দেশজুড়ে

সভাপতির বিরুদ্ধে মসজিদের ১৮ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

আগের মসজিদ ভেঙে সেই জায়গায় করা হয়েছে মডেল মসজিদ। তবে ব্যাংক হিসাব হস্তান্তর হয়নি। ফলে মসজিদের সম্পদ থেকে উপার্জিত আয় জমা হচ্ছে আগের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে। সেই হিসাব পরিচালনা করছেন আগের মসজিদ কমিটির সভাপতি।

Advertisement

আয়-ব্যয়ের হিসাব না থাকায় মসজিদের সভাপতির বিরুদ্ধে প্রায় ১৮ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) যশোর সমন্বিত কার্যালয়ের উপ-পরিচালকের কাছে সোমবার (৪ মার্চ) এ অভিযোগ করেন এলাকাবাসী। এ ঘটনা ঘটেছে যশোর শহরের রেলগেট জামে মসজিদ নিয়ে। যে মসজিদ এখন রূপান্তরিত হয়েছে জেলা মডেল মসজিদে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯৫২ সালে যশোর শহরের রেলগেট এলাকায় রেলগেট জামে মসজিদ স্থাপিত হয়। পরবর্তী সময়ে জেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপনের জন্য এ মসজিদের জায়গাটি নির্বাচিত হয়। সরকারি উদ্যোগে এখানে দৃষ্টিনন্দন জেলা মডেল মসজিদ নির্মিত হওয়ার পর ২০২৩ সালের ১৬ মার্চ মসজিদটির উদ্বোধন করা হয়। ফলে আগের রেলগেট মসজিদটি এখন আর নেই।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, আগের মসজিদটি ভেঙে ফেলা হলেও এর আয়-ব্যয়ের হিসাব হস্তান্তর করা হয়নি। আগের কমিটির সভাপতি শহরের মুজিব সড়ক রেলগেটের বাসিন্দা কাজী শহিদুল হক শাহিন আয়-ব্যয়ের হিসাব নিজের কাছেই রেখেছেন। তিনি আগের রেলগেট মসজিদ ভেঙে ফেলার সময় ইট, কাঠ, পাথর, কার্পেট, ফ্যানসহ বিভিন্ন মালামাল বিক্রি করে প্রায় ১৮ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। পাশাপাশি মসজিদের পুকুর ও জমি পছন্দমতো ব্যক্তিদের মধ্যে ইজারা দিয়েছেন তিনি। এ থেকে কত টাকা আদায় করা হয় সেটার কোনো হিসাব দেন না শহিদুল হক। শুধু তাই নয়, তিনি রেলওয়ের জায়গা দখল করে বাড়িঘর নির্মাণ করে বসবাস করছেন। এলাকাবাসীর পক্ষে অভিযোগে সই করা কয়েকজনের মধ্যে একজন কাজী অহিদুল ইসলাম রনি। তিনি বলেন, আগের মসজিদটি ভেঙে ইট বিক্রির টাকার হিসেব দেননি শহিদুল হক। সেখানে থাকা ছাত্রাবাসের ভাড়া উত্তোলন করা হয়। মসজিদের নামে তেঁতুলতলায় থাকা দোকান ও গ্যারেজ থেকেও ভাড়ার টাকা নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু কোনো হিসাব দিচ্ছেন না। জেলা মডেল মসজিদ ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের বর্তমান সভাপতি জেলা প্রশাসক ও সাধারণ সম্পাদক ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক। তাদের কাছে টাকার হিসাব বুঝে না দিয়ে শহিদুল হক টালবাহানা করছেন। আগের রেলগেট মসজিদের মুয়াজ্জিন ছিলেন মিজানুর রহমান। তিনি বর্তমানে জেলা মডেল মসজিদের মুয়াজ্জিন হিসেবে দায়িত্বে আছেন।

Advertisement

জানতে চাইলে মিজানুর রহমান বলেন, রেলগেট মসজিদের তখনকার কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছিল আরেকটি মসজিদ নির্মাণ করা হবে। কিন্তু পাঁচ বছরেও মসজিদ নির্মাণ করা হয়নি।

অভিযোগের বিষয়ে শহিদুল হক শাহিন বলেন, কোনো টাকা আত্মসাৎ করা হয়নি। আমার ও সাধারণ সম্পাদকের যৌথ অ্যাকাউন্টে টাকাগুলো সোনালী ব্যাংক রেলগেট শাখায় রয়েছে। এ টাকা দিয়ে তেঁতুলতলায় একটি মসজিদ নির্মাণের কথা রয়েছে।

এ বিষয়ে জেলা মডেল মসজিদের সাধারণ সম্পাদক ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন যশোরের উপ-পরিচালক বিল্লাল বিন কাশেম কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

দুদক সমন্বিত যশোর জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. আল আমিন জানান, এলাকাবাসীর অভিযোগ তিনি পেয়েছেন। এ বিষয়ে আইন অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

Advertisement

মিলন রহমান/এসআর/এমএস