বসন্তের আগমনে মৃতপ্রায় প্রকৃতি জীর্ণতা মুছতে শুরু করেছে। নগ্ন ডালপালাতে দেখা মিলেছে নতুন পাতার আশীর্বাদ। রুদ্র রূপ ঝেড়ে সবুজ গালিচা ভেদ করে মাথা তুলেছে বেগুনি পাঁপড়ি। তার মাঝেই আবার উঁকিঝুঁকি মারছে বেগুনি পরাগ। মায়াবি রক্ত কাঞ্চনের মোহনীয় ছোঁয়ায় আপন মহিমায় সেজেছে রাজশাহী কলেজের প্রকৃতি। ঋতুর পালাবদলে এবারও বৈচিত্র্যময় ফুলে সেজেছে পুরো ক্যাম্পাস।
Advertisement
সরেজমিনে দেখা যায়, কলেজের ফুলার ভবনের সামনে সবুজ পাতার ক্যানভাসে বেগুনি রক্ত কাঞ্চন প্রকৃতিকে করেছে হাস্যোজ্জ্বল। রঙ আর রূপের বাহার ছড়ানো অপরূপ বর্ণিল সাজের এই ফুল যেন সৌন্দর্যের ডালি সাজিয়ে বসেছে কলেজজুড়ে।
বিরল প্রজাতির রক্ত কাঞ্চন ফুলপ্রেমী সকলের কাছেই এক পরিচিত নাম। দেবকাঞ্চন, শ্বেতকাঞ্চন ও রক্তকাঞ্চন এ ফুলের উল্লেখযোগ্য প্রজাতি। রঙ, শোভা আর সৌন্দর্যের কারণে রক্ত কাঞ্চনই বেশি জনপ্রিয় সৌন্দর্য পিপাসুদের কাছে। আর তাই কাঞ্চনের মধ্যে রক্ত কাঞ্চনই থাকে শীর্ষ পছন্দের তালিকায়।
গণিত বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী জুনায়েদ আহমেদ বলেন, ক্যাম্পাসে প্রায় প্রত্যেক ঋতুতেই কিছু না কিছু ফুল আমাদের মুগ্ধ করে। গ্রীষ্মে রক্ত কাঞ্চন ফুলের আকর্ষণীয় রঙ আর পাঁপড়ির নমনীয়তা ও কোমলতা হৃদয়ে প্রশান্তির দোলা দেয়। অসম্ভব সুন্দর লাগে। রোজ ক্যাম্পাসে এসে রক্ত কাঞ্চন আভায় যেন মুগ্ধ হই।
Advertisement
ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ফারিভা আক্তার বলেন, আমাদের ক্যাম্পাসের প্রতিটা ফুল গাছে এখন ধীরে ধীরে ফুল ধরা শুরু করেছে। তার মধ্যে রক্ত কাঞ্চন দেখলেই মন ভরে যায়। সেজন্যই রক্ত কাঞ্চন ফুলটি আমার অনেক পছন্দের। রোজ সকালে কলেজে এসে ফুল গাছের নিচে পড়ে থাকা ফুল দেখলেই প্রশান্তি মেলে। অনেকেই এই পড়ে থাকা ফুল কুড়িয়ে বাসায় নিয়ে যায়।
রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহা. আব্দুল খালেক বলেন, শিক্ষাবান্ধব পরিবেশের একটি অংশ হলো পরিচ্ছন্ন ক্যাম্পাস। শুধু ক্লাসরুম পরিচ্ছন্ন থাকলে হবে না, ক্যাম্পাসও পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। অনেক শিক্ষার্থী এই রক্ত কাঞ্চন ফুল দেখতে আসে। সঙ্গে ছবি তুলে ফেসবুকে দেয়। এতে যেমন কলেজের পরিচিতি বাড়ে, তাদের মাধ্যমে হাজার হাজার মানুষ এই ফুল সম্পর্কে জানতে পারে।
তিনি আরও বলেন, রাজশাহী কলেজে অনেক প্রজাতির ফুলগাছ রয়েছে। সেগুলোতে এখন ফুল ফুটতে শুরু করেছে। এ ফুলগুলো যেমন শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষার্থীদের মন ভরিয়ে তোলে, পাশাপাশি দর্শনার্থীদেরও মুগ্ধ করে।
সাখাওয়াত হোসেন/এফএ/এএসএম
Advertisement