দেশজুড়ে

শিক্ষকের বেত্রাঘাত, অভিমানে স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে ইসরাত জাহান সামিয়া (১৩) নামের সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পরিবারের অভিযোগ, তুচ্ছ বিষয়ে শিক্ষকের পিটুনিতে অসুস্থ হয়ে অভিমানে আত্মহত্যা করেছে সে।

Advertisement

সোমবার (৪ মার্চ) দুপুরে চরকাঁকড়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের আবদুর রব মাস্টার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত ইসরাত জাহান ওই বাড়ির মো. ওয়াসিমের মেয়ে। সে স্থানীয় চরকাঁকড়া একাডেমি উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী ছিল।

সামিয়ার মা নাজমুন নাহার অভিযোগ করে বলেন, ‘চরকাঁকড়া একাডেমি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক নাজিম উদ্দিন তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) সামিয়াকে ব্যাপক মারধর করেন। পরে সে বমি করে এবং বাড়িতে এসে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাকে কেন মারা হয়েছে জানতে চাইলে সে শিক্ষককে জিজ্ঞেস করতে বলেছিল। সে সুস্থ হওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। কিন্তু আজ দুপুরে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে সামিয়া। আমি এর বিচার চাই।’

Advertisement

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নাজিম উদ্দিন ওই বিদ্যালয়ের কৃষি বিষয়ের শিক্ষক। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে ক্লাসে তিনি বলেছিলেন, ভালোবাসতে হলে প্রথমে মা-বাবাকে ভালোবাসা উচিত। পরে সামিয়া শিক্ষকের ওই বিষয় নিয়ে মন্তব্য করলে সহপাঠীরা বৃহস্পতিবার শিক্ষকের কাছে বিষয়টি ভিন্নভাবে উপস্থাপন করে। পরে ওই শিক্ষক ক্লাসে গিয়ে সামিয়াকে বেত্রাঘাত করেন।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমি পরীক্ষার ডিউটিতে ছিলাম। শুনেছি একটি বিষয় নিয়ে শিক্ষক নাজিম উদ্দিন ওই ছাত্রীকে কয়েকটি বেত্রাঘাত করেন। তিনি আজ বিদ্যালয়ে না আসায় জিজ্ঞেস করতে পারিনি। বিষয়টি জেনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

তবে যোগাযোগের চেষ্টা করেও অভিযুক্ত শিক্ষক নাজিম উদ্দিনকে পাওয়া যায়নি। তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রণব চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, স্কুলছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যার নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

Advertisement

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আনোয়ার হোসাইন পাটোয়ারি জাগো নিউজকে বলেন, ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত শিক্ষক পলাতক। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে বলা হয়েছে।

ইকবাল হোসেন মজনু/এসআর/এমএস