রমজানের রাতের নফল নামাজ তারাবিহ। মুসলমানরা রমজান মাসে দিনে রোজা রাখার পাশাপাশি রাতে দীর্ঘ সময় নিয়ে তারাবিহ নামাজ আদায় করে থাকেন। তারাবিহ নামাজের ফজিলত সম্পর্কে আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,
Advertisement
وَمَنْ قَامَ رَمَضَانَ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ
যে ব্যক্তি রমজানের রাতে বিশ্বাসের সঙ্গে সওয়াবের আশায় দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করে, তার আগের গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়। (সহিহ বুখারি: ৩৮, সহিহ মুসলিম: ৭৬০)
রমজানে সব মসজিদেই ইশার পর তারাবিহ নামাজের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। অনেক মসজিদে তারাবিহ নামাজে কোরআন খতমও করা হয়। মুসলমানদের কাছে বিশেষ সম্মান ও মর্যাদার অধিকারী মসজিদে হারামেও প্রতি বছর তারাবিহ নামাজে কোরআন খতম করা হয়। মসজিদে হারামের তারাবিহ নামাজের কোরআন তিলাওয়াত বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের কাছে ব্যাপকভাবে জনপ্রিয়। প্রতি বছরই বিশিষ্ট আলেম ও কারিরা মসজিদে হারামে তারাবিহ নামাজের ইমামতি করে থাকেন।
Advertisement
এবার রমজানে (১৪৪৫ হিজরী, ২০২৪ খৃষ্টাব্দ) মসজিদে হারামে তারাবিহ নামাজ পড়াবেন ৪ আলেম ও কারি:
১. শায়খ আব্দুর রহমান আস-সুদাইস
শায়খ আব্দুর রহমান আস-সুদাইস ইসলামের দুটি পবিত্র মসজিদ মসজিদে হারাম ও মসজিদে নববির দীনি প্রেসিডেন্সির প্রধান এবং মসজিদে হারামের ইমাম ও খতিব।
১৯৬০ সালে সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। ১২ বছর বয়সে তিনি কোরআন মুখস্থ করেন। ১৯৮৩ সালে রিয়াদ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি স্নাতক শেষ করেন, ১৯৮৭ সালে মাস্টার্স শেষ করেন ইমাম মুহাম্মদ ইবনে সৌদ ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এবং ১৯৯৫ সালে উম্মুল কুরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি ইসলামী শরিয়ায় ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন।
Advertisement
রিয়াদ বিশ্ববিদ্যালয়ে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে তিনি কর্মজীবন শুরু করেন। তারপর তিনি উম্মুল কুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক হন। ১৯৮৪ সালে মাত্র ২৪ বছর বয়সে তাকে যখন কাবার ইমাম মনোনীত করা হয়।
২০১২ সালে তাকে মসজিদে হারাম ও মসজিদে নববির দীনি প্রেসিডেন্সির প্রধান হিসেবে নিযুক্ত করা হয় যা সৌদি আরবে সরকারের একজন মন্ত্রীর সমমর্যাদার পদ।
২. শায়খ ড. মাহের বিন হামাদ আল-মুয়াইকিলী
শায়খ ড. মাহের বিন হামাদ আল-মুয়াইকিলি ১৯৬৯ সালের সাত জানুয়ারি সৌদি আরবের মদিনা মুনাওওরায় জন্মগ্রহণ করেন।
১৪২৫ হিজরিতে মক্কার উম্মুল কুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শরীয়াহ অনুষদ থেকে তিনি মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করেন। এখানে তার বিষয় ছিল, ‘ফিকহুল ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল’ তথা ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বলের ইলমে ফিকহ’। একই প্রতিষ্ঠান থেকে ১৪৩২ হিজরিতে ইমাম সিরাজি রহ. রচিত শাফেয়ী মাজহাবের কিতাব ‘তুহফাতুন নাবিহ শারহুত তানবিহ’র ওপর ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন।
তিনি কুরআনের একজন হাফেজ। ১৪২৮ হিজরির রমজানে মসজিদুল হারামের তারাবি ও তাহাজ্জুদের ইমাম মনোনীত হন। ওই বছরই মসজিদুল হারামের স্থায়ী ইমাম ও খতিবের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
৩. শায়খ আবদুল্লাহ আওয়াদ আল জুহানী
শায়খ আবদুল্লাহ আওয়াদ আল জুহানী ১৯৭৬ সালের ১৩ ই জানুয়ারি সৌদি আরবের মদিনায় জন্মগ্রহণ করেন।
তিনি মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কুরআন অনুষদ থেকে স্নাতক ডিগ্রি এবং মক্কার উম্মুল কুরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট (পিএইচডি) অর্জন করেছেন।
২০০৭ সালের জুলাই মাসে মক্কার মসজিদে হারামের ইমাম হিসাবে নিযুক্ত হন। ২০০৮ সালের রমজান মাস থেকে তিনি মসজিদে হারামে তারাবির নামাজের ইমামতি করছেন। এর আগে তিনি মসজিদে নববি ও মসজিদে কিবলাতাইনের ইমাম হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
৪. শায়খ বানদার বলীলাহ
শায়খ বানদার বালিলাহ ১৯৭৫ সালে সৌদি আরবের মক্কায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মক্কার উম্মুল কুরা ইউনিভার্সিটি থেকে ইসলামি আইনে গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করেন এবং ইসলামি ফিকহে মাস্টার্স করেন। ২০০৮ সালে তিনি মদিনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।
২০১৩ সালে শায়খ বানদার বালিলাহ মসজিদে হারামের ইমাম নিযুক্ত হন। এর আগে মক্কার আরও কিছু মসজিদে তিনি ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
ওএফএফ/জিকেএস