সেন্টমার্টিন দেশের মূল্যবান সম্পদ উল্লেখ করে বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক আমির হোসাইন বলেছেন, দেশের একমাত্র প্রবালসমৃদ্ধ দ্বীপ সেন্টমার্টিন জীববৈচিত্র্যে ভরপুর। কিন্তু ধারণক্ষমতার বাইরে প্রতিদিনই অতিরিক্ত দর্শনার্থী যাচ্ছেন সেখানে। ফলে নিজস্ব সৌন্দর্য ও ঐতিহ্য হারিয়ে ফেলছে দ্বীপটি। দেশের অমূল্য সম্পদ হিসেবে একে রক্ষা করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।
Advertisement
কক্সবাজারের টেকনাফে বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের সিপিজি ও ইআরটি সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধান বনসংরক্ষক এসব কথা বলেন।
রোববার (৩ মার্চ) টেকনাফের বাহারছড়া শিলখালি গর্জনবাগান এলাকায় কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. সারওয়ার আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি আরও বলেন, শুধু সেন্টমার্টিন নয়, স্থলের প্রাচীন বনও বিপন্ন হচ্ছে। এটি রক্ষায় শতবর্ষের পুরোনো গর্জনবাগানের সৌন্দর্য যাতে নষ্ট না হয়, সেদিকে দৃষ্টিরাখা জরুরি। স্বল্পসংখ্যক বনকর্মী দিয়ে এটি সম্ভব নয় বিধায়, স্থানীয়দের নিয়ে কো-ম্যানেজম্যান্ট কমিটির মাধ্যমে সেই প্রচেষ্টা চলছে। বন পাহারা দিতে গিয়ে শামলাপুরে স্থানীয় রফিকুল আলমের মৃত্যু হয়। তখন থেকে বন বিভাগ তার স্মরণে সহব্যবস্থাপনা দিবস পালন করে আসছে। এবার আরও সচেতনতার বার্তা নিয়ে দিবসটি উদযাপন করা হবে।
প্রধান বনসংরক্ষক বলেন, কক্সবাজার অঞ্চলের ৭টি সিএমসির সমন্বয়ে একটি কো-ম্যানেজম্যান্ট সেন্টার করার স্বপ্ন রয়েছে। সিএমসির বিভিন্ন সাফল্য তুলে ধরে বর্তমান সময়ের অগ্রগামী সদস্যরা রিসোর্স পারসন হিসেবে ভূমিকা রাখবেন।
Advertisement
সভায় জানানো হয়, টেকনাফ বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য এলাকার ৪১৫ জন পাহারা দল এবং বন বিভাগের লোকবলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় চলমান সময়ে বননিধন অনেক কমে গেছে। কমেছে গর্জনবাগানসহ অন্যান্য এলাকায় গাছকাটা ও জবর দখল। কোডেক বাস্তবায়িত নেচার অ্যান্ড লাইফ প্রকল্প বনবিভাগের সহযোগী হিসেবে বনরক্ষায় প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।
এতে প্রকল্প পরিচিতি নিয়ে স্বাগত বক্তব্য রাখেন নেচার অ্যান্ড লাইফ প্রকল্প পরিচালক ড. শীতল কুমার নাথ। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম অঞ্চলের বন সংরক্ষক বিপুল কৃষ্ণদাস, বিভাগীয় বন কর্মকর্তা, কক্সবাজার উত্তর আনোয়ার হোসেন, টেকনাফ উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুল আলম, কোডেক চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপ-নির্বাহী পরিচালক কমল সেনগুপ্ত।
বক্তব্য রাখেন শিলখালি সহব্যবস্থাপনা কমিটি সভাপতি দেলোয়ার হোসেন, কেরুনতলী মহিলা সিপিজি সভাপতি খুরশিদা বেগম, শামলাপুর মেহগনি সিপিজি সভাপতি খাইরুল বশর।
সভা শেষে সিপিজি দলনেতাদের মাঝে পোশাক, বন্যপ্রাণী উদ্ধারকারী প্রশিক্ষণার্থীদের মাঝে সাপ ধরা, এলিফ্যান্ট রেস্পঞ্জ টিমের মাঝে উপকরণ বিতরণ করা হয়। পুরানপাড়া ভিসিএফ এবং সদস্য হোয়াইক্যং সহব্যবস্থাপনা সাধারণ কমিটি বন্যপ্রাণী উদ্ধার ও নিরাপদ অবমুক্তকরণে বিশেষ অবদান রাখায় স্মারক প্রদান করা হয়।
Advertisement
এসএএল/এমআইএইচএস