অমর একুশে বইমেলা স্থানান্তর না করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি (বাপুস)। বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মেলা প্রাঙ্গণে বাপুসের অস্থায়ী কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান তারা।
Advertisement
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বাপুসের সহ-সভাপতি ও বইমেলা স্ট্যান্ডিং কমিটির আহ্বায়ক শ্যামল পাল বলেন, বাংলা একাডেমি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান হলো বাংলাদেশের সেই হৃদয় প্রাঙ্গণ, যেখানে রয়েছে আমাদের ভাষা আন্দোলনের স্মৃতি, মুক্তিযুদ্ধের গৌরবগাথা।
তিনি বলেন, তাছাড়া বাঙালির নানা ন্যায়সঙ্গত সংগ্রাম, প্রতিবাদ ও অর্জনের সূতিকাগারও এই অসাধারণ এলাকাটিই। এমনকি এ-ই সেই পবিত্র ভূমি, যেখানে দাঁড়িয়ে ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু জাতিকে শুনিয়েছিলেন তার অমর বাণী। সব মিলিয়ে এই বাংলা একাডেমি, এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, শাহবাগ, বুয়েট বাঙালি জাতির উজ্জ্বলতম সাংস্কৃতিক তীর্থবলয়।
আমরা নানান সূত্রে জেনেছি, এই অঞ্চল থেকে একুশে বইমেলাকে অন্য জায়গায় সরিয়ে নেওয়ার চক্রান্ত শুরু হয়েছে। এর সঙ্গে স্বাধীনতাবিরোধীদের চক্রান্ত রয়েছে। যাতে বাঙালির সংস্কৃতি চর্চার এই শক্তিশালী কর্মকাণ্ডটিকে শেষ করে দেওয়া যায়। আমরা এই চক্রান্তের বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট এবং নিয়মতান্ত্রিক প্রতিবাদ জানাতেই আজকের এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছি। আমরা মনে করি এই ধরনের কর্মকাণ্ডকে বাস্তবায়ন করা হলে তা হবে এই মহান বইমেলাকে হত্যা করার সামিল।
Advertisement
তিনি বলেন, এই অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হলে অতি সহজেই বাঙালির গৌরবের সব ইতিহাসকে অনেকাংশে ম্লান করে দেওয়া যাবে এবং তাতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে আমাদের সংস্কৃতিচর্চার আলোক বিস্তারি অগ্নিশিখাটি। সেটা হবে সাধারণ মানুষ, শিক্ষার্থী, গবেষক, লেখক, প্রকাশক ও সংশ্লিষ্ট হাজার হাজার মানুষকে সাংস্কৃতিক এবং আর্থিকভাবে অপুরণীয় ক্ষতি করার সামিল। আমাদের একমাত্র দাবি যে কোনো মূল্যে অমর একুশে বইমেলাকে বাংলা একাডেমি চত্বর ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া যাবে না।
এ সময় অন্যপ্রকাশের প্রকাশক মাজহারুল ইসলাম বলেন, ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই এই বইমেলা শুরু হয়েছিল। এখাইনে শুধু বইবেচাকেনা নয় এটা বাঙালি সংস্কৃতি ও নবজাগরণের মেলা। আপনারা দেখবেন এখানে শুধু বই কিনতে আসে না, এখানের মানুষের সাংস্কৃতিক উৎসবের মিলনমেলা হয়।
আকাস পাবলিকেশন্সের স্বত্বাধিকারী ও বাপুসের সাবেক সভাপতি আলমগীর শিকদার লোটন বলেন, বইমেলার জায়গা পরিবর্তন হলে ভাষা শহীদদের অবমাননা করা হবে। এখানে যারা এই নকশা তৈরি করছেন, আপনারা মেলাকে যুক্ত করেই কাজ করুন। মেলাকে বাদ দিয়ে এখানে সাংস্কৃতিক বলয় তৈরি হবে এটা মেনে নেওয়া যায় না। আমরা চাই আগামী বছরেও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আমরা বইমেলা উদযাপন করব। প্রধানমন্ত্রীকে বলব, আপনি আমাদের আবেদন গ্রহণ করবেন।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন অনুপম প্রকাশনীর প্রকাশক মিলন রায়, আহমেদ পাবলিশিং হাউজের স্বত্বাধিকারী মিজবাহ উদ্দীন আহমেদ, পার্ল পাবলিকেশন্সের হাসান জায়েদি, তাম্রলিপির স্বত্ত্বাধিকারী তারেক হাসান রনিসহ বাপুসের অন্যান্য নেতা ও প্রকাশকরা।
Advertisement
আরএএস/এমআরএম/এমএস