দেশজুড়ে

ফটোসেশনের পর সরিষাক্ষেতের নতুন আপদ শূন্যলতা

ঝালকাঠিতে এবার ১৭শ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে। তবে সরিষার বাম্পার ফলনে কৃষকের হাসির পরিবর্তে স্বপ্ন নস্যাৎ করেছে মানুষের ফটোসেশন ও এক ধরনের লতা। যা স্থানীয় ভাষায় শূন্যলতা হিসেবেই পরিচিত। এতে কৃষকের সরিষাক্ষেত চরম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

Advertisement

সদর উপজেলার ছত্রকান্দা গ্রামের সরিষাচাষি গনি মিয়াসহ কয়েকজন কৃষক বলেন, প্রথমে ফুলের সঙ্গে ছবি তুলতে আসে মানুষ। তবে তারা এতো পরিমাণ ক্ষতি করবে তা আগে বুঝলে কখনো ঢুকতে দিতাম না। যেভাবে তারা ক্ষেতের মধ্যে ঢুকে সরিষা গাছের ক্ষতি করে ছবি তুলেছে তাতে আমাদের অনেক কষ্ট হয়। ফুল কমেছে এখন আবার শূন্যলতায় আক্রমণ করেছে। গাছে গাছে এমনভাবে পেঁচিয়ে ধরেছে যে গাছই মারা যাচ্ছে। সরিষা দানাও কাঁচা, তাই কেটেও তুলতে পারছি না।

সরিষাচাষি দুলাল হাওলাদার জানান, মাসখানেক আগে এতো পরিমাণ লোকজন ছবি তুলেছে, তখন ভেতরে গিয়ে পা দিয়ে পাড়িয়ে ক্ষেত নষ্ট করেছে। তাতে যে পরিমাণে ক্ষতি হয়েছে তা অপূরণীয়। মূল লাভটাই তারা শেষ করেছে। এখন আবার আরেকটা আপদ এসেছে শূন্যলতা। যা বাতাসের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

তিনি আরও জানান, সদর উপজেলার ছত্রকান্দা এলাকায় সবচেয়ে বেশি সরিষা চাষ হয়েছে। পূর্বে ধানসিঁড়ি নদী এবং পশ্চিমে বরিশাল-খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের ছত্রকান্দা এলাকায় বিশ্বরোড পর্যন্ত কয়েকশ হেক্টর জমিতে এবছর সরিষার আবাদ করা হয়েছে। কৃষি বিভাগের সার্বিক তত্ত্বাবধান এবং পরামর্শে সরিষার বাম্পার ফলন হয়েছে। সরিষার ফুল ফুটতে দেখে আমরাও আশায় বুক বেঁধেছিলাম। কিন্তু প্রথমে ক্ষতি করলো মানুষ ছবি তুলতে এসে, আর এখন ক্ষতি করছে শূন্যলতা। সরিষা বীজও পরিপক্ক না হওয়ায় ঘরে তুলতে পারছি না।

Advertisement

ঝালকাঠি জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, সরিষা লাভজনক ফসল। গত বছর জেলায় ৮০৫ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছিল। ফলন ভালো হওয়ায় এবার ১ হাজার ১৭ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। ফলনও ভালো হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যে ফসল ঘরে তুলতে পারবেন কৃষকরা।

তিনি বলেন, এক হেক্টর জমিতে ৩-৪ মণ সরিষা পাওয়া যাবে। ১ কেজি সরিষা থেকে ৩৫০ গ্রাম থেকে ৪০০ গ্রাম তেল পাওয়া যায়। সরকারিভাবে কৃষকদের সার ও বীজ প্রণোদনা সহায়তা দেওয়া হয়েছে। সার্বক্ষণিক মাঠে-ময়দানে কৃষকদের পরামর্শ দিয়েছি আমরা।

আতিকুর রহমান/এফএ/এমএস

Advertisement