পটুয়াখালীতে দিন দিন বাড়ছে বোরো ধানের চাষ। উন্নত জাত ও প্রয়োজনীয় উপকরণ সহজলভ্য হওয়ায় কৃষকেরা বোরো চাষে ঝুঁকছেন। কৃষি বিভাগ বলছে, ফলন ও দাম ভালো হওয়ায় কৃষকেরা আবাদী জমির পরিমাণ বাড়াচ্ছেন। আগামীতেও এ ধারা অব্যাহত থাকলে উপকূলের কৃষকেরা ধান উৎপাদনে সমৃদ্ধি অর্জন করবেন।
Advertisement
ঝড় ও জলোচ্ছ্বাসসহ জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বৈশ্বিক কারণে উপকূলীয় এলাকার কৃষকেরা সব সময়ই ঝুঁকির মধ্যে বসবাস করছেন। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কৃষকেরা নতুন নতুন জাত ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভালো ফলন পাচ্ছেন।
পটুয়াখালীসহ দক্ষিণ অঞ্চলে সাধারণত কৃষকেরা শতভাগ জমিতে আমন ধান চাষ করলেও বোরো চাষে কৃষকদের তেমন আগ্রহ ছিল না। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে লবণসহিষ্ণু বেশকিছু উচ্চফলনশীল ধানের জাত বের হওয়ায় এবং জমিতে সেচের জন্য বিভিন্ন সুযোগ তৈরি হওয়ায় এ ধান চাষে আগ্রহী হচ্ছেন তারা। কৃষকেরা এখন দিন-রাত ধানের চারা লাগাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
জেলার কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের কুমিরমারা গ্রামে দেখা যায়, একরের পর একর জমিতে বোরো ধান চাষ করা হয়েছে। কেউবা জমিতে চাষ দিচ্ছেন, কেউ আবার বীজ রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন। সব মিলিয়ে এখন বোরো চাষের শেষ সময় হওয়ায় কৃষকদের যেন দম ফেলার সময় নেই।
Advertisement
আরও পড়ুন• মিরসরাইয়ে ব্রোকলি চাষে সফল শিক্ষক লোকমান • কালীগঞ্জে রেকর্ড পরিমাণ সরিষা চাষ • পাবনায় সরিষা চাষ বেড়েছে ৭০ হাজার বিঘা
গ্রামের বেশ কয়েকজন কৃষক জানান, আগে বোরো ধান চাষ না করলেও এখন করছেন। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে বোরোর ফলন ভালো হচ্ছে এবং বাজারে দাম ভালো পাওয়া যায়। এছাড়া বর্তমানে সেচের সুবিধা থাকায় ও খালে পর্যাপ্ত মিষ্টি পানির উপস্থিতির কারণে তারা জমিতে সেচও ভালোভাবে দিতে পারেন।
পটুয়াখালী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. নজরুল ইসলাম জানান, গত বছর জেলায় ১৮ হাজার ৩৭৩ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ করা হলেও এ বছর প্রায় ২৫ হাজার হেক্টর জমিতে চাষের সম্ভাবনা আছে। এরই মধ্যে ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে ধান রোপণ করা হয়েছে।
কৃষকেরা এবার উপশি এবং হাইব্রিড জাতের বিশেষ করে যুবরাজ এবং এসিআই বীজ বেশি ব্যবহার করছেন। এ বছর দাম ভালো পেলে আগামীতেও তারা বোরো চাষ বৃদ্ধি করবেন বলেও জানান তিনি।
Advertisement
জেলায় মোট চাষযোগ্য কৃষি জমির পরিমাণ ২ লাখ ৩ হাজার হেক্টর হলেও শুষ্ক মৌসুমে লবণাক্ততা ও সেচের সুবিধা না থাকায় অনেক এলাকার কৃষি জমি অনাবাদী রাখতে হয়।
আব্দুস সালাম আরিফ/এসইউ/জিকেএস