দেশজুড়ে

সিলিন্ডার বিস্ফোরণ নয়, ইচ্ছাকৃতভাবে ছাড়া গ্যাসেই অগ্নিকাণ্ড

নোয়াখালীর ভাসানচরে অগ্নিদগ্ধে পাঁচজনের মৃত্যুর ঘটনার সঠিক তথ্য মিলেছে। এতে সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেনি। সিলিন্ডারের গ্যাস ইচ্ছাকৃতভাবে ছেড়ে দেওয়ায় এ অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়।

Advertisement

অনুসন্ধান শেষে বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাতে নোয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) মোহাম্মদ ইব্রাহীম বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, গত শনিবার ভাসানচরের রোহিঙ্গাদের মাঝে এলপি গ্যাস সিলিন্ডার বিতরণের তারিখ ছিল। এর আগের দিন সকাল সোয়া ৮টার দিকে ৮১ নম্বর ক্লাস্টারের সফি আলম (২৪) নতুন সিলিন্ডার নিতে তার ব্যবহৃত সিলিন্ডারের তলানিতে থেকে যাওয়া গ্যাস ইচ্ছাকৃতভাবে ছেড়ে দেন।

এসময় পাশের কক্ষের আবদুস শুক্কুরের স্ত্রী আমিনা খাতুন এবং অপর কক্ষে আব্দুল হাকিমের মেয়ে শমসিদা গ্যাসের চুলায় আগুন দিলে সফি আলমের ছেড়ে দেওয়া গ্যাস বাতাসে মিশে তাদের ৩, ৫, ৬, ৭ ও ৮ নম্বর কক্ষসহ বারান্দায় আগুন ছড়িয়ে পড়ে।

Advertisement

এতে শিশুসহ নয়জন দগ্ধ হন। তারা হলেন- সফি আলমের ছেলে রবি আলম (৫), মেয়ে মুবাসিরা (৩), আজিজুল হকের ছেলে সোহেল (৫) ও রাসেল (৪), স্ত্রী জুবায়েদা (২৩), আবদুস শুক্কুরের মেয়ে রশমিদা (৩), স্ত্রী আমেনা আক্তার (২৬), আবদুল হাকিমের ছেলে বসির উল্লাহ (১৭) ও সফি আলম (২৪) নিজেসহ আরও কয়েকজন আহত হয়।

তাদের উদ্ধার করে স্থানীয় ২০ শয্যার হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ২৫০ শয্যার নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। এর মধ্যে গুরুতর সাতজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অগ্নিদগ্ধ পাঁচ শিশু রবি আলম (৫), সোহেল (৫), রাসেল (৪), মুবাশিরা (৩) ও রুশমিদা (৩) মারা যায়।

এ ঘটনায় সাবধানতা অবলম্বন না করে অবহেলাজনিত তাচ্ছিল্যপূর্ণভাবে সিলিন্ডার থেকে গ্যাস ছেড়ে দেওয়ায় আশ্রয়ন প্রকল্প-৩ এর ৮১ নম্বর ক্লাস্টারের মো. তৈয়বের ছেলে সফি আলমের (২৪) বিরুদ্ধে ভাসানচর থানায় বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাতে মামলা (নম্বর-২) রুজু করা হয়েছে।

ভাসানচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাওসার আলম ভূইঁয়া বলেন, মামলার একমাত্র আসামি সফি আলমের দুই শিশুসন্তান মারা গেছে। তিনি নিজেও আহত। তাকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল থেকে ভাসানচর হাসপাতালে এনে পুলিশ পাহারায় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। সুস্থ হলে তাকে আদালতে পাঠানো হবে।

Advertisement

ইকবাল হোসেন মজনু/আরএইচ/জিকেএস