দেশজুড়ে

ভিডিওকলে ‘বাঁচার আকুতি’ জানিয়েছিলেন রকি

পরিবারের হাল ধরতে মাত্র দুমাস আগে কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্টে চাকরি নেন যশোরের কামরুল হাবিব রকি (২১)। কর্মরত ছিলেন ঢাকার বেইলি রোডের কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্টে। ওই রেস্টুরেন্টে অগ্নিকাণ্ডে যে ৪৬ জন মারা গেছেন তাদের একজন রকি। ভিডিওকলে বাঁচার আকুতি জানিয়েছিলেন তিনি। পরে তিনি মারা যান।

Advertisement

নিহত রকি যশোর সদর উপজেলার ধোপাখোলা গ্রামের কবির হোসেনের ছেলে। শুক্রবার (১ মার্চ) বেলা ১১টার দিকে তার মরদেহ পৌঁছায় গ্রামের বাড়িতে।

এসময় স্বজনদের আহাজারিতে গোটা এলাকার পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে।

নিহত রকির মামা জিহাদ হোসেন বলেন, “বৃহস্পতিবার রাতে রকির মেসেঞ্জারে ভিডিওকল দিয়েছি, সে রিসিভ করেনি। পরে আমাকে কল ব্যাক করে বাঁচানোর আকুতি জানায়। আমাকে বলে, ‘মামা আমাদের ব্রাঞ্চে (কাচ্চি ভাই বেইলি রোড শাখা) আগুন লাগছে, আমি আটকা পড়েছি। আমাকে বাঁচাও।’ কিছুক্ষণ পর কল কেটে যায়। আমি ৯৯৯ নম্বরে কল দিয়ে বিষয়টি জানাই। তারা জানান, উদ্ধারকাজ চলছে, ধৈর্য ধরুন। এরপর আমি ঢাকায় রওয়ানা হই। সেখানে হাসপাতালে পাই রকিকে। ততক্ষণে তাকে মৃত ঘোষণা করেছে।”

Advertisement

আরও পড়ুন: ভবনে অগ্নি নির্বাপক না থাকায় প্রধানমন্ত্রীর ক্ষোভ

তিনি আরও বলেন, ‘আমিই রকিকে ঢাকায় নিয়ে গিয়েছিলাম। ওর চাকরির পর আমিই ঢাকা চিনিয়েছি। গত ডিসেম্বরে সে চাকরিতে ঢুকেছে। আজ ওর লাশ নিয়ে বাড়ি ফিরলাম ‘

নিহত রকির ভাই কামরান হোসেন সাজিম বলেন, তার ভাই আলিম পাস করে গত ডিসেম্বরে কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্টে ক্যাশিয়ার পদে চাকরি নেন। বৃহস্পতিবার সেখানে কর্মরত অবস্থায় আগুন লাগে। রকি ভবনের ভেতরে আটকা পড়েন। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার সময় মারা যান। আগুনের ধোঁয়ায় দম বন্ধ হয়েই তার মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার সকালে তার মরদেহ বাড়িতে এসেছে।

সাজিম আরও বলেন, ‘আমরা তিন ভাইয়ের মধ্যে রকি সবার বড়। পরিবারের বড় ছেলে হিসেবে চাকরি করে সংসারের হাল ধরেছিল। বাবা ইজিবাইক চালিয়ে সংসার চালান। তাদের দুজনের আয়ে আমাদের সংসার চলতো। ভাইকে এভাবে হারাতে হবে কখনো কল্পনাই করিনি।’

Advertisement

মিলন রহমান/এসআর/এএসএম