লন্ডনে ব্যবসা ও সম্পদ থাকার কথা স্বীকার করেছেন সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী। তবে তিনি দাবি করেছেন, বিদেশের সম্পদ করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ থেকে কোনো টাকা নেননি। এসব সম্পদ পৈতৃকভাবে পেয়েছেন, যা পরে তিনি সম্প্রসারণ করেছেন।
Advertisement
শনিবার (২ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে সাইফুজ্জামান চৌধুরী এসব তথ্য জানান।
সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান চৌধুরী জানান, তার বাবা ১৯৬৭ সাল থেকে লন্ডনে ব্যবসা করেছেন। তিনি নিজে যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা করে ১৯৯১ সাল থেকে সেখানে ব্যবসা করেছেন। এরপর তিনি লন্ডনে ব্যবসা সম্প্রসারণ করেছেন। গত করোনার সময় তিনি কম দামে অনেক জমি কিনেছেন, যা করোনাপরবর্তী সময়ে প্রচুর দামে বিক্রি হয়েছে।
তিনি জানান, করোনা মহামারি তার জন্য সুযোগ হয়ে আসে। সেসময় লন্ডনে বাড়ির দাম পড়ে যায়। ব্যাংক ঋণের সুদ কমে যায়। সেসময় তিনি ঝুঁকি নিয়ে লাভবান হয়েছেন।
Advertisement
মন্ত্রী থাকা অবস্থায় তার মন্ত্রণালয়ে এক টাকার দুর্নীতিও হয়নি বলে দাবি করেন সাইফুজ্জামান চৌধুরী। এ বিষয়ে প্রয়োজনে উচ্চপর্যায়ের তদন্ত দল গঠনের কথা বলেন তিনি। কোনো দুর্নীতি প্রমাণ করতে পারলে সংসদ সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করার ঘোষণা করবেন বলেও জানান তিনি।
নিজেকে আগে ব্যবসায়ী পরে রাজনীতিক বলে উল্লেখ করেন সাইফুজ্জামান চৌধুরী। তিনি জানান, নিজের নামে সম্পদ করেছেন জেনেবুঝে। কারণ, তার সন্তানদের তখন মালিক হওয়ার মতো বয়স ছিল না। তার বিদেশের সম্পদের পরম্পরা (ট্রেইল আছে) আছে। সুতরাং, নিজের নামে সম্পদ করেছেন জেনেই।
নির্বাচনী হলফনামায় কেন এত সম্পদের উল্লেখ করেননি এমন প্রশ্নে সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘হলফনামায় বিদেশে থাকা সম্পদের কোনো কলাম নেই। তাই বিদেশে থাকা সম্পদের বিবরণ দেওয়া হয়নি। বাংলাদেশ থেকে কোনো টাকা আমি বিদেশে নেইনি। বিদেশে আমার বাবার ব্যবসা ছিল, প্রায় ৫০ বছরের…এটা আমাদের পারিবারিক ব্যবসা।’
সাইফুজ্জামান চৌধুরী এ সময় উল্লেখ করেন, মন্ত্রী হিসেবে তিনি বাড়ি, গাড়ি কিছুই ব্যবহার করেননি। এমনকি ভাতাও নিজে খরচ না করে দান করেছেন। তিনি দেশকে দিতে এসেছেন, নিতে আসেননি।
Advertisement
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ব্লুমবার্গে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রায় ২০০ মিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের ৩৫০টিরও বেশি সম্পত্তি নিয়ে যুক্তরাজ্যে রিয়েল এস্টেট সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন সাইফুজ্জামান চৌধুরী। এর আগে আরও অনেক গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
এছাড়া গত ২৬ ডিসেম্বর ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) এক সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এক মন্ত্রীর বিদেশে ২ হাজার ৩১২ কোটি টাকার ব্যবসা রয়েছে। তবে তিনি নির্বাচনী হলফনামায় এ তথ্য দেননি। ওই সংবাদ সম্মেলনে টিআইবি ওই মন্ত্রীর নাম প্রকাশ করেনি। এর পরেই দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন হয়, নাম প্রকাশ না করা সেই মন্ত্রী হচ্ছেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী।
এনএইচ/ইএ/এএসএম