রাজধানীর বেইলি রোডে গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে আগুন লাগার ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ ও জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু।
Advertisement
তিনি বলেন, অগ্নিকাণ্ডের এক একটা ঘটনা ঘটনার পর ঘটা করে তদন্ত কমিটি হয়। কিন্তু তারপর আর কোনো ফলোআপ থাকে না এবং দায়সারা রিপোর্ট দেওয়া হয়। আবার অনেক সময় অগ্নিনির্বাপণের জন্য কোনো কার্য়করী পদক্ষেপ নেওয়া হয় না। বেইলি রোডের ঘটনার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে।
শনিবার (২ মার্চ) জাতীয় সংসদের অধিবেশনে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে দেওয়া বক্তব্যে এ দাবি জানান মুজিবুল হক চুন্নু। এ সময় স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।
মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ডে এখন পর্যন্ত ৪৬ জন নিহত হয়েছেন, ২২ জন গুরুতর আহত। যে ভবনটিতে আগুন লেগেছে সেই ভবনে থাকা রেস্টুরেন্টগুলোর কোনো অনুমতি ছিল না। অথচ এ ভবনে ৮টি রেস্টুরেন্ট ছিল। রাজউক ও ড্যাপের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন এক থেকে সাততলা পর্যন্ত বাণিজ্যিক অনুমোদন দেওয়া ছিল। তবে, তা শুধু অফিস কক্ষ হিসেবে ব্যবহারের জন্য। রেস্তোরাঁ, শোরুম বা অন্য কিছুর অনুমোদন ছিল না।
Advertisement
ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক বলেন, ভবনের কোনো ধরনের অগ্নিনিরাপত্তার ব্যবস্থাই ছিল না, কোনো নিরাপত্তা সিঁড়িও ছিল না। নিমতলী, চকবাজার, বনানীতে আগুনে মানুষ মারা যায়। ভবনটির যিনি ডিজাই করেছিলেন তিনি বলেছেন ডিজাইন করা হয়েছিল সেখানে বাণিজ্যিক অফিস থাকবে, সেখানে অফিস থাকবে। সেখানে যখন হোটেল করা হয় তখন এ আর্কিটেকচার ডেভেলপার ও জমির মালিককে বার বার চিঠি দেন যে এখানে কোনো রেস্তোরাঁ দেওয়ার সুযোগ নেই। কিন্তু তারা সেই কথা শোনেননি। আমার প্রশ্ন দেশের জনগণ ট্যাক্স দেয় সরকার পরিচালনার জন্য, সরকারের দায়িত্ব হলো নাগরিকদের নিরাপত্তা দেওয়া। সরকারের ছয়টি সংস্থার এ ভবনে তৈরির জন্য ক্লিয়ারেন্স লাগে, ক্লিয়ারেন্স দেওয়ার পর ভবনের সুপারভিশন নেই।
তিনি বলেন, আমার প্রশ্ন হলো রাজউকের প্রত্যেকটি এলাকায় অফিসার থাকে সেই অফিসাররা কোথায়। মালিকরা ভবন তৈরি করেন এক কাজের কথা বলে করেন অন্য কাজ। যে মানুষগুলো মারা গেলো এর জবাব দেবে কে। এর দায়িত্ব তো সরকারের, সরকারি সংস্থার, সরকারি অফিসের। এক একটা ঘটনা হয় আর সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয় এ তদন্ত করা হবে, তদন্ত টিম করা হলো তারপর কোনো ফলোআপ নেই। এভাবে তো দেশ চলতে পারে না, সরকারের যে জবাবদিহি করা দরকার, সরকারের অ্যাকশন নেওয়া দরকার।
চুন্নু আরও বলেন, ধানমন্ডি সাতমসজিদ রোডে একটা বিল্টিংয়ে ১৫টা রেস্টুরেন্ট, অথচ এ রেস্টুরেন্টে কোনো অনুমতি নেই। ধানমন্ডি সাতমসজিদ রোডে প্রত্যেকটা রাস্তার পাশে কয়েকশ দোকান সেই ভবনের রেস্টুরেন্ট, একটারও পারমিশন নেই। আরও এরকম ঘটনা ঘটবে সরকার যদি এ বিষয়ে সচেতন না হয়। সরকারের কাছে দাবি, দায়-দায়িত্ব নিয়ে এ ঘটনার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে সেই ব্যবস্থা নিতে হবে।
আইএইচআর/এমএএইচ/জেআইএম
Advertisement