কেন তারা আমাদের ওপর হামলা চালাচ্ছে? তারা যদি আমাদের ধ্বংস করতে চায়, তাহলে কেন তারা তা একবারের জন্যই করছে না?
গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর আগ্রাসনে মৃত্যুর মিছিল থামছেই না। গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি বাহিনীর বোমা হামলায় শতাধিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। ফলে সেখানে ইতোমধ্যেই নিহতের সংখ্যা ৩০ হাজার ৫০০ ছাড়িয়ে গেছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সেখানে কমপক্ষে ৩০ হাজার ৫৩৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
Advertisement
গত ৭ অক্টোবরের পর ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত এই অবরুদ্ধ উপত্যকায় ৭১ হাজার ৯২০ জন আহত হয়েছে।
এদিকে ইসরায়েলি আগ্রাসনের মুখে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার কামাল আদওয়ান হাসপাতালে ১৫ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। তারা সবাই অপুষ্টি ও পানিশূন্যতাজনিত কারণে মারা গেছে। প্রাণহানির শঙ্কায় রয়েছে আরও কয়েকটি শিশু।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল-কুদরা এক বিবৃতিতে বলেছেন, কামাল আদওয়ান হাসপাতালে অপুষ্টি ও পানিশূন্যতার কারণে ১৫ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বৈদ্যুতিক জেনারেটর বন্ধ হয়ে যাওয়া এবং অক্সিজেন সরবরাহ না থাকায় সেখানে যথাযথ চিকিৎসা সম্ভব হচ্ছে না। এর ফলে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে থাকা আরও ছয় শিশুর জীবনশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি জাতিসংঘ শিশু তহবিল (ইউনিসেফ) সতর্ক করে বলেছিল, ইসরায়েলি হামলার মুখে গাজা উপত্যকায় শিশু, অন্তঃসত্ত্বা নারী এবং স্তন্যদানকারী মায়েদের স্বাস্থ্যের জন্য অপুষ্টি ‘গুরুতর হুমকি’ হয়ে উঠেছে।
Advertisement
আরও পড়ুন:
গাজায় অপুষ্টি-পানিশূন্যতায় আরও ১৫ শিশুর মৃত্যু গাজায় ক্ষুধার যন্ত্রণায় মারা গেলো ২ মাসের শিশু উত্তর গাজায় ৬ শিশুর মৃত্যু, অন্যদের অবস্থা আশঙ্কাজনক ২৫ হাজারের বেশি নারী-শিশুকে হত্যা করেছে ইসরায়েল: যুক্তরাষ্ট্রজাতিসংঘ জানিয়েছে, ইসরায়েলের হামলা গাজার ৮৫ শতাংশ মানুষকে খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র ঘাটতির মধ্যে ঠেলে দিয়েছে। হামলায় উপত্যকাটির ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
টিটিএন