জাতীয়

জাল সনদে চাকরি: গৃহায়ণের কর্মচারী বরখাস্ত

জাল সনদে চাকরি, দুর্নীতি ও প্রতারণার অভিযোগে এক কর্মচারীকে বরখাস্ত করেছে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ। দেলোয়ার হোসেন নামের ওই কর্মচারী এসএসসি ও এইচএসসির জাল সনদ দিয়ে ২০০৭ সালে উচ্চমান সহকারী পদে যোগদান করেন। সবশেষ তিনি রাজশাহী সার্কেলে কর্মরত ছিলেন।

Advertisement

রোববার (৩ মার্চ) জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। সূত্র জানায়, জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের উচ্চমান সহকারী মো. দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে জাল সার্টিফিকেট দিয়ে চাকরি নেওয়ার বিষয়ে আবুল বাশার নামের এক ব্যক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর ২০২৩ সালের জুলাই মাসে একটি অভিযোগ দায়ের করেন।

অভিযোগের ওপর ভিত্তি করে মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব (বর্তমানে যুগ্ম সচিব) দেবময় দেওয়ান তদন্ত করে গত বছরের ১ আগস্ট গৃহায়ণ ও গণপূর্ত সচিব বরাবর বিস্তারিত প্রতিবেদন জমা দেন। প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে সেদিনই দেলোয়ারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, অভিযুক্ত কর্মচারী দেলোয়ারের বিরুদ্ধে ২০০৭ সালে দাখিল করা এসএসসি সনদ জাল প্রমাণিত হয়েছে। অভিযুক্ত তার এইচএসসি প্রবেশপত্র, মার্কসিট, সনদপত্র এবং ফলাফল ও রেজিস্ট্রেশন কার্ড ইত্যাদিতে মো. দেলোয়ার হোসেন পিতা শিশু মিয়া নাম প্রয়োজনীয় সংশোধন না করেই মো. দেলোয়ার হোসেন পিতা- আব্দুল অহিদ নামে প্রতারণামূলক প্রত্যয়নপত্র জমা দিয়ে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তপক্ষে ২০০৭ সালে হিসাব সহকারীসহ অন্য ৯টি ক্যাটাগরিতে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে দুই নম্বর শর্ত ভঙ্গ করে চাকরিতে নিয়োগ পান। যা প্রতারণা। শুধু তাই নয়, অভিযুক্ত এই কর্মচারীর এসএসসি ও এইচএসসি সনদে পিতার নামের ভিন্নতা থাকা সত্ত্বেও বিষয়টি গোপন করার উদ্দেশ্যে আগের সার্টিফিকেট, চাকরির আবেদনসহ যাবতীয় কাগজপত্র এবং অফিসের ব্যক্তিগত নথি অসৎ উদ্দেশ্যে সরিয়ে ফেলা হয়েছে। এছাড়া দেলোয়ার রাজশাহী সার্কেলে থাকা অবস্থায় ফাইল আটকে রেখে বা ফাইল গায়েব করে সেবাগ্রহীতাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ ঘুস হিসেবে আদায় করেছেন।

Advertisement

এর মধ্যে গত বছরের আগস্টে অভিযুক্ত কর্মচারী ফৌজদারি একটি মামলায় গ্রেফতার হওয়ায় তাকে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এই সিদ্ধান্তের চিঠি অভিুক্তের স্থায়ী ও অস্থায়ী ঠিকানায় পাঠালেও তাকে না পাওয়ায় চিঠি ফেরত আসে। পরবর্তীতে তার ঢাকার লালমাটিয়ার বাসার দরজার নিচ দিয়ে সেটি রেখে আসা হয়। অভিযোগনামা এবং অভিযোগ বিবরণী তৈরির ১০ কর্মদিবস অতিবাহিত হলেও অভিযুক্ত কর্মচারী কোনো জবাব দেননি।

পরে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে গৃহায়ণ চেয়ারম্যান খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান দেলোয়ারকে বহিষ্কার করে অফিস আদেশ জারি করেন। অফিস আদেশে বলা হয়, জাল সনদে চাকরিতে যোগদান করার অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় তাকে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ (কর্মকর্তা-কর্মচারি) চাকরি প্রবিধানমালা-২০০৫ এর ৪১ (৭) প্রবিধান মোতাবেক চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হলো।

এমএমএ/কেএসআর/জেআইএম

Advertisement