কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার কাঁঠালবাড়ি ইউনিয়নের তালুক কালোয়া গ্রামে বাণিজ্যিকভাবে গ্লাডিওলাস ফুল চাষ শুরু করেছেন কৃষক মো. নুরবখত আলী। গ্লাডিওলাস মূলত দক্ষিণ আফ্রিকার ফুল। গ্লাডিওলাস ফুলের পাশাপাশি তার জমিতে গাঁদা ও সূর্যমুখি ফুল চাষ হচ্ছে। ৫০ শতক জমিতে গ্লাডিওলাস ফুল চাষ করে প্রায় লক্ষাধিক টাকায় বিক্রির আশা করছেন তিনি।
Advertisement
রঙ ভেদে প্রতিটি গ্লাডিওলাস ফুলের স্টিক ৫-২৫ টাকা দরে বিক্রি করছেন। বাণিজ্যিকভাবে কুড়িগ্রাম জেলা শহর ছাড়াও লালমনিরহাটে এই গ্লাডিওলাস ফুল বিক্রি করছেন বলে জানান তিনি।
কথা হয় ফুলচাষি মো. নুর বখতের সঙ্গে। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, গ্লাডিওলাস ফুল চাষ সম্পর্কে আমার কোনো ধারণা ছিল না। কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের খামার বাড়ি থেকে ২০১৮-১৯ সালে প্রদর্শনী প্লট করি। ওই প্রর্দশনী প্লটে ফুলের সমাহার দেখে পরের বছর ফুল চাষে উদ্বুদ্ধ হই। এখন প্রায় তিন একর জমিতে প্রচলিত কৃষি আবাদ না করে তেল বীজ ও ফুল জাতীয় চাষ করছি। কেননা ধান, পাট, আলু চাষের চেয়ে এ জাতীয় আবাদে খরচ কম লাভ বেশি। বিশেষ করে কম সময়ের মধ্যে ক্ষেত থেকে গ্লাডিওলাস ফুল বাজারজাত করা সম্ভব।
তিনি বলেন, বাজারে সারা বছর ফুলের চাহিদা থাকে। প্রতিটি স্টিক ৫-২৫ টাকা দরে বিক্রি করছি। এই ফুল চাষে বাড়তি খরচ ও পরিচর্যার ঝামেলা নেই। সামান্য সেচ, সার ও কীটনাশক ব্যবহার করে এই ফুল চাষ করা সম্ভব।
Advertisement
তিনি আরও বলেন, গ্লাডিওলাস বীজ রোপণের ৭৫ দিনের মধ্যে ফুল সংগ্রহ করা যায়। গ্লাডিওলাস গাছে তেমন বালাই নেই। কেরাডে ও এন্টকল কীটনাশক ব্যবহার করে গ্লাডিওলাস ফুলের যত্ন নেওয়া হয়। বাজারে এ ফুলের চাহিদা থাকায় আগামীতে বড় পরিসরে গ্লাডিওলাস ফুল চাষ করবেন বলে জানান তিনি।
নুরবখতের ছেলে মো. শাহাজাহান আলী বলেন, গ্লাডিওলাস ফুল চাষ করে লাভবান হচ্ছি। অন্যান্য আবাদের চেয়ে এই ফুল চাষে খরচ কম লাভ বেশি। সঠিক সময়ে ক্ষেত থেকে ফুল তুলতে পারলে ভালো দাম পাওয়া যায়।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত বলেন, আর্থ সামজিক উন্নয়নে কৃষকদের নতুন নতুন চাষাবাদে কৃষি বিভাগ উদ্বুদ্ধ করে আসছে। অন্যান্য আবাদের পাশাপাশি ব্যতিক্রমী ও লাভজনক চাষাবাদে আমরা কৃষকদের সহযোগিতা করছি। গত কয়েক বছর হলো কুড়িগ্রামে গ্লাডিওলাস ফুলচাষ প্রদর্শনী করি। জেলায় কয়েকজন চাষ শুরু করেছে। নুর বখতের গ্লাডিওলাস ফুলের বাণিজ্যিক চাষ দেখে নতুন উদ্যোক্তা তৈরি হচ্ছে। আগামীতে জেলায় এই ফুল চাষের পরিধি আরও বাড়বে বলে জানান তিনি।
এফএ/জেআইএম
Advertisement