জাতীয়

প্রাণ গেলো অতিরিক্ত ডিআইজির বুয়েটপড়ুয়া মেয়ের

২০১৮ সালে অসুস্থতাজনিত কারণে মারা যান মা। এরপর ছোট বোন আর বাবাকে আগলে রাখতেন বড় বোন লামিশা ইসলাম। দুই কন্যা সন্তানের কথা চিন্তা করে পুলিশ কর্মকর্তা বাবা আর বিয়েও করেননি।

Advertisement

লামিশা স্কুল-কলেজ পেরিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন বাংলাদেশের শীর্ষ বিদ্যাপীঠ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট)। মেধাবী এই শিক্ষার্থীর জীবন হঠাৎ থমকে গেলো।

রাজধানীর বেইলি রোডের আগুনে পুড়ে মারা গেছেন লামিশা। তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে স্বজন-সহপাঠীদের মধ্যে। বাবা পুলিশ সদরদপ্তরের অতিরিক্ত ডিআইজি (রিক্রুটমেন্ট অ্যান্ড ক্যারিয়ার প্ল্যানিং-১) নাসিরুল ইসলাম হয়ে পড়েছেন বাকরুদ্ধ। তার সহকর্মীরাও শোকে বিহ্বল। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শোক প্রকাশ করেছেন সহকর্মীদের অনেকেই।

আরও পড়ুন

Advertisement

বেইলি রোডে আগুন/‘পোড়া ভবন দেখে এখনো শরীর কাঁপছে’ বেইলি রোডের আগুন নিয়ে যা লিখলো আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ‘পোড়া ভবন দেখে এখনো শরীর কাঁপছে’

জানা গেছে, ২০১৮ সালে স্ত্রী মারা যাওয়ার পর দুই কন্যা সন্তানের দিকে তাকিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করেননি নাসিরুল ইসলাম। সন্তানদের নিয়ে থাকতেন রমনার পুলিশ কমপ্লেক্সে। কন্যাদের মানুষের মতো মানুষ করতে মায়ের ভূমিকা পালন করতেন বাবা। স্বপ্ন ছিল কন্যাদ্বয় বাবাকে ছাড়িয়ে যাবেন পৌঁছাবে অনন্য উচ্চতায়। বড় মেয়ে সেই পথেই হাঁটছিলেন। বুয়েটের কেমিকৌশল বিভাগে ভর্তিও হয়েছিলেন। কিন্তু সর্বনাশা আগুন মুহূর্তেই কেড়ে নিলো লামিশার প্রাণ।

শোকে বিহ্বল বাবার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে তার একাধিক সহকর্মী জানান, লামিশা বাসার পাশেই ওই ভবনের কোনও একটি রেস্টুরেন্টে খেতে গিয়েছিলেন। আগুন লাগার পর তিনি দৌড়ে ছাদের দিকে যাওয়ার চেষ্টাও করেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ছাদে উঠতে পারেননি। নিঃশ্বাসের সঙ্গে ধোঁয়া গিয়ে শ্বাসনালী পুড়ে যায়। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়।

পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি হিসেবে পদোন্নতিপ্রাপ্ত ও বগুড়ার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, গত ২৬ ফেব্রুয়ারিও রমনা কমপ্লেক্সের শিমুল ভবনের লিফটে লামিশার সঙ্গে দেখা হয়েছিল। তখন বুঝতে পারিনি মৃত্যু তার এত কাছাকাছি।

আরও পড়ুন

Advertisement

অগ্নিকাণ্ড থেকে বাঁচতে চাইলে যেখানে পাবেন আগুন নেভানোর যন্ত্র অগ্নিনিরাপত্তায় গ্রাহকদের আস্থার প্রতীক ‘সেফমেট’ আগুন-ধোঁয়ায় সেকেন্ডেই বাজবে ফায়ার এলার্ম

পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেছিলেন, আমাদের একজন সহকর্মীর মেয়ে মারা গেছেন। সেই মেয়েটিই নিহত লামিশা ইসলাম।

স্বজনরা জানান, লামিশার গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরে। বুয়েটের বন্ধু নাহিয়ান আমিনের সঙ্গে ওই ভবনের একটি রেস্টুরেন্টে গিয়েছিলেন। আগুনে দুজনই মারা গেছেন।

বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে রাজধানীর বেইলি রোডের একটি ভবনে কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্ট আগুন লাগে। পরে আগুন ছড়িয়ে পড়ে ভবনজুড়ে। এতে এখন পর্যন্ত ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর আহত হয়েছেন কয়েকজন। মৃত্যু সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

টিটি/এসআইটি/এমএস