পশ্চিমবঙ্গে অত্যন্ত আলোচিত ও বিতর্কিত মুখ তিনি। রাজ্য সরকারের নিয়োগ দুর্নীতি মামলাসহ বিভিন্ন ঘটনায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই ও এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটকে (ইডি) দিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। আগামী মঙ্গলবার (৫ মার্চ) পদত্যাগ করছেন তিনি। রোববার (৩ মার্চ) নিজেই সংবাদমাধ্যমকে এ কথা জানিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ।
Advertisement
তিনি বলেন, আমি আগামী মঙ্গলবার পদত্যাগ করবো। বিচারপতি হিসেবে সোমবারই হবে আমার শেষ কর্মদিবস।
পদত্যাগের পর কী করবেন মোটামুটি সেটিও জানিয়ে দিয়েছেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। বলেছেন, পদত্যাগের পর রাজনৈতিক ময়দানেই যাবো। তবে কোন দলে যোগ দেবেন তা জানাননি তিনি।
আরও পড়ুন>>
Advertisement
যদিও তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করবেন না সেটি তার কথায় স্পষ্ট। অভিজিৎ জানান, কংগ্রেস, বিজেপি, বাম বা অনেক ছোট-ছোট দল রয়েছে, সেগুলোতে যোগ দিলেও দিতে পারেন। কিন্তু সেই তালিকায় তৃণমূলের নাম ছিল না।
আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে লড়বেন কি না সেই প্রশ্নের জবাবে বিচারপতি বলেন, যে দলে যাবো সেই দল যদি প্রার্থী করে, তাহলে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে লড়াইয়ের কথা ভেবে দেখবো।
ভারতীয় জনতা পার্টির সূত্রের দাবি, আগামী ৭ মার্চ ফের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনার বারাসাতে জনসভা করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই সভাতেই বিজেপিতে যোগ দেবেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সব ঠিকঠাক থাকলে পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক কেন্দ্র থেকে এবারের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি মনোনীত প্রার্থী হিসেবে লড়বেন তিনি।
আরও পড়ুন>>
Advertisement
কিন্তু আচমকা বিচারপতির পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত কেন? অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এর জবাবে বলেন, আমার মনে হয়েছে, আমি আদালতে যে কাজ করি, সেই কাজের সময় শেষ হয়ে গেছে। আমার অন্তর বলছে সেটা। এখন হয়তো আমায় বৃহত্তর ক্ষেত্রে মানুষের মধ্যে যেতে হবে।
সংবাদমাধ্যমের সামনে অভিজিৎ বলেন, যখনই কোনো প্রতিক্রিয়া দিয়েছি, ক্ষমতাসীন দল তখনই বলেছে, মাঠে আসুন, মাঠে এসে লড়াই করুন। তো আমি ভেবে দেখলাম, তারা যখন ডাকছেন এত করে, এত ধরনের ব্যঙ্গ করছেন, এত অপমানজনক কথা বলছেন, তখন তাদের ইচ্ছাটা পূরণ হওয়া দরকার।
তিনি আরও বলেন, ইতিহাসে আমরা মৌর্য সাম্রাজ্যের কথা পড়েছি। এখন চোখের সামনে আমরা চৌর্য সাম্রাজ্য দেখছি।
বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের পদত্যাগের বিষয়ে কলকাতার মেয়র ফিরাদ হাকিম বলেছেন, আমরা বারবার বলতাম, ওই চেয়ারে বসে তিনি যে মন্তব্যগুলো করতেন, তা করা যায় না। এবার যদি তিনি কোনো রাজনৈতিক দলে যান, তাহলে রাজনৈতিক লড়াই হবে। আমি জানি না শুভেন্দু কতটা পারবে। কিন্তু আমার কাছে যা খবর আছে, তাতে তমলুকে তৃণমূলই জিতবে। তাই উনি জাস্টিসের সিট ছেড়ে দিয়ে যদি হেরে যান, এটাতে আমাদের খুব খারাপ লাগবে।
এসব বিষয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় আগে পদত্যাগ করুন। তারপর যা বলার বলবো।
ডিডি/কেএএ/