‘আগুনে পুড়ে যাওয়া ভবন দেখে এখনো শরীর কেঁপে উঠছে। দুপুরবেলা আমি পরিবার নিয়ে এখানে খাবার খেয়েছি আর রাতে দুর্ঘটনা। আজ কত মানুষের প্রাণ গেলো। কত মায়ের বুক খালি হলো। এ শহর সত্যিই অনিরাপদ।’
Advertisement
শুক্রবার (১ মার্চ) তানভিরুল ইসলাম নামে এক পথচারী জাগো নিউজকে এসব কথা বলেন।পথচারী আশিক বলেন, আমি ঢাকার বাইরে ছিলাম। রাতেই শুনেছি আমার বন্ধু আগুনে পুড়ে গেছে। এখন সে বার্ন ইউনিটে ভর্তি। তাকে দেখতে যাওয়ার আগে ভবনটি দেখে গেলাম যেখানে অর্ধশত মানুষ নিহত হয়েছে।
রাজধানী বেইলি রোডে গ্রিন কজি কটেজ ভবনে বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ৫০ মিনিটে ভয়াবহ আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে রাত ১১টা ৫০ মিনিটে। মাত্র দুই ঘণ্টার আগুনে পুড়ে ৪৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন
Advertisement
পথচারীরা যে যার মতো পায়ে হেঁটে যাচ্ছেন নিজ নিজ গন্তব্যে। যাওয়ার সময় একটু দাঁড়িয়ে দেখছেন পুড়ে যাওয়া ভবনটিকে। একজন অন্যজনকে জিজ্ঞাসা করে জানতে চাচ্ছেন আগুন লাগার ঘটনা।
এদিকে উৎসক জনতার ভিড় রয়েছে সকাল থেকে। বেলা বাড়ার সঙ্গে তাদের সংখ্যাও বাড়ছে।
কথা হয় নাজমুল হাসানের সঙ্গে। তিনি বলেন, গতরাতে আগুন লেগেছে, রাতে আসিনি এখন এলাম। অনেক মানুষ মারা গেছে তাই ঘটনাস্থলটি দেখতে আসা।
এদিকে অন্যান্য দিনের মতো বেইলি রোডে চলছে না গাড়ি। তবে সাধারণের চলাচল রয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি রয়েছে, আছে আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর উপস্থিতি। তবে নেই গাড়ির হর্ন কিংবা রিকশার বেল বাজানো। নেই কোলাহল, অনেকটা সুনসান নীরবতা।
Advertisement
পুড়ে যাওয়া স্থানে সকাল থেকে কাজ করছে পুলিশের বিশেষ ইউনিট সিআইডির ক্রাইম সিনের সদস্যরা। তারা নানা আলামত সংগ্রহ করছেন। ঘটনাস্থলে কাজ করছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, আমরা বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেছি যেগুলো ল্যাবে পরীক্ষা করা হবে। পরে জানা যাবে আগুন লাগার কারণ। আমাদের সিআইডি, পিবিআইসহ অন্যান্য সংস্থা কাজ করছে।
পিবিআই এসপি মিজানুর রহমান সেলি জানান, এখানে আগুন লাগার কয়েকটি কারণ থাকতে পারে। সিলিন্ডার কিংবা গ্যাসের লাইন বিস্ফোরণে আগুন লাগতে পারে। আগুনের চেয়ে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে হতাহত হতে পারে বেশি।
আরও পড়ুন
অগ্নিকাণ্ড থেকে বাঁচতে চাইলে যেখানে পাবেন আগুন নেভানোর যন্ত্র অগ্নিনিরাপত্তায় গ্রাহকদের আস্থার প্রতীক ‘সেফমেট’ আগুন-ধোঁয়ায় সেকেন্ডেই বাজবে ফায়ার এলার্মতাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন জানান, বেইলি রোডে কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্টের ভবনে লাগা ভয়াবহ আগুনে পুড়ে ৪৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
তিনি জানান, বার্ন ইনস্টিটিউটে এখন পর্যন্ত ১০ জন মারা গেছেন। অন্যদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩৩ জন মারা গেছেন। যারা এখন পর্যন্ত বেঁচে আছেন তাদের বেশিরভাগের শ্বাসনালী পুড়ে গেছে। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। যারা বেঁচে আছেন তাদের বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা চলছে। আহতরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বার্ন ইউনিটে ভর্তি আছেন।
ইএআর/এমআরএম/এমএস